বিপিএলে পরিকল্পিত রংপুর রাইডার্স

মিরপুরের অ্যাকাডেমী মাঠে যেন ক্রিকেটারদের ঠাই হয়না। বিপিএলের দলগুলোর অনুশীলনের ভেন্যু যে এই একটাই। দলগুলো তাই সকাল, বিকাল দুই বেলা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে চালিয়ে যাচ্ছে অনুশীলন। বিপিএলের সাত দলের ছয় দলকেই এখানে পেলেও একটা দলকে পাওয়া যাবে। রংপুর রাইডার্সকে খুঁজে পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে তাঁদের নিজস্ব ভেন্যুতে।

বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে নিজেদের মাঠে রংপুর রাইডার্স নিয়মিতই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি চার তারিখ খুলনা টাইগার্সের সাথে একটা প্রস্তুতি ম্যাচেরও আয়োজন করা হয়েছে তাঁদের এই মাঠেই। রংপুর রাইডার্স অবশ্য তাঁদের এই মাঠের নাম দিয়েছে হোম অব দ্য রাইডার্স। আর সেখানেই চলছে রংপুরের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রস্তুতি।

নামে, ভারে এবং কাজে সব দিক থেকেই চ্যাম্পিয়ন হবার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি সবার আগে চমক দেখিয়েছে দেশ ও বিদেশের দারুণ কয়েকজন ক্রিকেটারকে দলে ভিড়িয়ে। এরপর বিপিএলের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে তাঁদের আছে নিজস্ব প্রেকটিস ভেন্যু। এছাড়া অন্য দলগুলোর আগেই ক্রিকেটারদের জার্সি, হেলমেট ইত্যাদি বুঝিয়ে দিয়েছে তাঁরা। সবমিলিয়ে মাঠ ও মাঠের বাইরে দুই জায়গাতেই বেশ গোছানে রংপুর রাইডার্স।

রংপুর তাঁদের দলও গুছিয়েছে পরিকল্পিত ভাবেই। ব্যাটিং, বোলিং কিংবা অলরাউন্ডার সব ডিপার্টমেন্টেই তাঁদের আছে সেরা সব ক্রিকেটার। সবমিলিয়ে এবারের বিপিএলের অন্যতম ব্যালেন্সড দল রংপুর রাইডার্স। ওপেনিং পজিশনের জন্য তাঁদের দলে আছে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার পাথুম নিসাঙ্কা। টপ অর্ডারে ব্যাট করার জন্য আছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ নেওয়াজও। এছাড়া রংপুরের ব্যাটিং অর্ডারে আছে লোকাল পারভেজ হোসেন ইমন, নাঈম শেখ কিংবা শামীম পাটোয়ারিরা।

তাঁদের দলে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা। গতবছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাট ও বল দুই ডিপার্টমেন্টেই দারুণ সময় কাটিয়েছেন। এবার প্রথমবারের মত জায়গা করে নিয়েছেন আইপিএলেও। আর বাংলাদেশের মাটিতে তো তিনি বরাবরই ভালো খেলে থাকেন। ফলে ব্যাট ও বল হাতে রংপুরের বড় ভরসার জায়গা তিনিই।

এছাড়া ইনিংসের শেষে ব্যাট করার জন্য তাঁদের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান তো আছেনই। তাঁর সাথে আছেন বাংলাদেশের আরেক স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার শেখ মাহেদী। দলে একাধিক অলরাউন্ডার থাকায় একাদশ তৈরি করাটাও বেশ সহজ হয়ে যাবে রংপুরের জন্য। রংপুর তাঁদের স্কোয়াডে রেখেছে শোয়েব মালিককেও।

তবে সব ক্রিকেটার এভেইলএবল থাকলে ভালো একাদশে সুযোগ পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে শোয়েব মালিকের জন্য। কেননা ব্যাটিং অর্ডারে পাথুম নিসাঙ্গা ও মোহাম্মদ নেওয়াজ খেলবেন বিদেশি কোটায়। এছাড়া অলরাউন্ডার হিসেবে সিকান্দার রাজা তো থাকবেনই।

আর রংপুরের বোলিং আক্রমণকে নেতৃত্ব দিবেন আরেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার হারিস রউফ। এই পেসারও অন্য দলগুলোর জন্য হতে পারেন ভয়ের কারণ। সাথে দেশের অন্যতম সেরা পেসার হাসান মাহমুদও খেলবে এই দলটার হয়ে। অভিজ্ঞ এই দুই পেসারকে সঙ্গ দেয়ার জন্য তাঁদের দলে আছে আরেক সম্ভাবনাময় ও তরুণ পেসার রিপন মন্ডল।

তবে শেখ মেহেদীর সাথে হাত ঘোরানোর জন্য দলটার নেই তেমন অভিজ্ঞ কোন স্পিনার। অভিজ্ঞতা না থাকলেও দলটার হয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে চাইবেন তরুণ স্পিনার রকিবুল হাসান। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী এই ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করেছেন নিয়মিতই।

ফলে সব মিলিয়ে মাঠের ক্রিকেটে বেশ রঙই ছড়াবে রংপুর। কুমিল্লা কিংবা বরিশালের মত শক্তিশালী দলগুলোর মত তাঁরাও খেলবে শিরোপা জেতার জন্যই। যেমনটা বলেছিলাম- নামে, ভারে এবং কাজে সব দিক থেকেই কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছে রংপুর।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link