উপমহাদেশে ক্রিকেটাররা কেবলই ক্রিকেটার নন, তাঁরা ব্যাট বলের গন্ডি পেরিয়ে বনে যান দৈনন্দিন জীবনের তারকাও। তাই জনপ্রিয় ক্রিকেটারদের ব্যক্তি জীবন নিয়েও আলোচনা হয় প্রায়ই। কি খেতে পছন্দ, কোথায় ঘুরেন বেশি কিংবা কাকে বিয়ে করছেন – এসব জানতে আগ্রহের কমতি নেই ভক্ত-সমর্থকদের।
বিশেষ করে বিয়ের প্রসঙ্গে অনেকবারই লাইমলাইটে এসেছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। দেশের বাইরের কাউকে জীবনসঙ্গী বেছে নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা পাক তারকাদের সম্পর্কে এবার জানা যাক।
- ইমরান খান – জেমিমা গোল্ডস্মিথ
পাকিস্তান ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সেরাদের একজন ইমরান খান। ১৯৯৬ সালে যার হাত ধরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দেশটি সেই ইমরান চলার পথে হাত ধরেছিলেন জেমিমা গোল্ডস্মিথের।
১৯৯৫ সালেই এই জুটি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়; পেশায় জেমিমা একজন ইংলিশ স্ক্রিনরাইটার এবং ফিল্ম প্রোডিউসার। ইমরান আর জেমিমার কোল আলো করে এসেছে দুই ছেলে; যদিও ২০০৪ সালে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা।
- শোয়েব মালিক – সানিয়া মির্জা
গত এক দশকে ক্রীড়াজগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি সম্ভবত শোয়েব মালিক আর সানিয়া মির্জা। শোয়েব মালিক পাকিস্তানের সবুজ জার্সিতে খেলেন ক্রিকেট, আর সানিয়া মির্জা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন টেনিস কোর্টে।
তবে ভাগ্যের জোরে দুইজন মিলে গিয়েছেন একই মোহনায়। ২০১০ সালে দুইজনে বিয়ে করার ঘোষণা দেন; ইজহান মালিক নামে এক ছেলেও রয়েছে তাঁদের। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দুজনের ডিভোর্স নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে।
- ওয়াসিম আকরাম – শানিয়েরা আকরাম
বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বামহাতি ফাস্ট ওয়াসিম আকরাম পাকিস্তানে তুমুল জনপ্রিয়; এমনিতেই তাঁকে নিয়ে চলে ভক্তদের মাতামাতি। আর অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক শানিয়েরা আকরামকে বিয়ে করে আবারো ক্যামেরার আলো কেড়ে নেন ওয়াসিম।
সামাজিক কর্মী হিসেবে কর্মরত এই নারী অবশ্য পাক তারকার দ্বিতীয় স্ত্রী। কিন্তু সব প্রতিকূলতা দূরে সরিয়ে বর্ষীয়ান এই জুটি দারুণ সময় কাটাচ্ছেন।
- হাসান আলী – সামিয়া হাসান
শোয়েব মালিকের মতই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকেই শ্বশুর বাড়ি বানিয়েছেন হাসান আলী। হরিয়ানার মেয়ে সামিয়া আরজুকে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করেন এই ডানহাতি পেসার।
বিয়ের পর অবশ্য সামিয়া হাসান নাম নিয়েছেন হাসান আলীর স্ত্রী; পেশায় তিনি আমিরাত এয়ারলাইন্সের একজন ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার।
- মহসিন খান – রিনা রয়
এই জু’টির গল্পটা খুবই মুখরোচক। ৮০’র দশকে পাকিস্তানি ক্রিকেটার মহসিন খান প্রেমে পড়েছিলেন বলিউডের রিনা রয়ের। ‘নাগিন’, ‘জানি দুশমন’ সিনেমাগুলোর জন্য রিনা তখন হিট নায়িকা। ১৯৮৩ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। তবে, মহসিনের পরিবার বিয়েতে নাখোশ হয়। দ্রুতই তাই তাদের বিচ্ছেদ হয়।
ডিভোর্সের সময়ও বেশ জল ঘোলাও হয়। বিশেষ করে মেয়ের কাস্টোডি কে নেবে সেটা আদালত অবধি গড়ায়। খানই মেয়ের দায়িত্ব পান। পরে তিনি আবার বিয়ে করলে মেয়ে জান্নাত চলে আসে মায়ের কাছে। জান্নাতের নাম মা রিনা পাল্টে রাখেন ‘সানাম’।
- জহির আব্বাস – রিতা লুথরা
পাকিস্তানের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান জহির আব্বাস। আশির দশকে তিনি বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন ছিলেন। তাঁর ব্যাটিং কীর্তির কথা বলে শেষ করা যাবে না।
১৯৮০ সালে রিতার সাথে পরিচিত হন ইংল্যান্ডে। ১৯৮৮ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। তাদের একমাত্র কন্যা সামিনা আব্বাস।
- মোহাম্মদ আমির – নারজিস খাতুন
স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারির জন্য জেল খাটতে হয়েছিল পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমিরকে। আমিরের আইনি লড়াই লড়েছিলেন বাঙালি বংশদ্ভুত ব্রিটিশ নারজিস খাতুন। শেষ সেই আইনজীবীর সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্কে জড়ান মোহাম্মদ আমির। তাঁরা বিয়েও করেন।
আমির ও নারজিসের তিন মেয়ে। ২০২১ সালে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন আমির। এর আগে ২০২০ সালেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলেন তিনি।