তাকে নিয়ে যত বেশি আলোচনা হওয়া উচিৎ, তার চেয়ে বেশি হয় ট্রল। অধিনায়ক হিসেবে তিনি পাকিস্তানের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা। আসলে চাইলে, সেরাও বলা যায় দিব্যি। অন্তত, ইমরান খানের চেয়ে তাঁর অর্জন কোনো অংশেই কম নয়। তিনি ইমরানের পর প্রথম পাকিস্তানি অধিনায়ক হিসেবে ৫০ ওভারের কোনো আইসিসি ইভেন্টের শিরোপা তুলে দেন পাকিস্তানের হাতে।
তার নেতৃত্বেই প্রথমবারের মতো আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান, ইংল্যান্ডের মাটিতে ২০১৭ সালে। ইমরান খানের চেয়ে তিনি এগিয়ে আছেন আরেকটা জায়গায়, পাকিস্তানকে ২০০৬ সালে আরেকটি আইসিসি ইভেন্টের শিরোপাও জেতান তিনি। সেবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তান যুব ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে ভারতকে হারিয়ে শুধু এক শিরোপাতেই থেমে থাকেনি তার নেতৃত্বের সাফল্য যাত্রা। আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে পাকিস্তানকে নিয়ে গিয়েছিলেন শীর্ষে। একই সাথে অধিনায়ক হিসেবে টানা ১০ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার অনবদ্য কীর্তিও তাঁর।
বলছি, পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের কথা৷ সময়ের সাথে ছন্দপতনে পাকিস্তান দলে হারিয়েছেন নিজের জায়গা। কিন্তু ইমরান খান, ইউনুস খান- এ দুই গ্রেটের পাশে যে তার নাম লেখা হয়ে গিয়েছে বছর পাঁচ আগেই। ১৯৯২ বিশ্বকাপ, ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরে যে তার নেতৃত্বের দলটাই ২০১৭ সালে পুরো পাকিস্তানকে শিরোপা জেতার উচ্ছ্বাসে মাতিয়েছিল। এরই মধ্য দিয়ে তখনকার সময়ে সবগুলো আইসিসি ইভেন্ট জয়ের কোটা পূরণ করেছিল পাকিস্তান।
পাকিস্তানের বর্তমান দলটার তারুণ্য দীপ্তিতে সরফরাজ আহমেদ দল থেকে ব্রাত্য হয়েছেন তা প্রায় এক বছর গড়াতে চললো। দলে এখন আর তাঁর সুযোগ মেলে না বললেই চলে। সামনে হয়তো আর তেমন সুযোগও মিলবে না দলে।
তবে, পাকিস্তান সরকার এবার ২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিজয়ী এই অধিনায়ককে সম্মান জানালো ভিন্নভাবে। সরকারি উদ্যোগে পাকিস্তানের স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীর বইয়ে মিলল সরফরাজ আহমেদের জীবনী। উর্দুতে লেখা এ জীবনী পাকিস্তানের প্রাথমিক শিক্ষা কারিকুলামের অধীনে থাকা চতুর্থ গ্রেডের সিলেবাসে যুক্ত করা হয়েছে।
নিজের জীবনী স্কুল পড়ুয়া বাচ্চাদের বইয়ের পাতায় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন সরফরাজ আহমেদ নিজেও। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘দারুণ অনুভূতি। ভেবেই রোমাঞ্চিত হচ্ছি যে, আমার বাচ্চারা তাদের বাবার কথা তাদেরই বাবা, মা, বন্ধু এবং শিক্ষকদের সাথে পড়বে। আমি সত্যিই গর্বিত। আলহামদুলিল্লাহ।’