নেভিল কার্ডাসের ক্রিকেট জীবনের মতই; এখানে উত্থান আছে, আছে পতনও। ভাগ্যের অভিশাপে সকালের আমির বিকেলে ফকির হয়ে যেতে পারেন; আবার উল্টোটাও হতে পারে, পথের ফকির মুহূর্তের ব্যবধানে হয়ে যেতে পারেন শহরের সবচেয়ে দামি বাড়ির মালিক। ক্রিকেটেও এমন রূপকথা দেখা যায় নিয়মিত, যার সর্বশেষ উদাহরণ শশাঙ্ক সিং।
২০২৪ সালের মিনি নিলামে এক তরুণকে দলে নিতে আগ্রহী ছিল পাঞ্জাব কিংস, তাঁর নাম ছিল শশাঙ্ক সিং। সেই নামটা যখন উপস্থাপকের মুখে শোনেন তাঁরা তখনি বিড করে বসেন, কিন্তু কিছু সময় পরেই জানা যায় অন্য একজন শশাঙ্কের নিলাম চলছে। তখন বিড ফিরিয়েও নিতে চেয়েছিল প্রীতি জিনতা বাহিনী, যদিও শেষমেশ সেটা হয়নি। অর্থাৎ ৩২ বছর বয়সী অপরিচিত শশাঙ্ক সিংকে ভুল করেই স্কোয়াডে নেয় তাঁরা।
কথায় আছে, ভুল থেকে যদি ভাল কিছু হয় তাহলে ভুল করাই ভাল – পাঞ্জাব সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। এই ব্যাটার রীতিমতো ম্যাচউইনার হয়ে উঠেছেন, সবশেষ কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য একটা জয় এনে দিয়েছেন তিনি। তাঁর অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়েছে আর্শদীপ, জীতেশরা।
এদিন চার নম্বরে নেমে ২৮ বল খেলেছেন এই ডানহাতি, তাতেই উপহার দিয়েছেন ৬৮ রানের এক ক্যামিও। মাত্র দুইটি চার মারলেও এ রান করার পথে আট আটটি ছয় হাঁকিয়েছেনতিনি, অর্থাৎ কেবল ছক্কা মেরেই মোট রানের ৭১ শতাংশ রান করেছেন! তাই তো তাঁকে চাইলে ছক্কা মানব কিংবা দানব ভাবা যায়।
এই হার্ডহিটার যখন বাইশ গজে আসেন তখনো ৪৫ বলে ৮৪ রান প্রয়োজন ছিল পাঞ্জাবের। উইকেটে এসেই বরুণ চক্রবর্তীকে টানা দুই বলে দুইবার সীমানা দড়ির ওপারে পাঠান তিনি। এরপর সতেরো এবং আঠারোতম ওভারে যথাক্রমে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১৮ ও ২৪ রান।
এসবের ফলে জয়ের পথ একেবারে সহজ হয়ে যায়; এর আগেও একই কাজ করেছিলেন এই নব্য তারকা, গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে অসম্ভব সমীকরণকে সিদ্ধ করে জয় এনে দিয়েছিলেন তিনি। এমনিতে প্রায় প্রতি ম্যাচেই হাসে তাঁর ব্যাট; সেজন্য বলাই যায়, ভুল করে একটা রত্ন কুড়িয়ে পেয়েছে কিংস পরিবার।