বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ম্যাচ। সেটা যে বাঁচা-মরার লড়াই ছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা বাংলাদেশের বিশ্বকাপ যাত্রায় শ্রীলঙ্কাই ছিল সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। এই ম্যাচের আগে নানারকম সমালোচনার ডোবাজলে হাবুডুবু খেয়েছে গোটা দল। এমন কি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বডি ল্যাঙ্গুয়েজও।
সে সব পেরিয়ে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে। বেশ কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে। তবে বডি ল্যাঙ্গুয়েজের যেই ঘাটতি হয়েছিল পরিলক্ষিত, সেটা কাটিয়ে উঠতে অন্তত পেরেছে বাংলাদেশ দল। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত সে কথাতেই আলোকপাত করলেন।
ম্যাচ পরবর্তী সময়ে শান্ত বলেন, ‘সবার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ছিল অসধারণ, আমরা আমাদের ১২০ শতাংশ দিয়েছি।’ টসে জিতে বাংলাদেশ বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে বাংলাদেশের বোলাররা নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন। প্রত্যেকের দারুণ বোলিংয়ের সুবাদে ১২৪ রানে শ্রীলঙ্কাকে আটকে ফেলা সম্ভব হয়।
তাতে অবশ্য ফিল্ডারদের অবদানও ছিল অনেকটাই। ৫৭টি বলে কোন প্রকার রানই নিতে পারেনি শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা। সে কৃতীত্ব যতটা না বোলারদের, ঠিক ততটাই ফিল্ডারদেরও। বেশকিছু রান আউটের সুযোগ তৈরি করলেও শেষ অবধি সফলতা পাওয়া যায়নি। কিন্তু চাপে ঠিকই ফেলা গেছে লংকান ব্যাটারদের।
বডি ল্যাঙ্গুয়েজের ইতিবাচকতা ফুটে ওঠে আরও একটি বিষয়ে। বাংলাদেশের বোলাররা বেশ আঁটসাঁট লাইন ও লেন্থে বল করে গেছেন। অতিরিক্ত রান দিয়েছেন মোটে চারটি। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কান বোলাররা ১৩টি অতিরিক্ত রান দিয়েছেন। যার অধিকাংশই ছিল ওয়াইড বল।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের দুর্দশাকে আরও একবার প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। নাজমুল শান্তও করেছেন। ব্যাটারদের ব্যর্থতার জন্যই সহজে জয় পাওয়া যায়নি ম্যাচটিতে। কিন্তু উইকেট বিবেচনায় ম্যাচে জয় বেশ আগেভাগেই পেয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ দল।
এ নিয়ে শান্ত বলেন, ‘আমি মনে করি তারা (শ্রীলঙ্কা) ভাল বল করেছে। তবে এমন উইকেটে আমাদের সহজেই জয় পাওয়া উচিত ছিল।’ ডালাসের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক- সেটা নতুন নয়। এখানে খেলা এই বিশ্বকাপের দু’টো ম্যাচেই রান হয়েছে বেশ অনায়াসে। এমন কি শ্রীলঙ্কাও একটা দারুণ শুরু পেয়েছিল বটে।
তবুও বাংলাদেশের এই ম্যাচে প্রাপ্তির তালিকাটা নেহায়েত ছোট নয়। রিশাদ হোসেনের প্রথম বিশ্বকাপেই দুর্দান্ত বোলিং। তাসকিন আহমেদের প্রত্যার্তবনে লঙ্কা শিবির আতংক সৃষ্টি। চিরায়ত মুস্তাফিজুর রহমানের রোশনাই। তাওহীদ হৃদয়ে ঝড়ো ইনিংস। এসবের পাশাপাশি লিটন দাসের ব্যাটে রান ফেরাটাও প্রাপ্তি ও স্বস্তির।
অফফর্মের গ্যাঁড়াকলে পড়েছিলেন লিটন। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টাই করেছেন তিনি। তাছাড়া লিটনের খেলা ইনিংসটি পরিস্থিতি বিবেচনায় অন্য যেকোন দ্রুতগতির ইনিংসের মতই কার্যকর। লিটনের এই আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করবার ইনিংসটি সম্পর্কে শান্ত বলেন, ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল লিটনের জন্য, সে বেশ কিছুদিন ধরেই ধুঁকছিল, সেই আজকে নিজের সক্ষমতা দেখাল। আমি মনে করি, সে খুব ভাল ব্যাটিং করেছেন।’