সাত বছর পর

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেওয়ার মত এখনো অনেক কিছু আছে হারমারের। দক্ষিণ আফ্রিকার এই দুরবস্থায় স্পিন বিভাগে তিনি রাখতে পারেন কার্যকরী ভূমিকা। সাদা পোশাকে সেরাটা দিতে পারলে হয়তো সুযোগ মিলতে পারে রঙিন পোশাকেও। কেশব মহারাজের সাথে ডারবান টেস্টে জুটি গড়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে কেমন পারফরম করতে পারেন সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

সবশেষ খেলেছিলেন ২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে। ভারতের মাটিতে দুই টেস্টে ৯ উইকেট শিকারের পর বাদ পড়েন দল থেকে। এরপর জাতীয় দলের বাইরে প্রায় সাত বছর। সবশেষ ঘরোয়া ক্রিকেটে ৪ দিনের সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম করে সুযোগ পেয়ে গেলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে।

ডারবানে সিরিজের প্রথম টেস্টে দীর্ঘ প্রায় সাত বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন এই প্রোটিয়া স্পিনার। ২০১৭ সালে কলপ্যাক চুক্তির কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে লম্বা সময় আর দেখা যায়নি হারমারকে। ২০১৭ সালে কলপ্যাক চুক্তিতে এসেক্সের হয়ে খেলতে যাওয়ার পর স্বপ্ন দেখছিলেন ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে খেলার। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘আমি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে চাই। আমি মনে করি আমার মধ্যে সামর্থ্য কেমন আছে সেটা আমি প্রমাণ করেছি। আমার মধ্যে সামর্থ্য, সম্ভাবনা এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার মত সুযোগ আছে বলে মনে করি।’

যদিও হারমারের সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। বহু কাঠ-খড় পোড়ালেও ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি তিনি। কাউন্টিতে অসাধারণ পারফরম্যান্সেও সুনজরে আসতে পারেননি নির্বাচকদের। অগ্যতা ফিরে আসেন নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকাতে। শুরু করেন দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া লিগে খেলা। সবশেষ ঘরোয়া টুর্নামেন্টে ২১.৪০ গড়ে টাইটান্সের হয়ে ২৭ উইকেট শিকারের পর সুযোগ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। এরপর সেখান থেকে সুযোগ পেয়ে যান বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান নির্বাচক ভিক্টর পিটস্যাঙ বলেছিলেন, ‘সে আমাদের নজরে ছিল। সে ঘরোয়া ক্রিকেটে অসাধারণ পারফরম করেছে।’

২০১৫ সালে টেস্ট অভিষেকের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্রগ্রাম ও মিরপুরে দুই টেস্ট খেলেছিলেন এই স্পিনার। চট্রগ্রামে এক ইনিংসে ১০৫ রানে তিন উইকেট শিকার করলেও ঢাকায় ৭৬ রানে ছিলেন উইকেটশূন্য। ৫ টেস্টে ২০ উইকেট শিকারের পর বাদ পড়েন দল থেকে। এরপর কলপ্যাক চুক্তিতে খেলতে যাওয়ায় জাতীয় দলে আর ফিরতে পারেননি হারমার। কাউন্টিতে অসাধারণ পারফরম্যান্সের কারণ চলতি বছর জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের জন্য জাতীয় দলে ডাক পান হারমার। জর্জ লিন্ডের অবর্তমানে সুযোগ পান ৩২ বছর বয়সী এই স্পিনার। যদিও ওই সফরে কোনো ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেওয়ার মত এখনো অনেক কিছু আছে হারমারের। দক্ষিণ আফ্রিকার এই দুরবস্থায় স্পিন বিভাগে তিনি রাখতে পারেন কার্যকরী ভূমিকা। সাদা পোশাকে সেরাটা দিতে পারলে হয়তো সুযোগ মিলতে পারে রঙিন পোশাকেও। কেশব মহারাজের সাথে ডারবান টেস্টে জুটি গড়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে কেমন পারফরম করতে পারেন সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

অন্তত জাতীয় দলে নিয়মিত হতে হলে হারমারকে দেখাতে হবে নজরকাড়া পারফরম্যান্স। ঘরোয়া ক্রিকেটের ধারাবাহিকতা জাতীয় দলে ধরে রাখতে না পারলে আবারও হয়তো বাদ পড়বেন। তরুন সম্ভাবনাময়ী বেশ কিছু ক্রিকেটারের মাঝে হারমারের জন্য এই লড়াইটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও বাংলাদেশর সমর্থকরা মোটেও চাইবেন না হারমার জ্বলে উঠুক লিটন-মুমিনুলদের বিপক্ষে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...