বাইশ গজের ময়দানে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের কথা কার কাছেই বা অজানা! রাজনৈতিক বৈরিতায় এখন সেই দ্বৈরথের মাত্রা কিছুটা কমে গেলেও নব্বই দশকে এর চিত্রটা ছিল কিন্তু অন্যরকম। তখন মাঝে মধ্যেই এ দুই প্রতিবেশী দেশ বাইশ গজের লড়াইয়ে মুখোমুখি হতো। দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে এক বিন্দু ছাড় না দেওয়ার একটা প্রবল তাড়না থাকতো। একেকটা ম্যাচ হয়ে উঠতো মর্যাদার লড়াই।
নব্বই দশকের সে সব লড়াই এখন অতীত। যদিও সেই পুরনো রেশেই ভারত-পাকিস্তান লড়াই এখনও ভিন্ন মাত্রা তৈরি করে। তবে শচীন, দ্রাবিড়দের দুর্ভেদ্য দেয়ালে সাকলাইন মুশতাকের ধাক্কা, শোয়েব-শচীন কিংবা আজহারউদ্দিন-ওয়াকার ইউনুস দ্বৈরথ – এমন সব মুহূর্ত যেন একেকটা সোনালি স্মৃতি। সম্প্রতি সেই সোনালি স্মৃতিই টেনে এনেছেন সাকলাইন মুশতাক।
সে সময়ের ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ে ভারতকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছিলেন এই সাকলাইন মুশতাক। ভারতের বিপক্ষে ৩৬ ম্যাচে ৫৭ উইকেট নিয়েছিলেন এ অফস্পিনার। সে সময় মুশতাকের বল খেলতে হিমশিম খেয়েছেন ভারতের প্রায় সব ব্যাটার। বাদ যাননি শচীন, দ্রাবিড়রাও।
তবে মুশতাকের সামনে সবচেয়ে অসহায় বোধহয় ছিলেন অজয় জাদেজা। ক্যারিয়ারে ৬ বার সাকলাইন মুশতাকের বলে আউট হয়েছেন। তার মধ্যে ১৯৯৭ সালের এক সিরিজে টানা তিন ম্যাচেই মুশতাকের বলে বোল্ড হয়েছিলেন জাদেজা। এমন একটা অবস্থা হয়েছিল যে, সাকলাইনের ওভার আসতেই নাকি ক্রিজে থাকা জাদেজার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যেত!
সম্প্রতি এক পডকাস্টে সাকলাইন মুশতাক সেই গল্পই শুনিয়েছেন। সেখানে তিনি মজা করে বলেন, ‘অজয় জাদেজা খুব সম্ভবত আমার একটি ওভারও পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি। আমি বলে আসলেই ও আউট হয়ে যেত। ক্যারিয়ারে আমার সামনে কতবার যে ওর ফ্যাকাশে মুখ দেখেছি তার ইয়ত্তা নেই।’
সাকলাইন মুশতাক তাঁর ক্যারিয়ারে শচীন দ্রাবিড়দেরও বেশ ভুগিয়েছেন। রাহুল দ্রাবিড়কে তিনবার আর শচীনকে ওয়ানডে, টেস্ট মিলিয়ে ৫ বার আউট করেছেন তিনি। তবে মুশতাকের দৃষ্টিতে, ঐ সময়ে এ দুজন ব্যাটারকেই আউট করা তাঁর জন্য ছিল বেশ কষ্টসাধ্য।
এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘ইঁদুর শিকার করা আর বাঘ শিকার করা, এক নয়। রাহুল আর শচীন দুর্দান্ত ব্যাটার ছিলেন। ওদেরকে আমি আউট করেছি। তবে তার জন্য আমাকে ওভারের পর ওভার বল করে যেতে হয়েছে। তাদেরকে আউট করতে বেশ ঘাম ঝরাতে হতো আমাকে। এমনও হয়েছে আমি টানা ২০ ওভার বল করে গিয়েছি। কিন্তু আমার কোনো কৌশলই কাজে দেয়নি। ওরা আসলেই দুর্দান্ত ব্যাটার ছিল।’