‘১৮ বছরে কখনও স্লিপে দাঁড়াইলাম না ভাই, আর আজকে!’

বিকেএসপির তিন ও চার নাম্বার মাঠে একই সাথে চলছে বিসিএলের দুটি ম্যাচ। ভারত সিরিজের আগে ওয়ানডে ফরম্যাটের এই টুর্নামেন্টে কড়া নজর জাতীয় নির্বাচকদের। তবে সমস্যা হল একসাথে দুই ম্যাচে নজর রাখবেন কী করে। সেজন্যই নিজেদের কক্ষ ছেড়ে রাস্তায় এসে পড়লেন দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও আব্দুর রাজ্জাক।

সাভার বিকেএসপির তিন আর চার নাম্বার মাঠটা একেবারে গাঁ ঘেষে। ধরুন চার নাম্বার মাঠে ম্যাচ খেলতে থাকা মিরাজ, নাসুমরা মাঝেমাঝেই একটু উঁকি দিয়ে দেখছেন তিন নাম্বার মাঠে খেলার কী অবস্থা। পেসার শরিফুল ইসলাম ও সুমন খান তো এক ফাঁকে এসে বেশ কিছুক্ষণ ইস্ট জোন আর নর্থ জোনের ম্যাচ দেখলেন।

আসলে বিকেএসপির এই দুইটা মাঠকে আলাদা করেছে একটা রাস্তা। তিন ও চার নাম্বার মাঠের মাঝ দিয়ে গিয়েছে ছোট্ট একটা পিচ ঢালা সড়ক। আর সেই রাস্তাটায় বসলেই একইসাথে নজর রাখা যায় দুই মাঠেই। নিজেদের দায়িত্বটা পালন করতে এই কাজটাই করলেন নির্বাচকরা। আব্দুর রাজ্জাক ও মিনহাজুল আবেদীন নান্নু চলে পুরো ম্যাচই দেখিয়েছেন এই রাস্তাটায় দাঁড়িয়ে। একবার ডানদিকের চার নাম্বার মাঠে দেখছেন তো আরেকবার বাঁদিকের তিন নাম্বার মাঠে।

ওদিকে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ জিতে খানিকটা ফুরফুরে মেজাজেই ছিল ইস্ট জোন। আর ফাইন লেগে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করছিলেন দলটার ওপেনার তামিম ইকবাল। তিনিও ছিলেন বেশ ফুরফুরে মেজাজেই। বাউন্ডারির পাশে দাঁড়ানো সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাচ্ছিলেন বিপিএলের খোঁজ খবর।

আবার পাশের রাস্তায় দাঁড়ানো নির্বাচকদের সাথেও গল্প করছিলেন সুযোগ পেলেই। এক পর্যায়ে তামিমকে খানিকটা খোঁচাই দিলেন নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক। মজা করেই বললেন, ‘কী অধিনায়ক, তুমি ফাইন লেগে কেন? স্লিপে দাঁড়াও।’ তামিমও উত্তর দিয়েছেন হেসেই, ‘১৮ বছরে কখনো স্লিপে দাঁড়াইলাম না ভাই, আর আজকে।’

সবমিলিয়ে শীতের সকালের আমেজটা টের পাওয়া যাচ্ছিল সাভারে। তবে বেলা গড়ালে নিজের ফুরফুরে মেজাজ আর ধরে রাখতে পারেননি তামিম ইকবাল। ইস্ট জোনের হয়ে ওপেন করতে নামলে তাঁর আউটের সিদ্ধান্ত নিয়েই তৈরি হয় হট্টগোল। রিপন মন্ডলের বাউন্সারটা তামিমের গাঁ ঘেষে বের হয়ে যায়। তবে ব্যাট আর বলের মধ্যে একটা বিরাট ফাঁকা ছিল বলেই খালি চোখে মনে হচ্ছিল। তবুও আম্পায়ার আঙুলের ইশারায় তামিমকে আউট ঘোষণা করেন।

আর এতেই ক্ষেপে যান বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। মাঠে দাঁড়িয়েই আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। এমনকি মাঠেই আম্পায়রকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি পাগল নাকি?’ এরপর ম্যাচ রেফারির রুমে গিয়েও প্রতিবাদ জানিয়ে আসেন তামিম। তবে আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্ত কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না এই ব্যাটার।

ফলে পাঁচ বলে মাত্র ৭ রান করেই নিজের ইনিংস শেষ করতে হয় তামিমকে। এছাড়া আগের ম্যাচে তাঁর দল জিতলেও নিজে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। সেদিন মাত্র ১৮ রান করেই ফিরে গিয়েছিলেন। সেজন্যই ভারত সিরিজের আগে হয়তো একটা বড় ইনিংস খেলতে মরিয়া ছিলেন তামিম। তবে আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে সেটা হয়ে উঠলো না তামিমের। একারণেই বুঝি আম্পায়ারের উপর ক্ষোভটা একটু বেশি ছিল।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link