ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরে রয়েছে বাংলদেশ। করোনা বিধির কারণে নিউজিল্যান্ডে পৌছার পর থেকেই নিজ নিজ কক্ষে আবদ্ধ ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। প্রথম তিন দিন হোটেলে বন্দী থাকার পর সতেজ হতে চতুর্থ দিন থেকে নিয়ম মেনে ৩০ মিনিট বাইরে হাটার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে মুশফিক-তামিমদের।
বাইরের আবহাওয়াতে হাটা চলা করার পর সবাই সতেজ হলেও নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে কয়েক জন ক্রিকেটারের। অন্য কোন অভিযোগ না থাকলেও দলের সাথে সফর সঙ্গী হওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক জালাল ইউনুস জানিয়েছেন ক্রিকেটারদের ঘুমের সমস্যাই বেশি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘প্রথম ২-৩ দিন অনেকেরই সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু পরে যখন বের হওয়া শুরু করলো, আমরা এখন দিনে দুইবার বের হতে পারি ৩০-৪০ মিনিট হাঁটা যায়। সবার সাথে সবার দেখা হওয়াতে অনেকেই মানসিকভাবে ফ্রেশ হয়ে গেছে। আসলে আর কোন অভিযোগ নেই, একটা অভিযোগ হল কয়েকজনের ঘুমের সমস্যা হয়েছে। সময়ের কারণে হতে পারে। অনেকে রাতের বেলা না ঘুমিয়ে দিনের বেলায় ঘুমাচ্ছে।’
তবে ঘুমের সমস্য হলেও এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন জালাল ইউনুস। তিনি মনে করেন আউটডোরে অনুশীলন শুরু হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এই বোর্ড পরিচালক জানিয়েছেন ঘুমের সমস্য সহ বিভিন্ন বিষয়ে সীমাবদ্ধতা থাকলেও মানসিকভাবে ফিট রয়েছেন সবাই।
জালাল ইউনুস বলেন, ‘সবার সাথে দেখা হচ্ছে, যখন আমরা গ্রুপ হয়ে বের হচ্ছি। গ্রুপগুলো আবার পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। প্রতিদিন একই গ্রুপ থাকেনা। ৩৫ জন আছে, ৯ জন করে তিনটা গ্রুপ, একটা গ্রুপে ৮ জন। এভাবেই আমরা বের হচ্ছি দুই বেলা। এতে করে প্রতিটি প্লেয়ারের সাথেই সশরীরে কথা বলতে পারি। দেখা সাক্ষাত হচ্ছে। সবাই আলহামদুলিল্লাহ মানসিকভাবে ফিট আছে। একটাই সমস্যা যে ঘুম। আশা করি এটাও আউটডোর অনুশীলনের পর ঠিক হয়ে যাবে।
নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার পর খাওয়া দাওয়া নিয়েও অভিযোগ ছিলো অনেক ক্রিকেটারের। একজন ক্রিকেটার জানিয়েছিলেন দুই দিন পর ভাত দেওয়া হয়েছিলো তাদের। তবে জালাল ইউনুস জানিয়েছেন খাওয়া নিয়ে সমস্যর সমাধান হয়েছে; বাইরে থেকে কয়েক জন খাবার এনে খেলেও অধিকাংশই এখন হোটেলের খাবারই খাচ্ছেন।
বোর্ড পরিচালক বলেন, ‘মানসিকভাবে সবাই ফিট, খাওয়াদাওয়ারও কোন অভিযোগ নেই কারও। হিল্টন হোটেলে আছি আমরা, প্রকৃতপক্ষে স্ট্যান্ডার্ড খাওয়া দাওয়া, খুবই ভালো। অপশনও আছে, কেউ চাইলে উবার ইটসের মাধ্যমে খাবার আনাতে পারে। দুই একজন খাচ্ছেও। তবে মোটামুটি সবাইই হোটেলের খাবারই খাচ্ছে।’
করোনা মাহামারীর শুরু থেকেই মাঠের বাইরে ছিলো বাংলাদেশ। গত বছরের শেষের দিকে জৈব সুরক্ষা বায়ো বাবল মেনে দেশের মাটিতে সিরিজ খেললেও করোনা প্রকোপের ভিতর বিদেশের মাটিতে এটাই বাংলাদেশের প্রথম সফর। জালাল ইউনুস মনে করেন সবার জন্য এটা নতুন অভিজ্ঞতা; কঠিন হলেও সব নিয়ম মেনেই চলছেন তাঁরা।
তিনি বলেন, ‘এটা ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা। সবার কাছেই নতুন। কোভিডের কারণে এখানে কড়া কোয়ারেন্টাইন বিধিনিষেধ। আমরা সবাইও মানছি, নিউজিল্যান্ড সরকার যেভাবে কোভিড প্রটোকল করে দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি এটা মানতে। কিন্তু এটা খুবই কঠিন। সবচেয়ে বড় কথা আমরা এ ধরণের পরিস্থিতিতে এর আগে পড়িনি। আমার থেকে খেলোয়াড়দের কথা যদি বলি তারা এ রকম পরিস্থিতিতে পড়েনি এর আগে। বাংলাদেশে যখন খেলেছে তখন তিনদিন পরই তারা অনুশীলন করতে পেরেছিল।’
১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে কুইন্সটাউনে সাত দিনের ট্রেনিং ক্যাম্প করবে বাংলাদেশ। ২০ মার্চ ডুনেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে শুরু হবে সিরিজ। ২৩ মার্চ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে হ্যাগলি ওভাল, ক্রাইস্টচার্চে এবং ২৬ মার্চ শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে বেসিন রিজার্ভ,ওয়েলিংটনে।
ওয়ানডে সিরিজ শেষে ২৮ মার্চ সেডন পার্ক, হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি। ৩০ মার্চ ম্যাকলিন পার্ক, নেপিয়ারে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শেষে ইডেন পার্ক, অকল্যান্ডে এক এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে শেষ টি-টোয়েন্টি।