২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়েছিলো স্বাগতিকরা। ১২ বছর পর আবারো সেই দুঃস্বপ্ন চোখ রাঙাচ্ছে কাতারকে। এর আগে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইকুয়েডরের কাছে ২-০ গোলে হারে তারা। কাতারের আগে কোনো স্বাগতিক দেশ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পরাজিত হয় নি। এবার সেনেগাল এর কাছে ৩-১ গোলে হেরে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় প্রায় নিশ্চিত করেছে কাতার।
প্রথমার্ধের খেলায় প্রায় সমানে সমান ছিলো আফ্রিকা এবং এশিয়ার দুই প্রতিনিধি। প্রথমার্ধের প্রায় শেষ অবদি বেশ কয়েকটি আক্রমণ দুই দল করলেও কেউই তাদের বিপক্ষ দলের রক্ষণদূর্গ ভাঙতে পারেনি। সেনেগালের ফরোয়ার্ডরা কাতারের রক্ষণে ভয় ধরিয়েছিলেন বেশ কয়েকবার। অবশেষে ম্যাচের ৪০ তম মিনিটে কাতারের ডিফেন্সের ভুলে গোলের দরজা খোলে সেনেগালের। বোওলায়ে দিয়া ১-০ গোলে এগিয়ে দেন সেনেগালকে।
১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যাওয়া সেনেগাল বিরতির পর আরো আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে শুরু করে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচের ৪৯ তম মিনিটে কর্ণার থেকে পাওয়া বলে অসাধারণ হেডে সেনেগালকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন ডিধু।
২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে যেন জেগে উঠে কাতার। বেশ কয়েকটি ভালো আক্রমণ করে তাঁরা। ম্যাচে ৬৩ তম মিনিটে কাতারের আল মোয়েজের অসাধারণ শট ফিরিয়ে দেন সেনেগালের গোলরক্ষক মেন্ডি। এর ৩ মিনিট পর আবারো একটি গোছানো আক্রমণ করে কাতার। কিন্তু মেন্ডির অসাধারণ সেভ এ গোলের ব্যাবধান কমানো হয়নি কাতারের।
তবে ম্যাচের ৭৮ মিনিটে প্রতি আক্রমণে গোলের ব্যাবধান কমায় কাতার। মাত্র ৪ মিনিট আগেই বদলি হিসেবে নামা মোহাম্মদ মুনতারির অসাধারণ হেডে স্কোরলাইন ২-১ করে কাতার। মুনতারির করা এই গোলটি কাতারের বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম গোল।
তবে কাতারের এই ব্যবধান কমানো বেশিক্ষন স্থায়ী হয়নি। ম্যাচের ৮৪ তম মিনিটে অসাধারণ আক্রমণ, দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে সেনেগালকে ৩-১ গোলে এগিয়ে দেন বাম্বা দিয়েং। ম্যাচের বাকি সময় আরো কয়েকটি আক্রমণ করলেও ব্যাবধান আর বাড়াতে পারেনি আফ্রিকার প্রতিনিধিরা। অন্যদিকে কাতারেরও বেশ কয়েকটি নিষ্ফল আক্রমণে ৩-১ স্কোরলাইনেই শেষ হয় ম্যাচ।
এ হারে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়া প্রায় নিশ্চিত হলো কাতারের। নেদারল্যান্ডস যদি তাদের পরের ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে না হারে কাতারই হবে প্রথম স্বাগতিক দল যারা গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচের পরই তাদের বিদায় নিশ্চিত করলো। এর আগে গ্রুপপর্ব থেকে বাদ পড়া আরেক স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের গ্রুপপর্বের ৩য় ও শেষ ম্যাচ শেষে বিদায় নিশ্চিত করেছিলো। আয়োজক হিসেবে কাতার কেমন করবে শেষ পর্যন্ত তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু কাতারের মাঠের পারফরম্যান্স এখন পর্যন্ত ভুলে যাবার মতই।