একটা ব্যর্থ চেষ্টা। একটা অপূর্ণতা। একটা অপ্রয়োজনীয় শট। চতুর্থ দিনের সকাল বেলায় বাংলাদেশের ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের মিছিলে যোগ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দারুণ একটা ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটে লক্ষ্যহীন এক শটে।
প্রায় ১০ ইনিংস ধরে নিজের ছায়া হয়ে বেঁচে ছিলেন শান্ত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পর আর বড় ইনিংসের দেখা পাননি তিনি। ভারতের বিপক্ষে শতকের পথেই ছিলেন তিনি। বাকিদের আসা-যাওয়ার মিছিল ছাপিয়ে তিনি থিতু ছিলেন।
এমনকি একটা পর্যায়ে মোহাম্মদ সিরাজ তাকে তাঁতিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেন। তখনও শান্ত জবাবে স্মিত এক ফালি হাসি দিয়েছেন। তাতে অন্তত বোঝা যাচ্ছিল তাকে টলানো যাবে না। তিন অংকের সেই মাইলফলক স্পর্শ করে তবেই থামবেন শান্ত।
কিন্তু তেমনটি আর হল কই? আরেক প্রান্ত থেকে উইকেট পতন হতে দেখে শান্ত যেন নিজের সম্পূর্ণ স্থিরতা হারিয়ে ফেলেন। আগ্রাসী সব শট খেলে দ্রুত পৌঁছাতে চাইলেন শতকের মাইলফলকে। কিন্তু চিপকের উইকেট যে ইতোমধ্যেই স্পিনারদের পক্ষে কথা বলতে শুরু করেছে।
রবীন্দ্র জাদেজা উইকেটের ক্ষতগুলোকে লক্ষ্য করে এক একটি বল ছুঁড়ে গেছেন। তেমনই এক বলে বাউন্ডারির আশায় শট চালান শান্ত। কিন্তু ব্যাটের সাথে ঠিকঠাক সংযোগ ঘটেনি। আকাশে উড়ে যাওয়া বলকে তালু-বন্দী করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। আর তাতেই শেষ হয় অধিনায়ক শান্তর ৮২ রানের ইনিংস।
তার পতনের পর বাংলাদেশের দ্রুত গুটিয়ে যাওয়া ছিল অবধারিত। শান্তর বিদায়ের পরবর্তী ৭ বলের মধ্যেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু শান্ত চাইলেই হয়ত টেল এন্ডারদের সাথে নিয়ে নিজের ইনিংস আরও খানিকটা বড় করতে পারতেন। তাতে করে পরাজয়ের ব্যবধান কমানো যেত।
বরং তেমনটি না করে শান্ত ব্যক্তিগত গ্লোরির জন্য খেলতে চাইলেন। দলের পরাজয় মেনে নিয়ে দ্রুতই ব্যক্তিগত অর্জনের দিকেই মনোযোগ দিতে চাইলেন শান্ত। তাতেই বরং দায়িত্ববোধের অভাবটা ফুটে ওঠে। চেন্নাই টেস্ট পরাজয়ের দায় পুরো ব্যাটিং ইউনিটের। বোলাররা অন্তত তাদের সামর্থ্যের প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করেছেন।
কিন্তু দুই ইনিংস মিলিয়েই বাংলাদেশী ব্যাটাররা যারপরনাই হয়েছেন ব্যর্থ। আর সে কারণেই ২৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। নিজেদের দুর্বলতা ছাপিয়ে, ভুল গুলো শুধরে নিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে ফিরবে টাইগার ব্যাটাররা। এর থেকে বেশি প্রত্যাশা হয়ত আর নেই।