ধারাবাহিকতা শব্দের সমার্থক সাদিকুল্লাহ অটল – বাংলা ব্যাকরণ টেনে এনে হাসির কোন কারণ নেই, ক্রিকেটের টুকটাক খোঁজ খবর রাখলেই বুঝে ফেলা যায় কথাটার মাহাত্ম্য। সদ্য সমাপ্ত ইমার্জিং এশিয়া কাপে ‘ধারাবাহিকতা’কে রীতিমতো স্বর্গীয় রূপ দিয়েছেন তিনি; টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ প্রতিটা ম্যাচে হাঁকিয়েছেন হাফ-সেঞ্চুরি, খেলেছেন ম্যাচ জেতানো ইনিংস।
ফাইনালের লো স্কোরিং দ্বৈরথেও এই ওপেনার পথ দেখিয়েছেন আফগানিস্তানকে, ৫৫ বলে ৫৫ রানের ধৈর্যশীল ইনিংসে গেম সেন্সের প্রমাণ দিয়েছেন। ১৩৪ রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কার বোলারদের একেবারে ঠান্ডা মাথায় মোকাবিলা করেছেন তিনি, একপ্রান্ত আগলে শিরোপা মঞ্চে পৌঁছে গিয়েছেন। তিন চার ও এক ছয়ে সাজানো তাঁর ইনিংসটিতে ভর করেই এগারো বল এবং আট উইকেট হাতে রেখে জয় পেয়েছে আফগানরা।
অবশ্য ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিং করেছে ভেবে ভাববেন না এই তরুণ বুঝি হাই স্কোরিং ম্যাচে মানিয়ে নিতে পারবে না। পুরো টুর্নামেন্টে তাঁর ইনিংসগুলো দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ব্যাপারটা, যখন যে রকম দরকার ঠিক সে রকম ব্যাটিং করতে জানেন তিনি।
শ্রীলঙ্কা এ দলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই সাদিকুল্লাহ খেলেছিলেন ৪৬ বলে ৮৩ রানের ঝড়ো ইনিংস। তাঁর পারফরম্যান্সের সুবাদে বাকিদের ব্যর্থতা সত্ত্বেও জয় পেয়েছিল আফগানিস্তান এ দল। বাংলাদেশ এ দলের বিপক্ষেও চিত্রটা একই, বাকি ব্যাটাররা কেউ যেখানে বিশ রানও করতে পারেনি সেখানে তিনি একাই করেছেন ৫৫ বলে ৯৫ রান। আর তাতেই পাঁচ বল আগেই হেরে গিয়েছে টাইগাররা।
হংকংয়ের বিপক্ষেও এই বাঁ-হাতি হাফ-সেঞ্চুরি করেছিলেন, যদিও সেদিন অবিশ্বাস্যের জন্ম দিয়ে ঐতিহাসিক এক জয় পেয়েছিল হংকং। যদিও সেমিফাইনালে এমন কিছু ঘটতে দেননি তিনি, শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে প্রায় ১৬০ স্ট্রাইক রেটে ৮৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন। আর ফাইনালের গল্প তো আগেই বলা শেষ।
সবমিলিয়ে একশোর বেশি গড়ে টুর্নামেন্টে ৩১৩ রান করেছেন আফগান তারকা, সেটাও আবার ১৬০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে! এমন একজন প্রতিভাবানের আগমন শুধু আফগানিস্তানের জন্য, পুরো ক্রিকেট বিশ্বের জন্যই রোমাঞ্চের ব্যাপার।