একেবারেই কোন আলোচনায় ছিলেন না তিনি। বাতিলের খাতায় নাম উঠে গিয়েছিল আহমেদ শেহজাদের। তবে অন্ধকার থেকে নিজেই যেন হয় উঠলেন আলোর উৎস। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ধারাবাহিকতার চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
এখন পর্যন্ত মোটে দুই ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তবে এরই মধ্যে রান সংগ্রাহকদের সেরা তালিকায় উঠে এসেছেন আহমেদ শেহজাদ। টানা দুই ইনিংসেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পথিকৃৎ হয়ে সামলে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন ফরচুন বরিশালের টপঅর্ডার।
নিজের প্রথম ম্যাচেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ২২৯ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট চালিয়েছেন তিনি। তবে অল্পতেই থেমে যেতে হয়েছে তাকে। সেই ধারা অবশ্য তিনি অব্যাহত রেখেছেন পরবর্তী ম্যাচেও। সিলেট স্ট্রাইকার্সের নিমন্ত্রণে আগে ব্যাটিং করতে নামে ফরচুন বরিশাল। যথারীতি আহমেদ শেহজাদ নিজের মত করেই ব্যাট চালিয়েছেন।
চট্টগ্রামের বিপক্ষে ৩৯ রানে থামলেও সিলেটের বিপক্ষে অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন তিনি। এদিন ব্যাট করেছেন প্রায় ১৬১ স্ট্রাইকরেটে। পঞ্চাশ পেরুবার পরও রানের ক্ষুধায় একটুও ভাটা পড়েনি তার। মারকুটে মনোভাবে কোন কমতি আসতে দেননি।
বেনি হাওয়েলের বলে আউট হয়েছেন। তবে সেই বলেও বাউন্ডারির আশায় খেলেছিলেন স্ট্রেইট শট। তবে জোরালো সেই শট হাওয়েলের তলুতে বন্দী হয়। খানিকটা বিস্ময় নিয়ে ৬৬ রান নিয়ে প্যাভিলনে ফেরেন শেহজাদ। ৪১ বলের এই ইনিংসটিতে ৯টি বাউন্ডারির পাশাপাশি ২টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন শেহজাদ। বরিশালের নড়বড়ে টপ অর্ডার একমাত্র সেনানীই যেন তিনি হয়ে উঠেছেন।
ফরচুন বরিশালের পুরো স্কোয়াড জুড়েই রয়েছে অভিজ্ঞতার ছড়াছড়ি। প্রায় প্রতিটা খেলোয়াড় নিয়মিত ছিলেন খেলার মধ্যে। দেশসেরা ওপেনার খ্যাত তামিম ইকবালও রয়েছেন দলটিতে। কিন্তু সবাই যেন থেকে যাচ্ছেন নিজেদের ছায়া হয়ে। আশানুরুপ পারফরমেন্সের দেখা মেলা ভার। তাতে করে পরাজিতদের দলেই থেকে যেতে হচ্ছে বরিশালকে।
শুধু যে ব্যাটাররা খারাপ করছে তেমনটি নয়। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ সংগ্রহ গড়েও হারতে হয়েছে বরিশালকে। সে দায় অবশ্যই বোলারদের। মোদ্দা কথা দলগতভাবেই ব্যর্থতার ঘেরাটোপ থেকে বের হতে পারছে না বরিশাল। সেদিক বিবেচনায় শেহজাদ যেন কাঁদামাটিতে ফোঁটা পদ্মফুল।
অভিজ্ঞতার পূর্ণ ব্যবহারটাই তিনি করছেন ব্যাট হাতে। বিপিএল দিয়েই যেন ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় নতুন মোড় খুঁজে নিতে চাইছেন শেহজাদ। শেষ অবধি তেমনটি হয় কি-না তা সময়ের হাতে তোলা থাক।