২০১৯ সাল, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলেছিলেন সাকিব আল হাসান। দলের সাথে নিয়মিত অনুশীলনের পাশাপাশি নিজেকে আরো শানিত করতে সে সময় তিনি ভারতে উড়িয়ে নিয়ে যান গুরু মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে। বাড়তি সাধনার ফলও পেয়েছিলেন হাতে নাতে। সে বছরের বিশ্বকাপে সাকিবের রুদ্র মূর্তি দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব।
আরো একবার দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ, আরো একবার পুনরাবৃত্তি ঘটলো সেই ঘটনার। ২০২৩ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন সাকিব আল হাসান। তবে এবার খানিকটা বদল এসেছে; আইপিএলে নয় এলপিএলে খেলা অবস্থায় দেশ থেকে ফিটনেস ট্রেইনার দেবাশীষ ঘোষকে শ্রীলঙ্কায় নিয়ে এসেছেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। উদ্দেশ্য পরিষ্কার, শতভাগ ফিট হয়েই নামতে চান ভারতের মাটিতে।
আপাতত গল টাইটান্সের হয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। কানাডার টি-টোয়েন্টি লিগে মন্ট্রিয়েল টাইগার্সের হয়ে খেলার পরে শ্রীলঙ্কায় চলে এসেছেন তিনি। আসন্ন এশিয়া কাপের বড় একটা অংশ অনুষ্ঠিত হবে এই দেশেই, তাই তো এলপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা কাজে দিবে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টে।
এতটুকুতেই থামতে চান না সাকিব আল হাসান; কমতি রাখতে চান না কোন দিক দিয়েই। বিশেষ করে ফিটনেস ইস্যুতে বরাবরই সচেতন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, তাই তো এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে নিজের ফিটনেস আরো উন্নত করতে চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।
আর সেজন্যই বাংলাদেশ থেকে ফিটনেস ট্রেইনার দেবাশীষ ঘোষকে নিজের কাছে নিয়ে গিয়েছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ট্রেইনারদের একজন এই দেবাশীষ। গত প্রায় দেড় বছর ধরে এই দেবাশীষের সঙ্গে কাজ করছেন। এছাড়া তাসকিন আহমেদও সাহায্য নেন তাঁর, এই পেসারের বারবার ইনজুরি থেকে দ্রুত ফিট হওয়ার পিছনেও দেবাশীষের অবদান অনেক।
এলপিএলের দল গালি টাইটান্সের নিজস্ব জিম, ফিটনেস ট্রেনার সবই আছে। তাঁদের অধীনে দাসুন শানাকা, টিম সেইফার্টদের মত আন্তর্জাতিক তারকারা ট্রেনিং করেন। সাকিব নিজেও দলের সাথে কাজ করেন, তবুও বাড়তি পরিশ্রমে নিজেকে তৈরি করে নিতে ব্যক্তিগত ট্রেইনার নিয়ে গেছেন বাংলাদেশ থেকে ।
সাকিব কেন সেরা, সাকিব কেন এতটা ধারাবাহিক সবকিছুর উত্তর লুকিয়ে আছে এখানেই – তিনি জানেন কখন কি করতে হবে, তিনি জানেন নিজের সর্বোচ্চ নিংড়ে দিতে ফিটনেসের গুরুত্ব।
২০১৯ বিশ্বকাপের আগে ফিটনেস আর স্কিল নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করেছিলেন সাকিব আল হাসান। এরপরই বিশ্বকাপে ৬০৬ রান এবং ১১ উইকেট ঝুলিতে নিয়ে গড়েছিলেন অজস্র রেকর্ড। এবারের বিশ্ব আসরেও সে রকম অতি মানবীয় পারফরম্যান্স করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তিনি, নিজের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ রঙিন করে রাখতে বাংলাদেশের পোস্টার বয় নিশ্চয়ই ছাড় দিবেন না।