বাদ পড়াদের মিছিলে স্যামসন দৃষ্টিকটু

আর মাত্র অল্প ক’দিনের অপেক্ষা। অপেক্ষা যেকোন প্রহরই দীর্ঘ। তবে দিনশেষে ফলাফলটা সুমিষ্ট। অক্টোবরেই শুরু হতে চলেছে ক্রিকেটের আরও একটি মহারণ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ক্রিকেটের ক্ষুদ্র এই সংস্করণটি অতি দ্রুতই এবং বলা চলে খুব সহজেই জায়গা করে নিয়েছে মানুষের মনে। মারকাটারি ব্যাটিং আর চোখ ধাঁধানো বোলিং সবকিছুর মিশেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উত্তেজনার মাত্রাটা থাকে খানিক ভিন্ন।

সে উত্তেজনার মাত্রাটা যেন আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে দলগুলোর দৃষ্টিনন্দন সব জার্সি। সেই সাথে বিতর্কে ঠাসা ১৫ সদস্যের দল। এই যে যেমন ভারত দলের কথাই ধরা যাক। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে যেকোন টুর্নামেন্টে ভারত অলিখিত ফেভারিট। বিগত দুই দশকে ভারতের সাফল্যে তেমনটাই তো ইঙ্গিত করে। এবারও তাই বাড়তি নজর ভারতের দিকে। গেল বার গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়েছে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নদের। তারা ঠিক এবার কেমন দল নিয়ে যাবে তাসমান পারে।

আর সেখান থেকেই মূলত বিতর্কের ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। দল থেকে বাদ পড়ে যাওয়া খেলোয়াড়দের নিয়েই মূলত হচ্ছে সকল আলোচনা। কেননা ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মত দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড়দের কেউ কেউ যোগ্য দাবিদার। তাদেরই একজন সাঞ্জু স্যামসন। ভারত দলের আশেপাশে বেশ লম্বা সময় ধরেই রয়েছেন স্যামসন। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানো ছাড়াও, ‘এ’ দলের সাথে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। সবখানেই পারফরম করবার চেষ্টা করেছেন।

এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজস্থান রয়্যালসকে। ফাইনাল অবধি নিয়েও গিয়েছিলেন স্যামসন। ব্যাট হাতেও সমানতালে পারফরম করেছেন তিনি। তবুও অবহেলিতদের তালিকায় তাঁর নামটিও উঠে যাওয়াটা বেশ কষ্টকর, অন্ততপক্ষে তাঁর জন্যে। ১৫ সদস্যের দলে নাম আসেনি স্যামসনের। এমনকি স্ট্যান্ড-বাই থাকা খেলোয়াড়দের তালিকাতেও নেই স্যাঞ্জু স্যামসন। প্রশ্ন জাগছে তিনি কি তবে বাদ পড়ে যেতে পারেন জাতীয় দলের পরিকল্পনা থেকে? তবে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির তেমনটা মানতে নারাজ।

স্যামসনের প্রসঙ্গে সৌরভ বলেন, ‘স্যাঞ্জু ভাল করছে। সে ভারতের হয়েও খেলছে কিন্তু অল্পের জন্যে বিশ্বকাপটা মিস করে গেছে। সে ভারত জাতীয় দলের পরিকল্পনাতে রয়েছে। সে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে দলে রয়েছে। তাছাড়া আইপিএলেও সে ভাল খেলছে এবং সেখানে সে অধিনায়ক।’ ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তাঁর স্ট্রাইকরেট ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ- ১৫৮.৪০। তাঁর উপরে রয়েছেন কেবকল সুরিয়াকুমার যাদব।

এমন একজন টপ অর্ডার ব্যাটারকে ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাওয়াটা নিশ্চয়ই প্রশ্নবাণ ছুড়ে দেওয়ার জন্যে যথেষ্ট। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ভারত এ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে হোয়াইট ওয়াশ করিয়েছেন নিউজিল্যান্ড এ দলকে। শেষ ম্যাচে দুর্দান্ত এক শতকও হাকিয়েছিলেন। ফর্মে তিনি ছিলেন। ফর্মহীনতা কিংবা ইনজুরির অজুহাতে তাঁকে বাদ দেওয়ার তেমন কোন সুযোগই নেই। তবুও স্যামসনকে তাঁর ড্রয়িং রুমের সোফায় বসেই বিশ্বকাপ উপভোগ করতে হবে।

তবে এখানেই অবশ্য স্যাঞ্জু স্যামসন দমে যাবেন না। সামনেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। সেই বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। শুধু তাঁকে থাকতে হবে ইনজুরিমুক্ত। আর নিজের কাজটা করে যেতে হবে নিষ্ঠার সাথে। তিনি অবশ্য ইতোমধ্যেই এই বাদ পড়াকে একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছেন। নতুন করে নিজেকে গড়ে তোলবার কাজ তিনি শুরু করে দিয়েছেন এখন থেকেই। হয়ত পরিশ্রমের সফলতা একদিন ধরা দেবে ২৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের হাতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link