একটি ট্রফি কত বঞ্চনার জবাব, একটি ট্রফি শত চেষ্টার মধুর ফলাফল। ছোট্ট বেলা থেকে একজনের স্বপ্ন ক্রিকেটার হবে, দেশের জন্য একটি শিরোপা জিতবে। এমন স্বপ্ন হয়ত ছোট বেলার ভ্রম। কিন্তু সময়ের সাথে কারো কারো মাঝে সেই স্বপ্নটা হয় তীব্র। নিজেকে তেমন করেই গড়ে তোলেন। তবে সবার ভাগ্য তো আর এত প্রসন্ন হয় না।
সবাই তো আর জিততে পারে না দেশের হয়ে বৈশ্বিক কোন শিরোপা। পৃথিবীর একদিকে যখন অন্ধকার নেমে আসে তখন ঠিক তাঁর উল্টো দিকটায় দিনের আলো ক্রমশ স্পষ্ট হয়। তেমনই ক্রিকেটের ইতিহাসে দুইবার দেশের হয়ে শিরোপা জেতার গল্পও রয়েছে। একবার যুব দলের হয়ে আরেকবার জাতীয় দলের হয়ে। সেই সব ক্রিকেটারদের নিয়ে হবে আজকের আলোচনা।
- জ্যাভিয়ার ডোহার্টি (অস্ট্রেলিয়া)
২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়া যুব দলের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন জ্যাভিয়ার ডোহার্টি। বাঁ-হাতি এই স্পিনার সেই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছিলেন। নিয়েছিলেন ১৬ উইকেট, খেলেছিলেন সাত ম্যাচ। তারপর ধীরে ধীরে তিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পান।
ওয়ানডে ফরম্যাটে প্রাধান্য পেয়েছিলেন তিনি। সেই ফরম্যাটে ৬০টি ম্যাচ খেলা ছাড়াও ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের দলেও ছিলেন ডোহার্টি। তবে খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেলেও তিনি বিশ্বকাপ জেতার গৌরব অর্জন করেছিলেন।
- মিশেল মার্শ (অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়া এখন পর্যন্ত সর্বাধিকবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা নিজেদের ঘরে তুলেছে। বিশ্বকাপের সেই শিরোপা ছুঁয়ে দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছিল মারকুটে ব্যাটার মিশেল মার্শেরও।
এমনকি তিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার স্বাদও পেয়েছেন নিজের ক্যারিয়ারে। অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের হয়ে দুইটি ভিন্ন ফরম্যাটের বৈশ্বিক আয়োজনের শিরোপা জেতা ছাড়াও ২০১০ সালে অধিনায়ক হয়ে জিতেছিলেন যুব বিশ্বকাপও। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে জেতা সম্ভব এমন তিনটি শিরোপা জেতা ব্যক্তিদের মধ্যে মার্শ দ্বিতীয়।
- জশ হ্যাজেলউড (অস্ট্রেলিয়া)
আজকের তালিকায় তৃতীয় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন জশ হ্যাজেলউড। তিনি মিশেল মার্শের নেতৃত্বাধীন ২০১০ যুব দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন।
শুধু তাই নয় ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম বিশ্বকাপ জয়েও অবদান রেখেছিলেন জশ হ্যাজেলউড। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও যুব বিশ্বকাপ জেতা ছাড়াও জশ হ্যাজেলউড জিতেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও।
- যুবরাজ সিং (ভারত)
তিনটি বিশ্বকাপ জেতা প্রথম ব্যক্তি যুবরাজ সিং। ভারতের এই কিংবদন্তি অলরাউন্ডার ২০০০ সালে জিতেছিলেন যুব বিশ্বকাপ। তারপর ২০১১ সালে ভারতের হয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপটা ছুঁয়ে দেখার আগে ২০০৭ সালে উদ্বোধনী আসরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফিটাও শূন্যে তুলে ধরেছিলেন যুবরাজ সিং।
কাকতালীয়ভাবে প্রায় ১১ বছরের ব্যবধান থাকলেও যুব বিশ্বকাপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন যুবরাজ সিং। তবে ২০১১ সালে যুবরাজকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল। কিন্তু যুবরাজ সব সমালোচনার জবাবটা দিয়েছেন নিজের পারফরমেন্সের মধ্য দিয়ে।
- বিরাট কোহলি (ভারত)
যুব বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ের রেকর্ডটা নিজেদের দখলে রেখেছে ভারত। একটা বড় সময় ধরে ভারতের যুবারা বিশ্বকাপের খরায় ভুগছিল। সেই খরা অধিনায়ক হয়ে কাঁটিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। তাঁর নেতৃত্বে ২০০৮ সালের যুব বিশ্বকাপ আবার ঘরে তুলেছিল ভারত। সেটা ছিল তাঁদের দ্বিতীয় শিরোপা।
তারপর নিজের দুর্দান্ত পারফরমেন্সের কারণে জাতীয় দলেও সুযোগ পান। সময়ের সাথে তিনি সুযোগ পেয়ে যান ভারতে দ্বিতীয় ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী দলে। ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ শিরোপাটা তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছিলেন বিরাট। বিরাটের সামনে আরো একবার সুযোগ রয়েছে, ২০২৩ সালে।