মুমিনুল আজ একলা পথিক

শুধু ওপার বাংলায় নয়; বরং এপার বাংলায়ও আমাদের একজন সৌরভ আছেন। যাকে একসময় তকমা দেয়া হয়েছিল " বাংলার ব্র্যাডম্যান হিসেবে।

নিজের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে পুরো বিশ্বজুড়ে সৌরভ ছড়িয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। ক্রিকেট মাঠে যার তেজ দেখেছে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব, যার ব্যাটিং শৈলীর মাধ্যমে ভারতীয় দল বিভিন্ন সময় ছুটিয়েছে নিজেদের জয়রথ। তবে, শুধু ওপার বাংলায় নয়; বরং এপার বাংলায়ও আমাদের একজন সৌরভ আছেন। যাকে একসময় তকমা দেয়া হয়েছিল ” বাংলার ব্র্যাডম্যান হিসেবে।

যিনি এক সময় সাদা জার্সি গায়ে বাংলাদেশ দলের হয়ে ছুটিয়েছিলেন রানের ফোয়ারা। একটা সময় ছিলেন দেশের ক্রিকেট প্রেমীদের চোখের মনি। কারণ, তখন ব্যাট হাতে তিনি ছিলেন ভীষণ ধারাবাহিক একজন ব্যাটার। বলছি, বাংলাদেশ দলের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভের কথা।

তবে, বর্তমানে ক্রিকেটে তেমন একটা ভালো সময় যাচ্ছে না মুমিনুলের। ব্যাট হাতে বেশ ফিকে থাকার কারণে কাধ থেকে চলে গেছে অধিনায়কত্বের দায়িত্বটাও। ফর্মহীনতার কারণে একাদশে সুযোগ পাননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলা সর্বশেষ টেস্টেও। একটা সময় বাংলাদেশের টেস্ট দলের অধিনায়ক হওয়ার সুবাদে যেই মুমিনুলের চারপাশে থাকত মানুষের আনাগোনা, সেই মুমিনুলই এখন নেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের কোন আলোচনায়। তাইতো, অনেকটা নীরবেই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন এই বাহাতি ব্যাটার।

 

নভেম্বরেই, টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ খেলতে ভারত আসবে বাংলাদেশে। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও একাদশে সুযোগ পাবেন কিনা তাও নিশ্চিত নয়। অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া এনসিএলকে সামনে ক্রিকেটারদের পদচারণায় বেশ সরব মিরপুরের একাডেমি মাঠ। তবে, সেখানেও অন্যদের তুলনায় অনেকটা নীরবেই অনুশীলন করতে দেখা গেছে মুমিনুলকে। ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন পায়ে কোনো প্রকার গার্ড লাগানো ছাড়াই। বারবার প্র্যাক্টিস করেছেন নিজের সবচেয়ে প্রিয় ‘কাট শট’।

একটা সময় এই কাট শটই ছিলো মুমিনুলের সবচেয়ে প্রিয় শট। তবে, বেশ কিছুদিনই এই কাট শট খেলার কারণে বেশ কয়েকবার নিজের উইকেট হারিয়েছেন এই ব্যাটার। তাইতো, আজ অনুশীলনের সময় এই কাট শটকে নিয়ে একটু বেশীই সিরিয়াস ছিলেন তিনি। তবে, এদিন বেশ কিছুক্ষণ নিজের বোলিংও ঝালিয়ে নিয়েছেন তিনি। এরপর , নিজের ফিটনেস ধরে রাখার জন্য করেছেন রানিং।

ইংরেজিতে একটি কথা রয়েছে, ‘ওয়ান্স অ্যা চ্যাম্পিয়ন, অলওয়েস অ্যা চ্যাম্পিয়ন’। তাইতো, টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরে যাওয়ার পরও নিজের নিয়মিত রুটিন ঠিকই ফলো করে যাচ্ছেন মুমিনুল। তবে, তিনি অনেকটাই নীরবে করে যাচ্ছেন তার এই কাজ। পরাজিতরা হারিয়ে যায়, কিন্তু জয়ীরা বারবার ফিরে আসে। হয়ত, নিজেকে আবারো একজন জয়ী হিসেবে সকলের মাঝে প্রমাণ করার জন্যই তিনি লেগে পড়েছেন নিজেকে ফিরে পাওয়ার যুদ্ধে।

এ বছরের শুরুতে মাউন্ট মঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ফিফটির পরে ব্যাট একবারও হাসেনি মুমিনুলের। সাদা জার্সি গায়ে বাংলাদেশের হয়ে খেলা সর্বশেষ ১২ ইনিংসে নেই একটিও ফিফটি। তাইতো, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ পাননি একাদশেও।

ব্যাট হাতে মুমিনুলের এই রান খরা কাটাতে আসন্ন এনসিএলই হতে পারে তার জন্য আদর্শ মঞ্চ। মুমিনুল রানে ফিরবেন,আবারো  মাঠে উপস্থিত দর্শকদের সামনে রাজার মতো ব্যাট উচিয়ে ধরবেন এই যেনো দেশের সকল ক্রিকেট প্রেমীর প্রত্যাশা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...