পুরোদস্তুর অধিনায়ক হওয়ার পরের সময়টা খুব একটা সুখকর হয়নি নাজমুল হোসেন শান্তর। নিজের প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে বেশ হতাশাই সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশের নয়া কাপ্তানের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ফরম্যাটের সিরিজে কেবল ওয়ানডে ফরম্যাটেই এসেছে জয়। বাকি দু’টো সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে লঙ্কানরা।
তবে ব্যাট হাতে শেষ ছয় ইনিংসে বলার মত তেমন কিছুই করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। সেসব বেশ পুরনো গল্প নয়। তবে একটা লম্বা বিরতি মাঝে অবশ্য পেয়েছেন শান্ত। আর সেই বিরতিতে নিজের ভুলগুলো নিয়ে ভেবেছেন সম্ভবত। আর সেই ভুল শুধরে নেওয়ার মানসিকতা প্রতিফলিত হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে।
ডিপিএলের হাইভোল্টেজ ম্যাচই বলা চলা আবাহনী ও প্রাইম ব্যাংকের মধ্যকার লড়াইকে। তেমন এক ম্যাচে ব্যাট হাতে দারুণ এক ইনিংসই উপহার দিয়েছেন আবাহনীর অধিনায়কত্ব পাওয়া শান্ত। শ্রীলঙ্কা সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে তিন অংকের পেয়েছিলেন দেখা।
এরপরের দুই ওয়ানডে ও দুই টেস্টের চার ইনিংস মিলিয়েও একটি ইনিংসেও অর্ধশত রান আসেনি শান্তর ব্যাট থেকে। সবাই হয়ত অধিনায়কত্বের চাপ সইতে না পারাকে দায়ী করতে শুরু করবে ভেবে রেখেছিল। তবে তেমন কোন পরিস্থিতি তৈরি হতে দিতে নারাজ শান্ত। তাইতো তার ব্যাটে আবারও বড় রান। মঞ্চ ভিন্ন হলেও একটা স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার প্রয়াশ দৃশ্যমান।
শান্ত খুব সহসাই ফুরিয়ে যাবেন না। হয়ত ক্যারিয়ারের উত্থান-পতন হবে, খারাপ সময় যাবে- কিন্তু তিনি হাল ছেড়ে হারিয়ে যাবেন না। শত প্রতিঘাত, সমালোচনা, তিরস্কার আর ট্রলকে পেছনে ফেলে শান্ত এক নতুন দিনের পথে যাত্রা শুরু করেছেন। সে রাস্তা মসৃণ হবে না। কিন্তু শান্ত চাইলে সকল প্রতিবন্ধকতাও যাবে উবে।
তেমনটি হয়েছে প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে। মিরপুরের উইকেটে দাঁড়িয়ে শান্ত ছুয়েছেন সেঞ্চুরি। লিস্ট এ ক্যারিয়ারে যা তার ১১তম সেঞ্চুরি। তবে এই সেঞ্চুরি তোলার পথে যে একেবারে ধীরলয়ে ব্যাটিং করেছেন শান্ত তা কিন্তু নয়। একেবারে স্বভাবজাত ভঙ্গিমায় ব্যাট চালিয়েছেন। দ্রুত রান তুলেছেন। প্রয়োজনের মুহূর্তে বাউন্ডারি আদায় করেছেন। দলকে পথ দেখিয়েছেন বিশাল এক সংগ্রহের।
দল শেষ অবধি ৩৪১ রান জমা করেছে স্কোরবোর্ডে। ১৩৮.৮২ স্ট্রাইকরেটে ইনিংসটিতে শান্ত খেলেছেন মোটে ৮৫টি বল। রান আদায় করেছেন ১১৮টি। চারটি সুবিশাল ছক্কার মার এসেছে তার ব্যাট থেকে। এছাড়াও ১৪টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিলেন প্রাইম ব্যাংকের বোলারদের।
শান্তর ব্যাটে নিয়মিত রান হওয়া ভীষণ প্রয়োজন। কেননা বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং অর্ডারে গুরুদায়িত্ব তার কাঁধেই ন্যাস্ত। তিনি রানের ধারায় থাকা মানেই জাতীয় দলের জন্যে তা মঙ্গলকর। তার রানের ধারায় সওয়ার হয়ে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ দল।