নিজের জন্মদিন উপলক্ষে স্রষ্টার কাছে রশিদ খান কিছু চেয়েছিলেন কি না সেটা জানা যায়নি; তবে ক্রিকেট বিধাতা নিজের ‘বিস্ময় বালক’কে জন্মদিন উপলক্ষে দিয়েছেন ঐতিহাসিক উপহার। হ্যাঁ, ঐতিহাসিক-ই তো বটে; প্রথমবারের মত দক্ষিণ আফ্রিকাকে যেকোনো ফরম্যাটে সিরিজ হারালো আফগানিস্তান – যার পুরোধা তিনি নিজেই। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটা আরও একবার একসাথে হেসে উঠলো তাঁর জাদুতেই।
রশিদ খান ‘মিনো ব্যাশার’, রশিদ খান কেবল ছোট দলের সাথে পারেন; নিন্দুকের কত বিদ্রূপই তো ভাসে ক্রিকেটাঙ্গনে। সে সব দেখে হয়তো তিনি মুচকি হেসেছেন, অপেক্ষায় ছিলেন সুযোগ পাওয়ার। আর সুযোগ আসতেই সেটাকে দুহাতে লুফে নিলেন তিনি – ঠিক যেভাবে আরাধ্য কোন রত্নকে আগলে নিতে হয়।
৩১২ রানের লক্ষ্যটা চ্যালেঞ্জিং হলে দক্ষিণ আফ্রিকা ছুটছিল ভালভাবেই। পাওয়ার প্লেতে কোন উইকেট না হারিয়ে ৫৪ রান, খানিক পরে ওপেনিং জুটির বয়স পেরিয়ে যায় ৭০ রান। কিন্তু প্রোটিয়াদের স্বস্তির সমাপ্তি সেখানেই, টনি ডি জর্জিকে আউট করে ধ্বংসলীলার শুরুটা করেছিলেন এই লেগ স্পিনার। এরপর একে একে আউট করেন পাঁচ পাঁচজন ব্যাটারকে।
শুরুটা ওমরজাই করেছিলেন, মাঝে নানগেলিয়া খারোটে উইকেট পেয়েছেন বটে। তবে সফরকারীদের ৭৩/০ থেকে ১৩৪ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পিছনে মূল অবদান আফগান পোস্টার বয়েরই। এইডেন মার্করাম, ট্রিস্টান স্টাবস কেউই বুঝতে পারেননি তাঁর বোলিংয়ের ঘূর্ণিঝড় – কবজির মোচড়ে তিনি ধসিয়ে দিয়েছেন প্রতিপক্ষকে।
তাতে অবশ্য তরুণ খারোটের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা না বললেই নয়। ক্যারিয়ারের মাত্র তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমেই ফোরফারের স্বাদ পেলেন তিনি, রিজা হেন্ড্রিকসের উইকেট নেয়ার পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার লোয়ার অর্ডারকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন এই বাঁ-হাতি।
যদিও জয়ের ভিত আগেই গড়ে দিয়েছিলেন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। অনবদ্য ব্যাটিং শৈলীর প্রদর্শনী দেখিয়েছেন তিনি, খেলেছেন ১০৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। অবশ্য আজমতউল্লাহর ঝড়ো গতির ৮৬ রান কাজ করেছে এক্স ফ্যাক্টর হিসেবে, মাঝারি মানের সংগ্রহকে নিয়ে গিয়েছে পাহাড়সম উচ্চতায়। আর এই রান পাহাড়ে চাপা পড়ে বধ হলো প্রোটিয়ারা।