আফ্রিদির ব্যর্থতার নেপথ্যে…

লোহা যেমন দীর্ঘদিন পড়ে থাকলে মরিচা ধরে যায়, ফর্মে থাকা একজন বোলারের বেলায়ও কিন্তু একই কথা খাটে। শাহীন শাহ্‌ আফ্রিদির কথাই ধরা যাক। ইনজুরিতে পড়ার আগে কি দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন পাকিস্তানি এই ফাস্ট বোলার। কিন্তু গত আগস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে চোট পেয়েছিলেন।

সেই চোটে বাইশ গজ থেকে ছিটকে গিয়েছেন প্রায় তিন মাসের জন্য। প্রত্যাবর্তন ঘটালেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২২ এর আসরে। কিন্তু তিনি ফিরে এলেও, তাঁর সেই দুর্দান্ত ফর্ম যেন কোথায় হারিয়ে ফেলেছেন। কিংবা মরিচা ধরে গেছে আফ্রিদির বোলিংয়েও।

এককালে প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটারদের দু;স্বপ্ন বলে বিবেচিত আফ্রিদি, এইবারের আসরে স্থিমিত হয়ে গিয়েছেন। আফ্রিদির ব্যক্তিগত পারফর্মেন্স তাঁর দলের অবস্থার মতোই করুণ। দুটোরই বেশ নড়বড়ে অবস্থা। অথচ এই বিশ্বকাপে দলের সবচেয়ে বড় বোলিং অস্ত্র হওয়ার কথা ছিল আফ্রিদির।

অথচ সেই তিনিই কিনা এবারের আসরে পরপর দুই ম্যাচ উইকেটশূন্য থেকে শেষ ম্যাচে একটিমাত্র উইকেট শিকার করতে সক্ষম হয়েছেন। আফ্রিদির এমন পারফর্মেন্স হতাশ করেছে পাকিস্তান ভক্তদের। সাবেক ক্রিকেটাররা তো আফ্রিদির ফিটনেস নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

সুপার টুয়েলভে এখন অবধি পাকিস্তান দলটি তিনটি ম্যাচ খেলেছে। প্রথম প্রতিপক্ষ ভারতের বিপক্ষে আফ্রিদি ৪ ওভার বল করে ৩৪ রান দিয়েও কোন উইকেট পাননি, দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও ছিলেন উইকেট শূন্য। তৃতিয় ম্যাচে এসে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে একটি উইকেট পেয়ে উইকেটের খাতা খুলতে পেরেছেন।

নিজের এমন অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের আফ্রিদি বলেন, ‘তিন মাস পর এমন ইনজুরি থেকে ফিরে আসা সহজ নয়। আমি আমার শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি মনে করি আমার গতি আগেও একই ছিল। গড় গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৩৫-১৪০ কিমি। আমি সম্পূর্ণ ফিটনেস ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছি।’

শাহীন আফ্রিদিকে ইনজুরির পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার জন্য তিনটি মাস ইংল্যান্ডে কাটাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে বাইশ বছর বয়সী এই পেসার বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা যেন এই আঘাতের মধ্য দিয়ে কাউকে না নেন। তবে যারা এই অভিজ্ঞতার মধ্য দীয়ে গিয়েছেন তাঁরা অবশ্যই জানেন এটি কতটা কঠিন। আমি ইংল্যান্ডে একা ছিলাম, দুইতিন মাস একাই লড়াই করেছি। প্রথম দুই মাস আমি ঠিকমতো হাঁটাহাঁটিও করিনি কারণ তাতে ফোলা বাড়বে।’

আফ্রিদির জন্য সেরা উঠার জার্নিটা সহজ ছিল না। আবার এতো এতো আশা-ভরসা কাঁধে নিয়ে মাঠে ফিরে আসা তাঁর চেয়েও কঠিন ছিল। ফিরে যখন এসেছেন, শীঘ্রই ফর্মে ফেরার আশা করছেন এই পেসার। ২০২১ সালে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স দিয়ে আইসিসি ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হওয়া এই ক্রিকেটার, বাকি ম্যাচগুলোতে নিজের সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটা খারাপ বছরকে একটা ভালো বছরে পরিণত করতে আসলেই পারেন কিনা, সেটাই আপাতত দেখার পালা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link