‘ক্যারিয়ার নিয়ে ঝুঁকি নেবো না’

গত প্রায় এক যুগ ধরে সীমিত ওভারে ক্রিকেটে নিজেকে প্রায় অপরিহার্য করে তুলেছেন পেসার রুবেল হোসেন।

এই সময়ে রুবেলের হাত ধরে বাংলাদেশ সাফল্যও পেয়েছে। তবে ইদানিং একাদশে তার জায়গাটা মাঝে মাঝেই নড়বড়ে হয়ে পড়ছিলো। তবে স্কোয়াডে নিশ্চিতই ছিলেন রুবেল। কিন্তু পিঠে ব্যাথার কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দল থেকে সরে দাড়াতে বাধ্য হলেন ডানহাতি এই পেস বোলার।

খেলা ৭১-এর সাথে একান্ত আলাপে রুবেল বলছিলেন, নিউজিল্যান্ড সফর থেকে শুরু হওয়া ব্যাথা একেবারেই চলে যায়নি তার। এখনও ব্যাথা অনুভব করছেন। এই অবস্থায় খেললে তার ডিস্কের সমস্যাটা আরও জটিল হয়ে যাওয়ার ঝুকি থাকে। আর নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে এই ঝুঁকি নিতে রাজি নন রুবেল।

বাংলাদেশ দলের নিউজিল্যান্ড সফর থেকেই পিঠে ব্যাথায় ভুগছিলেন রুবেল। শুরুতে মনে হয়েছিলো, সাধারণ ব্যাথা। কিন্তু পুনর্বাসন ও চিকিৎসায় ব্যাথার খুব উন্নতি হয়নি। পরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বলেছেন, এই ব্যাথাটা আসলে দীর্ঘদিন ধরে খেলার স্বাভাবিক একটা প্রতিক্রিয়া। এই ব্যাথা কখনোই একেবারে চলে যাবে না। এটাকে মানিয়ে নিয়েই খেলতে হবে রুবেলকে।

রুবেল আপাতত যে এই ব্যাথা নিয়ে খেলতে পারছেন না, সেটা নিজেই আজ বলছিলেন। তিনি বলছিলেন, গুরুতর সমস্যা না হলে তিনি কিছুতেই সিরিজ থেকে সরে দাড়াতেন না, ‘জাতীয় দলের খেলা থেকে কে সরে দাড়াতে চায়? আমি তো সবসময় খেলার পক্ষে। আর আমার জায়গাও তো আগের মত অতো নিশ্চিত না। ফলে আমি খালি খালি সরে দাড়াবো কেনো? আমার তো এখনও ব্যাথা আছে। সে জন্যই খেলতে পারছি না।’

রুবেলের এখন কী ধরণের ব্যাথা আছে, সেটাও বলছিলেন তিনি। বোলিংয়ের সময় ব্যাথা টের পাচ্ছেন না। তবে বসা থেকে উঠে দাড়াতে গেলে ব্যাথা লাগছে, ‘বোলিংটা করতে পারছি। তাও তো অনেকদিন হলো বল করি না। আমার এখন মূলত ব্যাথা লাগছে বসা থেকে উঠে দাড়াতে গেলে। এই ব্যাথা নিয়ে আমি ফিল্ডিং তো করতে পারবো না ঠিকমত। ক্রিকেট খেলা মানে তো শুধু দশ ওভার বল করা নয়। আর বল করলেও সেরাটা দিতে পারতে হবে। এই ব্যাথা নিয়ে সেরাটা দেওয়া যাবে বলে মনে হয় না।’

রুবেল বলছিলেন, এই অবস্থায় খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা তার জন্য ভালো কিছু হতো না। দলের জন্যও ভালো হতো না, ‘খেলা শুরুর আর কয়েকটা দিন মাত্র বাকি আছে। আমি এখনও সেভাবে বোলিং করছি না। ফলে আমি কি রকম রিদমে আছি, তাও তো বুঝতে পারছি না। এই অবস্থায় খেলাটা ঠিক হতো না।’

রুবেল এই ব্যাথাটার ব্যাপারে কয়েক জন অভিজ্ঞ পেসারের সাথে আলাপও করেছেন। তার মনে হয়েছে, এ অবস্থায় ঝুকি নিলে সেটা চূড়ান্ত ক্ষতিকর কিছুও হতে পারে। তিনি বলছিলেন, ‘শফিউল এই ডিস্কের ব্যাথা নিয়ে খেললো। পরে কিন্তু ও খুব সাফার করছে। অনেক পেসারের এই ধরনের ডিস্কে ব্যাথা থেকে অনেক সমস্যা হয়েছে।’

সবচেয়ে বড় কথা, এই অবস্থায় খেললে রুবেলের ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকতে পারে। আর নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে এতো বড় ঝুকি তিনি নিতে চান না। রুবেল বলছিলেন, ‘আমার তো একটা ক্যারিয়ার আছে। ক্যারিয়ার নিয়ে ঝুঁকি হয়, এমন কিছু করা যাবে না। আমি দেবাশীষদাসহ সবার সাথেই আলাপ করেছি। আমার ক্যারিয়ার নিয়ে ঝুকি নেওয়ার পক্ষে কেউ না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link