শিকারের নেশায় শাহীনের চোখ বিশ্বকাপে

২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল। শাহীন শাহ আফ্রিদি চোট নিয়ে মাঠ থেকে উঠে গেলেন। তখনও শাহীনের ১১টি বল করা বাকি। সেই ১১ বলে বদলে যেতে পারত অনেক কিছু। সেই ১১ বল পাকিস্তানকে এনে দিতে পারত শিরোপা। সেদিন দুর্ভাগা শাহীন সাইড বেঞ্চে বসে দেখেছিলেন শিরোপা থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাওয়া। নিদারুণ ব্যথা পুষে তিনি যেন ছিলেন অপেক্ষায়।

সেই অপেক্ষা প্রায় শেষের দিকে। দরজায় এসে গেছে আরও একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। নবম আসরে  নিশ্চিতরূপেই পাকিস্তান শিরোপা নিজেদের করে নিতে চাইবে। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে হবে শাহীন শাহ আফ্রিদিকে। প্রতিপক্ষকে দুমড়ে-মুচড়ে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সেই দায়িত্ব পালনের জন্য যে শাহীন প্রস্তুত, সে প্রমাণ দিয়েছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নেমেছে পাকিস্তান। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির জল ভাসিয়ে নিয়ে গেছে পরিত্যাক্ত নামক নদে। দ্বিতীয় ম্যাচে বল হাতে পেয়েই শাহীন শাহ যেন বনে গেলেন বিশালদেহী এক তোপ।

তার ছোড়া এক একটি বল বনে গেল আগুনের গোলা। সেই গোলায় ভস্ম হয়েছেন তিন ইংলিশ ব্যাটার। স্লগ ওভারের ঠিক আগেভাগে তুলে নেন জনি বেয়ারস্টোর উইকেট। আগ্রাসী এই ব্যাটার টিকে গেলে রান যে দু’শোর গণ্ডি ছাড়াত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

এরপর ডেথ ওভারে মঈন আলীকে আউট করে ইংল্যান্ডের রানের চাকাকে দ্রুতগামী হতে দেননি। এরপর অবশ্য ক্রিস জর্ডানের উইকেটও তুলে নেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। তাতে করে শিকারি শাহীন যে প্রস্তুত আছেন বিশ্বকাপের জন্য তা প্রতিফলিত হচ্ছে স্পষ্টভাবে।

এদিন শাহীন ৯ ইকোনমি রেটে ৩৬ রান দিয়েছেন। উইকেট শিকারি বোলারদের রান খরচার বিষয়টি চিরায়ত নিয়ম। সেদিক থেকে শাহীনকে দোষারোপ করবার তেমন কোন উপায় নেই। সেদিক বিবেচনায় শাহীন বেশ ভাল বলই করেছেন তা বলা চলে। তার ছোড়া ১০ বলেই যে কোন রান নিতে পারেনি প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা।

পরিশেষে বলাই যায়, শাহীন রয়েছেন সঠিক ট্র্যাকে। উইকেট শিকারের কাজটা নিয়মিতভাবেই করে যাচ্ছেন তিনি। সেটাই তার কাছ থেকে প্রত্যাশিত। ২০২২ বিশ্বকাপের ক্ষত নিশ্চয়ই এবার মুছে ফেলতে চাইবেন শাহীন। পাকিস্তানকে দিতে চাইবেন শিরোপার স্বাদ। শিরোপার অপেক্ষা যে হয়েছে সুদীর্ঘ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link