একই দল বারবার শিরোপা জেতায় ফরাসি লিগ ওয়ান কিংবা জার্মানির বুন্দেসলিগাকে বলা হয় ফার্মার্স লিগ; কিন্তু ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগকে (ইপিএল) ধরা হয় ইউরোপের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক লিগ।
অথচ, গত কয়েক বছরে সেই চিত্র বদলে দিয়েছেন একজন মাস্টারমাইন্ড, প্রিমিয়ার লিগে নিজের একক রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি – বলছি পেপ গার্দিওলার কথা, যিনি টানা চারবারের মত লিগ শিরোপা ঘরে তুললেন।
ইংলিশ লিগের ইতিহাসে তর্কসাপেক্ষে সফলতম কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন, তবে টানা চারবার লিগ জেতার অর্জন নেই তাঁর ঝুলিতেও। গার্দিওলা কতটা আধিপত্য বিস্তার করেছেন সেটা তাই দিনের আলোর মতই স্পষ্ট – আগে যা কখনো হয়নি, সেটিই করে দেখাচ্ছেন তিনি।
২০২২/২৩ মৌসুমের শেষ সপ্তাহে ওয়েস্ট হ্যামকে ৩-১ গোলে হারিয়ে লিগ নিশ্চিত করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। আর্সেনালের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে রোমাঞ্চকর এক শিরোপার স্বাদ পেয়েছে তাঁরা। যদিও মৌসুমের লম্বা একটা সময় মনে হচ্ছিলো এবার বোধহয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া হবে না তাঁদের, তবে শেষমেশ ঠিকই প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে ট্রফি ধরে রেখেছে কেভিন ডি ব্রুইনার দল।
২০১৬ সালের আগস্টে ম্যানসিটি চুক্তি করে পেপের সঙ্গে। সেসময় পায়ের নিচের মাটি শক্ত করতে ব্যস্ত ছিল ইংলিশ ক্লাবটি, ইউরোপ জয় তো দূরে থাক ঘরোয়া শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনও তখন দূরের স্বপ্ন। কিন্তু সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে স্প্যানিশ কোচ তাঁদের বিশ্ব জয়ের শিক্ষা দেন; পাসিং ফুটবলের দীক্ষা ছড়িয়ে দেন শিষ্যদের মাঝে।
সেটিরই ফল প্রকাশ পায় পরের বছর, লিগ চ্যাম্পিয়ন বনে যায় সিটিজেনরা। এর ধারাবাহিকতা তাঁরা ধরে রাখে পরেরবারও, ‘ব্যাক টু ব্যাক’ ট্রফি ঘরে তুলে দলটি। মাঝে লিভারপুল ২০১৯/২০ মৌসুমে টেবিল টপার হয়েছিল, সেটা হয়তো আরো রাগিয়ে দিয়েছে গার্দিওলাকে।
তাই, তো চার চারবার শিরোপা ইতিহাদেই রেখে দিয়েছেন তিনি। আবার ইউরোপ সেরা হওয়ার গৌরবও এনে দিয়েছেন ক্লাবকে। সাবেক বার্সা কিংবদন্তির সবচেয়ে বড় গুণ তাঁর শক্তিশালী খেলার ধরন। পাসিং ফুটবলে প্রতিপক্ষকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করে দেয়ার মত পরিকল্পনা করেন তিনি, আর এই পরিকল্পনার বিপরীতে কোন জবাব জানা নেই বাকি দলগুলোর।
তাই তো গত প্রায় এক দশক ধরে ইউরোপের সেরা ক্লাবের সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে ম্যানসিটি, এখন দেখার বিষয় এমন আধিপত্য কতটা সময় ধরে চলমান থাকে।