তবুও যে ভুলের ক্ষমা নেই

কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে তারকাখচিত আক্রমণভাগ নিয়ে এসেছিল ব্রাজিল। দারুণ ফুটবলের প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল সেলেসাওরা। কিন্তু সেমিতে উঠার লড়াইয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে শিরোপা স্বপ্নের সলিল সমাধি ঘটে নেইমার-সিলভাদের।

কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে তারকাখচিত আক্রমণভাগ নিয়ে এসেছিল ব্রাজিল। দারুণ ফুটবলের প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল সেলেসাওরা। কিন্তু সেমিতে উঠার লড়াইয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে শিরোপা স্বপ্নের সলিল সমাধি ঘটে নেইমার-সিলভাদের।

কাতারের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে অতিরিক্ত সময়ে একক নৈপুণ্যে ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন নেইমার। সবাই ধরেই নিয়েছিল ব্রাজিলই জিততে যাচ্ছে। কিন্তু বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়ে ১১৭ মিনিটে ক্রোয়েশিয়াকে সমতায় ফেরান পেতকোভিচ। পরবর্তীতে টাইব্রেকারে রদ্রিগো এবং মারকুইনহোস মিস করলে ৪-২ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় ক্রোয়াটরা।

সেদিন টাইব্রেকারে ব্রাজিলের পক্ষে প্রথম শটটি নিতে আসেন ২১ বছরের তরুণ রদ্রিগ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁর শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। ম্যাচ হারের পর তাই কান্নায় ভেঙে পড়েন তরুণ এই তারকা। ম্যাচ শেষে ক্লাব সতীর্থ লুকা মদ্রিচ সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে আসলেও তাই কান্না থামাতে পারেননি এই তরুণ। 

বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেবার পর একদিন কেটে গেলেও এখনো সেই ম্যাচের ঘোর থেকে বেরোতে পারেননি রদ্রিগো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষমা চেয়েছেন সমর্থকদের কাছে। তিনি লিখেন, ‘কোনো সন্দেহ ছাড়াই আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কষ্টের মুহুর্ত এটি। এক মুহুর্তের মাঝে যেন স্বর্গ থেকে নরকে আছড়ে পড়েছি আমি। নিজের ভয়ংকরতম দু:স্বপ্নেও এমনটা ভাবতে পারছি না আমি।’ তবুও কি এই ভুলের ক্ষমা হয়?

রদ্রিগো বলেন, ‘আমি জানি সময় সবকিছু বদলে দেবে। কিন্তু এই মূহুর্তে আমি ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস কিংবা শক্তি পাচ্ছি না। তবে আমি জানি যত সময়ই লাগুক আমি ফিরে আসবো। কত সময় পর কিংবা কিভাবে সেটা না জানলেও আমি জানি আমি আরো শক্তিশালী হয়েই ফিরবো।’ যাক, আপাতত সেই প্রত্যাশাই করা যাক।

নিজের পোস্টে সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ এই উইংগার। লিখেন, ‘সবাইকে ধন্যবাদ যারা আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, উৎসাহ জুগিয়েছেন সামনে এগিয়ে যাবার। সবকিছুর জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ এবং ক্ষমা চাচ্ছি অকৃতজ্ঞ হবার জন্য, আমি বারবার ভাবছিলাম কেনো আমিই, কেনো আমার সাথেই এমনটা হলো। কেনো এভাবে বদলে গেলো আমার দুনিয়া। যারা আমার সাথে ছিলেন তাঁরা জানতেন পুরো বছরজুড়ে আমি নিজেকে প্রস্তুত করেছি বিশ্বকাপের জন্য। প্রতিটা মুহুর্ত কেটেছে বিশ্বকাপের স্বপ্নে, তবে শেষটা কেন এমন হল।’

২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করেন এই তরুণ। তিনি লিখেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে। তবে আমি কোনো কিছু নিয়ে অভিযোগ জানাচ্ছি না। আমি মাঠে নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করেছি। সবাইকে আরো একবার ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য। আশা করছি ২০২৬ বিশ্বকাপ অন্যরকম হবে। আমি এখনো বিশ্বাস করি আমরা সবাই বেশ ভালোই আছি। আমাদের প্রজন্মটা অসাধারণ। ব্রাজিলের এই দলটা বিশ্বকাপ জেতার যোগ্য এবং তাঁরা জিতে দেখাবে। ভালোবাসি ব্রাজিল। 

টাইব্রেকারে মিস করা খেলারই অংশ। নিজের প্রথম বিশ্বকাপে আসা, মাত্র ২১ বছর বয়সের তরুণ রদ্রিগো হয়তো কোয়ার্টার ফাইবালের চাপটা সামলাতে পারেননি। কিংবা হয়তো দিনটা ছিল লিভাকোভিচের, ক্রোয়াটদের।

যেটাই হোক, রদ্রিগোর নিজেকে দোষী ভাবার কারণ নেই, সময়ের সাথে সাথে তাঁর ক্ষতে প্রলেপ পড়ুক। বিশ্বকাপে তিনি ফিরে আসুন প্রবলভাবে, শক্তিশালী রূপে ফিরুক ব্রাজিল। তবে আপাতত ব্রাজিলের কাতার বিশ্বকাপে রূপকথার যাত্রার সমাপ্তি ঘটলো শেষ আটেই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...