হুট করেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স নেতৃ্ত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিল রোহিত শর্মাকে। জাতীয় দলের অধিনায়ক হওয়া সত্ত্বেও ফ্রাঞ্চাইজি লিগে অন্যের অধীনে খেলবেন তিনি, মানতে পারেনি ভক্ত-সমর্থকেরা। ফলে বিতর্কের আগুন জ্বলে উঠেছিল, তবে রোহিত নিজে শান্ত ছিলেন এতসব কিছুর মাঝে। ঠিক যেমনটা শান্ত ছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পর।
হ্যাঁ ঠিক শুনেছেন, হিটম্যান আইপিএলে সেঞ্চুরি করেছে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যার কি না পাঁচ পাঁচটি শতক, সেই তিনিই ঘরোয়া টুর্নামেন্টে শতক হাঁকানো ভুলতে বসেছিলেন। কবে সেই এক যুগ আগে, ২০১২ সালে প্রথম ও শেষবারের মতো তিন অঙ্কের ঘরে প্রবেশ করেছিলেন এই ব্যাটার। এখন চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সমাপ্ত করলেন এক যুগের তীব্র খরা।
এদিন ৬৩ বলে ১০৫ রানের অতিমানবীয় এক ইনিংস খেলেছেন তিনি। এ ইনিংস খেলার পথে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১১টি চার আর পাঁচটি বিশাল ছক্কা। দলকে জেতাতে পারেননি অবশ্য, ২০৭ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে থেমেছেন ২০ রান দূরে। তবে এমন পারফরম্যান্সের গুরুত্ব তাতে একটুও কমেনি, বরং একাকী লড়াই করার জন্য আলাদা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।
এদিন শুরু থেকেই জয়ের চেষ্টা চালিয়েছিলেন এই ওপেনার। চার মেরে রানের খাতা খুলেছিলেন, এরপর চড়াও হয়েছিলেন বোলারদের ওপর। পাওয়ার প্লের পূর্ণ ফায়দা তুলেছেন তিনি, ২৫ বল খেলে করেছিলেন ৪২ রান। এরপর ৩০ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ হয়, চলতি আইপিএলে এটিই তাঁর প্রথম অর্ধশতক।
ঈশাণ কিষাণ আর সুরিয়াকুমার যাদব দ্রুত বিদায় নিলে মুম্বাইয়ের জয়ের সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। তবু পথের শেষ পথিক সেজে একাই চলতে থাকেন এই ডানহাতি। তিলক ভার্মাকে সঙ্গে গিয়ে গড়েন ৬০ রানের জুটি। তিলক ফিরলে বাকিরা আর কেউই সমর্থন দিতে পারেনি তাঁকে, ফলে জয়ের পিছনে ছুটতে পারেননি শেষপর্যন্ত।
সেঞ্চুরি করেছেন, তাঁর ওপর সংশয় থাকা সবাইকে জবাব দিয়েছেন। তবু মাঠ ছাড়ার সময় তৃপ্তির ছিটেফোঁটাও ছিল না রোহিত শর্মার মুখে। দলের হারের জন্য বোধহয় নিজেকেই দায়ী ভাবছেন তিনি। রোহিতরা আসলে এমনই, ব্যক্তিগত অর্জনের আগে ভাবেন দলকে নিয়ে। তাই তো পাঁচ পাঁচটি শিরোপা জেতা সত্ত্বেও অধিনায়কত্ব ছিনিয়ে নেয়া হলে কোন প্রতিবাদ করেননি।