খুব শখের আর মূল্যবান জিনিসকে কি করতে হয়? ঠিকই ধরেছেন যত্নে তুলে রাখতে হয়। অযত্নে, অবহেলায় পড়ে থাকলে জিনিসপাতি তার মূল্যমান হারায়। টিম ইন্ডিয়ার জন্য সেই রকম মূল্যবান রত্নের নাম হল সুরিয়াকুমার যাদব। এই রত্নকে যেখানে সেখানে না খেলিয়ে ভারত তাই আগলে রাখে, যাতে সবথেকে প্রয়োজনীয় সময়ে এই তুরুপের তাসকে মাঠে নামানো যায়। কারণ সুরিয়াকুমার মাঠে নামলেই দারুণ কিছু করবেন এটাই অনুমেয়।
তাছাড়া বর্তমানে সুরিয়াকুমার যাদব দারুণ ফর্মে রয়েছেন। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটিতে তাঁর প্রমাণ আরেকবার দিলেন তিনি। সুরিয়াকুমার যাদব মাত্র ২২ বলে ৬১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন। যার মধ্যে তিনি পাঁচটি চার এবং পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। এই ম্যাচে ১৬ রানের জয়ের সুবাদে ভারত তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটিতে ভারত ২-০ ব্যবধানে জিতে গিয়েছে, এক ম্যাচ হাতে রেখেই।
অগ্রিম জয় নিশ্চিত হওয়া সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে তাই আর সুরিয়া কুমারকে খেলাবে না ভারত। আগেই বলেছি, সুরিয়াকুমার এমন এক রত্ন, যার ব্যবহার করতে হয় বেশ ভেবেচিন্তে, বড্ড সযত্নে ।
ওপেনার রোহিত শর্মা এবং লোকেশ রাহুল আউট হওয়ার পর, ভারত যে কারণে তাদের রানের গতি অক্ষুণ্ণ রাখতে পেরেছিল তা কেবল সুরিয়াকুমার এবং বিরাট কোহলির অবদানে। কোহলি এবং সুরিয়া ১০২ রানের দারুণ জুটি গড়েন। যাই হোক সুরিয়াকুমারের ফর্ম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ভারতের জন্য একটি বড় ইতিবাচক দিক। আগামী ২৩ অক্টোবর পাকিস্তানের মোকাবেলা করে ভারত তাদের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে।
ম্যাচ–পরবর্তী উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে হার্শা ভোগলে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আপনি কীভাবে সূরিয়ার ফর্মকে ধরে রাখেন? তিনি যে ফর্মে আছেন এটিকে কিভাবে রক্ষা করবেন?’
এই প্রশ্নের উত্তরে বিচক্ষণ রোহিত শর্মা দুর্দান্ত উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভাবছি ২৩ তারিখ পর্যন্ত সুরিয়াকুমারকে আর খেলাবো না। ওর ফর্মকে যত্ন করে তুলে রাখব।’
অর্থাৎ সুরিয়াকুমার যে অবিশ্বাস্য ফর্মে আছেন যেন তেন ম্যাচ খেলিয়ে তাঁর প্রতিভার অপচয় না করে বরং তাঁকে বিশ্রামে রাখবেন অধিনায়ক। যাতে পরবর্তী ম্যাচগুলোতেও সুরিয়াকুমার তাঁর দুর্দান্ত ফর্মের জৌলুস দেখাতে পারেন। কারণ আসন্ন টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মিশনে ফর্মের তুঙ্গে থাকে সুরিয়াকুমারের বিকল্প নেই। একজন সুরিয়াকুমার যাদব চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে যেকোনো ম্যাচের মোড় একাই ঘুরিয়ে দেয়ার সামর্থ্য রাখেন। ভারতের সবচেয়ে মূল্যবান টি- টোয়েন্টি ফরম্যাটের উপযুক্ত ব্যাটার তিনি।
আরেকটি মজার ব্যাপার হলো রোহিত শর্মা ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর দলের দায়িত্বভার কাঁধে নেন এবং তারপর থেকে তাঁর নেতৃত্বের ছায়াতলে দল কোনও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারেনি। টানা এগারোটি দ্বিপাক্ষিক টি- টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো ভারত।
যাই হোক, রোহিত শর্মা বেশ কোমর বেঁধেই নামছেন বিশ্বকাপ মিশনে। দলের কাকে কখন ব্যবহার করতে হয় তা বেশ ভালো জানেন তিনি। একজন যোগ্য অধিনায়কের যোগ্য নেতৃত্বগুণ ভারতকে শিরোপার কাছাকাছি নিয়ে যাবে। এই মুহূর্তে দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তুরুপের তাস সুরিয়াকে যথাসময়ে তিনি ব্যবহার করবেন, যিনি দলকে কাঙ্খিত মিশনে সফলকাম হতে নিজের সবটুকু ঢেলে দিবেন এইটুকুই প্রত্যাশা।