ভয়ংকর হয়ে উঠছে পাকিস্তানের পেস আক্রমণ!

মধুর এক সমস্যা, নাকি সমস্যাটা ভীষণ জটিল?

মধুর এক সমস্যা, নাকি সমস্যাটা ভীষণ জটিল? পাকিস্তান ক্রিকেটে হুট করেই ধুম পড়েছে অবসর ভেঙে ফিরে আসার। ইমাদ ওয়াসিমের পর, মোহাম্মদ আমিরও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন। তাতে করে অন্তত আসন্ন বিশ্বকাপে পাকিস্তানের পেস আক্রমণ নিয়ে শুরু হয়েছে ‘মিউজিকাল চেয়ার’। হঠাৎ করেই তাই পাকিস্তানের পেস আক্রমণকে মনে হচ্ছে ভয়ংকর।

পাকিস্তানের জয়-পরাজয়ের ফারাকটা সর্বদাই গড়ে দিয়েছেন পেসাররা। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে ২০২১ ও ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই পেসারদের ভরসাতেই ছিল পাকিস্তান। যথাক্রমে সেমিফাইনাল ও ফাইনালে থেমে যায় পাকিস্তানের যাত্রা। ২০০৯ সালের পর আর জেতা হয়ে ওঠেনি শিরোপা।

এর পেছনে কারণ ছিল সম্ভবত শিরোপা জেতানো মানসিকতার অভাব। সেই দুই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের পেস আক্রমণের মূল সেনানী ছিলেন তিনজন। শাহীন শাহ আফ্রিদির সাথে, হারিস রউফ ছিলেন ধ্রুব। ২০২১ এ তৃতীয় পেসার ছিলেন হাসান আলী। ২০২২ এ নাসিম শাহ।

হাসান আলীর শিরোপা জেতার অভিজ্ঞতা অবশ্য রয়েছে। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তিনি জিতেছিলেন। তবে ২০২১ বিশ্বকাপে তিনি সে ছাপ ফেলতে পারেননি। ছয় ম্যাচে নিয়েছিলেন মোটে ৫ উইকেট। অন্যদিকে ২০২২ সালে হাসান আলীও ছিলেন না স্কোয়াডে। তবুও পাকিস্তানের বাকি পেসাররা ফাইনালের টিকিট কেটেছিল দলের জন্যে।

কিন্তু শিরোপার খুব কাছে গিয়েও হারতে হয়েছে। সে দায় অবশ্য ব্যাটারদেরও রয়েছে। তবে পাকিস্তান কোনকালেই ব্যাটারদের ভরসায় শিরোপা জেতেনি। পাকিস্তানের মিসিং লিঙ্ক হয়েই এবার হাজির হচ্ছেন যেন মোহাম্মদ আমির। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে তার করা স্পেলেই তো শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। যদিও সেই টুর্নামেন্ট জুড়েই দারুণ বোলিং করেছিলেন হাসান আলী।

এমনকি সম্প্রতি শেষ হওয়া পাকিস্তান সুপার লিগেও (পিএসএল) উইকেট বিবেচনায় আমিরের থেকে এগিয়ে রয়েছেন হাসান। তবুও মোহাম্মদ আমিরকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে নতুন উন্মাদনা। এর পেছনের কারণ নতুন বল হাতে তার দেখানো কারিকুরি। এবারের পিএসএলে তিনি রীতিমত ব্যাটারদের হৃদয়ে কাঁপন ধরিয়েছিলেন।

ঠিক সে কারণেই আমিরকে বিবেচনায় রাখা হচ্ছে সবার উপরে। অবশ্য তার সাথে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের আলাপ হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ইতিবাচক আশ্বাস পেয়েছেন বলেই আমির তার অবসরের সিদ্ধান্ত পালটে ফেলেছেন। অতএব, তাকে পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট ভাবনায় রেখেছে ভালভাবেই।

তার পেছনের আরও একটি বড় কারণ আমিরের ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) অভিজ্ঞতা। কেননা এবারের বিশ্বকাপের অধিকাংশ ম্যাচই আয়োজিত হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে। সুতরাং তার সেই অভিজ্ঞতা পাকিস্তানের জন্যে হয়ে উঠবে ভীষণ প্রয়োজনীয়।

সিপিএলে ১৪.৩৯ গড়ে ৪৩ উইকেট বাগিয়ে নেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমিরের। সুতরাং তার চ্যাম্পিয়ন মানসিকতা আর ক্যারিবিয়ান অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাইবে পাকিস্তান। অন্যদিকে শাহীন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহ স্কোয়াডে থাকছেন তা নিশ্চিত। এই দুই তারকার বোলারই তো ২০২২ সালে পাকিস্তানের জন্যে ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করে দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে চতুর্থ পেসার হিসেবে ঠিক কে থাকবেন সেটা বলা খুব একটা মুশকিল নয়। ইনজুরি থেকে সেরে উঠলে নিশ্চিতভাবেই হারিস রউফ থাকবেন। এই চারজনের সমন্বয়ে ঠিক কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠবে পাকিস্তানের পেস আক্রমণ সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...