রিয়াল মাদ্রিদ ও সময়, কারো জন্য থেমে থাকে না

চলতি মৌসুমের অর্ধেকটা শেষ, কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদকে কোথাও একটা মুহুর্তের জন্য ম্লান মনে হয়নি। লিগ টেবিলের শীর্ষে আছে তাঁরা; ছয় ম্যাচের ছয়টিতে জিতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব শেষ করেছে। কোপা দেল রে আর স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ের পথেও ভালভাবে এগিয়ে আছে দলটি।

অথচ মৌসুমের শুরুতে করিম বেনজেমার ক্লাব ছাড়ার খবর শঙ্কার কালো মেঘ হয়ে এসেছিল। গত কয়েক বছর ধরে যার কাঁধে ভর করে শিরোপার লড়াইয়ে নেমেছিল লস ব্ল্যাঙ্কোস তাঁর বিদায়ে ভক্ত-সমর্থকেরা ভেবেছিল হতশ্রী পারফরম্যান্স বোধহয় দেখতে হবে। আবার ডিফেন্সের ভরসা থিবো কোর্তায়া আর এডার মিলিটাওয়ের ইনজুরি আরো প্রত্যাশাকে আরো মিইয়ে দিয়েছিল।

কিন্তু খেলা শুরু হতেই দেখা গেলো কিসের কি, সব জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে দিয়ে মাদ্রিদ জায়ান্টরা খেলছে নিজেদের মত করে। জুড বেলিংহ্যামের অতিমানবীয় পারফরম্যান্স আর রদ্রিগো, ব্রাহিম দিয়াজদের ধারাবাহিকতার কল্যাণে বেনজেমার অভাব অনেকটাই পূরণ হয়েছে। সেই সাথে রুডিগার, কারভাহালরা যেভাবে খেলছেন তাতে রক্ষণ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই।

অবশ্য অল হোয়াইটদের ইতিহাস পড়লে এমনটাই দেখা যাবে। তারকাদের থাকা, না থাকা কখনোই দলটির সাফল্যে প্রভাব ফেলতে পারেনি। গ্যালকটিকো যুগ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সবসময়ই রিয়ালের জার্সিতে একাধিক বিশ্বসেরা ফুটবলার খেলছেন। একজন চলে গেলে আরেকজন তাঁর জায়গা দাঁড়িয়ে সাফল্যের পথে টেনে নিয়েছেন দলকে।

এই যেমন রাউলের পরে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো হয়ে উঠেছিলেন স্প্যানিশ জায়ান্টদের মেইনম্যান। ২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত রিয়ালের সব ট্রফিতে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল তাঁর। কিন্তু তিনি বিদায় নিলেও থেমে যায়নি লস ব্ল্যাঙ্কোসরা, করিম বেনজেমা দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এখন দলের নায়ক হয়ে উঠেছেন জুড বেলিংহ্যাম, ভিনিসিয়াস জুনিয়ররা।

রিয়াল মাদ্রিদ আসলে নদীর স্রোতের মতই। স্রোতের কারো জন্য থেমে থাকার সময় তাঁর নেই, সে নিজের কাজটা ঠিকঠাক করে যায় সর্বদা। রিয়ালও তাই, নির্দিষ্ট কারো অভাব বোধ করার সুযোগ নেই তাঁদের। ইতিহাস বলে, রিয়ালের দর্শনও এমনই। তাঁরা নিজেদের মত করেই অর্জনের খাতা ভারী করে চলছে, কারও জন্য তাঁদের অর্জন থেমে থাকে না। তা যে যত বড় খেলোয়াড়ই হোক না কেন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link