স্লোয়ার ডেলিভারি, পিচ করার পর সরাসরি এগিয়ছে স্ট্যাম্পের দিকে – সরফরাজ খান কিছুই বুঝলেন না। যখন বোল্ড হয়েছেন তখন বিভ্রান্তকর একটা অনুভূতি ফুটে উঠেছিল তাঁর মুখে। আর তাঁকে বোকা বানানোর মধ্য দিয়ে মিশেল স্যান্টনারের পূর্ণ হয়েছে ফাইফার, ঐতিহাসিক এক সিরিজ জয়ের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে নিউজিল্যান্ডের জন্য।
এর আগের ইনিংসে রবীন্দ্র জাদেজাকে কুইক ডেলিভারিতে পরাস্ত করেছিলেন এই স্পিনার। ব্যাট নামিয়ে আনার আগেই প্লাম্ব এলবিডব্লু হয়েছেন জাদেজা; টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম ফাইফারের স্বাদ তখনই পেয়েছিলেন তিনি।
জাদেজা কিংবা সরফরাজকে যেভাবে পরাস্ত করেছেন স্যান্টনার, সেভাবেই পুরো ম্যাচ জুড়ে ভারতীয় ব্যাটারদের নাকানিচুবানি খাইয়েছেন। পেস আর ট্র্যাজেকটরির বৈচিত্র্যে তিনি ভ্রমের সৃষ্টি করেছেন। পুরো ম্যাচ মিলিয়ে তেরো উইকেট যোগ হয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ম্যাচ শুরুর আগে যেখানে তাঁর পাঁচ উইকেট প্রাপ্তির সংখ্যা ছিল শূণ্য, সেখানে এখন সংখ্যাটা দুইয়ে।
অথচ শ্রীলঙ্কা সিরিজেই এই বাঁ-হাতির ছিল বেহাল দশা, লঙ্কান স্পিনাররা যখন ছড়ি ঘুরাচ্ছেন দেদারসে তখন তিনি হাঁসফাঁস করেছেন। প্রথম ম্যাচে পেয়েছেন মোটে এক উইকেট, দ্বিতীয় ম্যাচে তাও জোটেনি কপালে। সেজন্যই ভারতের প্রথম ম্যাচে দলেও জায়গা মেলেনি তাঁর।
যদিও প্রত্যাবর্তনে রাজসিক একটা গল্প লিখেছেন এই কিউই তারকা। একা হাতে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন ভারতের বিশ্ব সেরা ব্যাটিং লাইন আপ। শুরুটা ছিল শুভমান গিলকে দিয়ে, প্লাম্ব এলবিডব্লুর সিদ্ধান্ত দিতে পল রেইফেলের এক সেকেন্ডও লাগেনি। এরপর বিরাট কোহলি তো সরাসরি বোল্ড হয়েছেন তাঁর ডেলিভারিতে। দ্বিতীয় ইনিংসেও কোহলিকে আউট করেছেন, প্রথম বাঁ-হাতি স্পিনার হিসেবে কোহলিকে একই ম্যাচে দুইবার আউটের রেকর্ড গড়লেন তিনি।
প্রথম ইনিংসে ৫৩/৭ এর মত অতিমানবীয় ফিগার নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন এই বাঁ-হাতি, পরের ইনিংসে এক উইকেট কম পেয়েছেন ঠিকই তবে ফলাফল একই। তাঁর সামনে নিরুপায় হয়ে গিয়েছিল স্বাগতিক ব্যাটাররা। তিনি কতটা বিধ্বংসী ছিলেন এতেই স্পষ্ট হয়, বলতে গেলে ভারতের দম্ভ তাঁর বাম হাতের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছিল।