১৯-এর শচীন ফিরলেন ২৪-এ !

ভারতীয় ক্রিকেটে আগমন ঘটলো নতুন এক শচীনের। নামের মাঝে অদ্ভুত মিল। আবার ১০ নাম্বার জার্সিও ফিরিয়ে আনলো শচীন টেন্ডুলকারের সোনালি স্মৃতি। যুব বিশ্বকাপে নজর কাড়ছেন এ এক অন্য শচীন। যার ব্যাটে ভর করেই ফাইনালে পা বাড়িয়েছে ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেমিতে প্রায় হারতেই বসেছিল ভারত। তবে দলের বিপর্যয়ে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মিডল অর্ডার ব্যাটার শচীন দাস। অধিনায়ক উদয় সাহারনের সাথে ১৭১ রানে তাঁর গড়া জুটিতেই প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ২ উইকেটের জয় পায় ভারত। আর তাতেই টানা পঞ্চমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে টিম ইন্ডিয়া।

মঙ্গলবার বেনোনির উইলোমোরে পার্কে দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ৩২ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। তবে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে আসা শচীন ধ্বংসস্তূপ থেকে রীতিমত দলকে উদ্ধার করেন।  ৯৬ বলে খেলেন ৯৫ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস। আর তাঁর ব্যাটেই শেষ মেশ গ্রান্ড ফাইনালে নাম লেখায় ভারত।

চলতি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভারতের টপ ও মিডল অর্ডার ভালো পারফর্ম করায় খুব বেশি ব্যাটিংয়ের সুযোগই পাননি শচীন দাস। সুপার সিক্স পর্বে নেপালের বিপক্ষে যদিও ১১৬ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন। এখন পর্যন্ত ৬ ইনিংসে ৭৩.৫০ গড়ে এ ব্যাটার করেছেন ২৯৪ রান। স্ট্রাইক রেট ১১৬.৬৬। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত সময় পার করা শচীন দাসকে কৌতূহলের জাল বিস্তৃত হতে শুরু করেছে এখন থেকেই।

মহারাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা শচীনের। বাবা সঞ্জয় দাস ছিলেন কাবাডি খেলোয়াড়। খেলেছেন ক্রিকেটও। মহারাষ্ট্র প্রিমিয়ার লিগে গত বছরও খেলেছেন কোলাপুর টাস্কার্সের হয়ে। সঞ্জয় দাসের ক্রিকেট আইডল ছিলেন সুনীল গাভাস্কার। তবে ছিলেন শচীন টেন্ডুলকারের ভক্ত। আর সেই কারণে নিজের ছেলের নামেও জুড়ে দেন শচীনের নাম।

শচীন দাসের ক্রিকেট অধ্যায় শুরু হয় ছোটবেলা থেকেই। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই সুযোগ পান রাজ্যদল মহারাষ্ট্রের বয়সভিত্তিক দলে। এরপর অনূর্ধ্ব-১৯ দলের নজরে চলে আসেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় সুযোগ পান অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলেও। মজার ব্যাপার হলো, শচীন টেন্ডুলকারের ১০ নাম্বার জার্সিটাই কাকতালীয় ভাবে পেয়ে যান শচীন দাস। যদিও ভারত জাতীয় দলে এই সুযোগটা আর নেই। কেননা, শচীনের সম্মানে তুলে রাখা হয়েছে আইকনিক ১০ নাম্বার জার্সি।

আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে মাঠে নামবে ভারত। চলতি আসরে নেপাল আর দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ ব্যতীত একটি ম্যাচেও ২০ বলের বেশি খেলার সুযোগ পাননি শচীন দাস। তবে পিঞ্চ হিটিং কিংবা সময়োপযোগী ইনিংস খেলার ক্ষেত্রে তরুণ এ ক্রিকেটার ঠিকই সক্ষমতার একটি প্রমাণ দিয়েছেন। আর তাঁর বাবা সঞ্জয় দাস তো তাঁকে সব সময় টিমম্যানই বানাতে চেয়েছেন। তাই বিশ্বকাপ জেতাটাই মূখ্য শচীনের কাছে। শচীন টেন্ডুলকার নিজেও একজন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার। জুনিয়র শচীনও নিশ্চয়ই ঠিক সেই পথেই হাঁটবেন।

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link