সাকিব আল হাসান যখন ব্যাট করতে নামেন শ্যাডো করতে করতে, গ্যালারি জুড়ে তখন ভুয়া, ভুয়া চিৎকার শোনা যায় – আবার তিনিই যখন আউট হয়ে ডাগ আউটে ফিরেন ধীর পায়ে তখন জয়ধ্বনি উঠে দর্শকের মাঝে। এই যে কিছু সময়ের ব্যবধানে নিন্দুককে ভালবাসতে বাধ্য করা, সমালোচনাকে প্রশংসায় রূপ দেয়া এটা বোধহয় সাকিব বলেই সম্ভব।
কয়েক দিন আগেও চোখের সমস্যার কারণে ব্যাটার সাকিবকে সংগ্রাম করতে হয়েছে। চলতি বিপিএলে এক ম্যাচে ব্যাট করেছিলেন আট নম্বরে, আরেক ম্যাচে তো আট উইকেটের পতন ঘটলেও বাইশ গজে দেখা যায়নি তাঁকে। সবমিলিয়ে তাই সাকিবের ব্যাটিং সত্তার সমাপ্তি দেখে ফেলেছিলেন অনেকে; কেউ কেউ তো আবার ক্যারিয়ারের শেষও ভেবে রেখেছিলেন।
তবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার তো গড়পড়তা কেউ নন, তিনি তো সাধারণ ধাতুতে গড়া নন। কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, কিভাবে হৃদয় জিততে হয় মানুষের সেটা ভাল করেই জানা আছে তাঁর। সেজন্যই পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার রূপে আবির্ভূত হয়েছেন, মাঠের বাইরের সব আলোচনাকে ম্লান করে মাঠে নিজেকে সেরা প্রমাণ করেছেন আরো একবার।
দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এই বাঁ-হাতি। তিন নম্বরে নেমে খেলেছিলেন ২০ বলে ৩৪ রানের ইনিংস, বল হাতে নিয়েছিলেন তিন উইকেট। পরের ম্যাচেও দলকে ভাল শুরু এনে দিয়েছেন তিনি, ১৬ বলে ২৭ রান এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে।
পরপর দুই ম্যাচে এই তারকা সেট হয়েছেন ঠিকই, তবে বড় রান পাননি। সেই আক্ষেপ পূরণ করেছেন খুলনা ও চট্টগ্রামের বিপক্ষে। এনামুল হকদের সাথে মাত্র ৩১ বলে ৬৯ রান এবং শুভাগত হোমদের সঙ্গে ৩৯ বলে ৬২ রান করেছিলেন তিনি। এসবের পাশাপাশি বোলিংয়ে বরাবরের মতই সফলতা ধরা দিয়েছে তাঁর হাতে।
বিশ্বকাপের সময় থেকেই মাঠের বাইরে কত ধরনের বিতর্ক চলছিল সাকিব আল হাসানকে ঘিরে। চোখের সমস্যার রেশ ধরে সেইসব আলোচনা আরো ফুলে ফেঁপে উঠেছিল। কিন্তু এখন সব হারিয়ে গিয়েছে, চলে গিয়েছে পারফরম্যান্সের আড়ালে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই মি. ৭৫ এমনই, মাঠের মোহনীয় খেলা দিয়ে ভুলিয়ে দেন বাকি সব।