বোথামের সেই বিদ্রূপ ভোলেননি শচীন

শচীনকে আউট করার পর বোলাররা বাঁধভাঙা উল্লাসে মাতবেন সেটিই স্বাভাবিক। মাঝে মাঝে সেই উদযাপন ছাড়িয়ে যেত মাত্রা। প্রতিপক্ষের বোলাররা শচীনকে আউটের পর নানান অঙ্গভঙ্গিতেও আসতেন আলোচনায়। ২৪ বছরে এমন অসংখ্য ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন শচীন।

সর্বকালের সেরা ব্যাটার কে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে নি:সন্দেহে প্রথমদিকেই আসবে শচীন রমেশ টেন্ডুলকারের নাম। শুধু পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিলে ৷ তো শচীনই সর্বকালের সেরা।

প্রায় ২৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। সেই সময়টায় শচীনের উইকেটই ছিল বোলারদের আরাধ্য। জেমস এন্ডারসন, গ্লেন ম্যাকগ্রা, ব্রেট লি রার বারংবার সেই মহামূল্যবান উইকেট স্বীকারের আনন্দে মেতেছেন।

শচীনকে আউট করার পর বোলাররা বাঁধভাঙা উল্লাসে মাতবেন সেটিই স্বাভাবিক। মাঝে মাঝে সেই উদযাপন ছাড়িয়ে যেত মাত্রা। প্রতিপক্ষের বোলাররা শচীনকে আউটের পর নানান অঙ্গভঙ্গিতেও আসতেন আলোচনায়।

২৪ বছরে এমন অসংখ্য ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন শচীন। সব ঘটনা শচীনের মনে থাকবে না সেটিই স্বাভাবিক। তবে কিছু কিছু বোলারের আচরণ এখনো মনে রেখেছেন শচীন। তার মধ্যে একটি ঘটনা আবার শচীনের ক্যারিয়ারের একদম শুরুর দিকের।

১৯৯২ সালে ভারতের হয়ে ইংল্যান্ড সফরে গেলেন ২০ বছরের তরুণ শচীন। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা শচীন ততদিনে নিজের নামের জানান দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

সেই সিরিজেই ম্যানচেস্টার টেস্টে সেঞ্চুরি করে ম্যাচ বাঁচিয়েছিলেন শচীন। তাই শচীন আর ইংল্যান্ডের একটা আপাত প্রতিদ্বন্দ্বিতা তো ছিলই। সেই সিরিজের কয়েক মাস বাদেই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে মাঠে গড়ায় ১৯৯২ বিশ্বকাপ। সেই বিশ্বকাপের প্রথম দিনেই মুখোমুখি ভারত-ইংল্যান্ড।

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর সেই বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নেয় ইংলিশরা। লড়াই করেও সেই ম্যাচে হারতে হয় ভারতকে। তবে শচীন এতদিন পরেও সেই ম্যাচ মনে রেখেছেন অন্য একটি ব্যক্তিগত কারণে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শচীন স্মৃতিচারণ করলেন সেই ম্যাচের এক ঘটনার যা তিনি তিন দশক পরেও মনে রেখেছেন। শচীন বলেন, ‘আমি ইয়ান বোথামের বলে আউট হয়েছিলাম। আমাকে আউট করার পর বোথামের প্রতিক্রিয়া আমার মোটেও ভালো লাগেনি।’

পার্থের ওয়াকায় সেই ম্যাচে ২৩৭ রান তাড়া করতে নেমে ভারতকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন শচীন। এক পর্যায়ে ভারতের স্কোর ছিল দুই উইকেটে ১১৯ রান। তখন ৩৫ রানে আউট হন শচীন।

ইয়ান বোথামের বলে লেগ সাইডে বলকে ঘুরিয়ে মারতে গেলে ব্যাটের কাণায় লেগে অ্যালেক্স স্টুয়ার্টের তালু-বন্দি হন শচীন। শচীনকে আউট করার সাথে সাথে বুনো উদযাপনে মেতে উঠেন বোথাম।

হাতের ইশারায় কিছু একটা বোঝাতে চান শচীনকে। শচীনকে আউটের পরই ম্যাচে ফিরে আসে ইংল্যান্ড এবং শেষ পর্যন্ত নয় রানে ম্যাচ জিতে নেয় তারা।

১৯৯২ বিশ্বকাপই ছিল শচীনের ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ। আট ম্যাচে ২৮৩ রান মোটেও শচীনের নামের সাথে মানানসই ছিল না। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের পাশাপাশি দলীয় পারফরম্যান্সের দিক থেকেও ভুলে যাবার মতই একটি বিশ্বকাপ ছিল শচীনের জন্য। তবে তাকে আউট করার পর বোথামের সেই অঙ্গভঙ্গি এত বছর পরেও ভুলতে পারেননি ‘মাস্টার ব্লাস্টার’।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...