আমিরকে বাড়তি সুবিধা দিতেন আর্থার!

মাত্র ২৯ বছর বয়সে পাকিস্তানের পেসার মোহম্মদ আমিরের অবসরে অবাক হয়েছিল গোটা ক্রিকেটবিশ্ব। গতবছর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান তিনি। তবে পরে বলেন টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে তাঁর সমস্যার কথা। বিশেষ করে প্রধান কোচ ও সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ উল হক ও বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনুসের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি।

এই নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক হয় পাকিস্তানের ক্রিকেট অঙ্গনে। অনেক ক্রিকেটাররাও মুখ খুলেছেন আমিরের পক্ষে বিপক্ষে। তবে সম্প্রতি আমিরের ব্যাপারে গনমাধ্যমে কথা বলেছেন আরেক কিংবদন্তি পেসার শোয়েব আখতার। আমিরের অভিযোগকে যুক্তিহীন বলে মনে করেন এই পেসার।

শোয়েব আখতারের মতে টিম ম্যানেজমেন্ট পেসার আমিরকে যথেষ্ট সুযোগ দিয়েছে। তবে আস্তে আস্তে তাঁর বোলিং গ্রাফ নিচের দিকে নামছিল। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময় থেকেই আর আগের মত ছন্দে নেই এই পেসার।

শোয়েব আখতার একটি স্থানীয় টিভি চ্যানেলকে বলেন, ‘শুধু শুধু অভিযোগ না তুলে তাঁর নিজের খেলার দিকে বেশি মনোযোগ দেয়া উচিৎ ছিল। দিন দিন তাঁর পারফর্মেন্স খারাপ হচ্ছিল। টিম ম্যানেজমেন্টকে দোষ দিয়ে কী লাভ।’

আখতার এই সময় মোহম্মদ হাফিজকে উদাহরণ হিসেবে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘ম্যানেজম্যান্ট হাফিজেরও বিপক্ষে ছিল। তবে সে নিয়মিত রান করে প্রমাণ করেছে দলে তাঁর জায়গা পাওয়া উচিৎ। আমিরের উচিৎ সেটাই করা। তাহলেই সে দলে তাঁর জায়গা ফিরে পেতো।’

এসময় টিম ম্যানেজম্যান্ট ও কোচদের পক্ষ নিয়ে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রধান কোচ মিসবাহ উল হক একেবারেই ঠিক ছিলেন। সত্যিই তো আমিরের পেস কমে গিয়েছিল। এছাড়া দল থেকে বাদ দেয়ার আগে আমিরকে অনেকবার সুযোগ দেয়া হয়েছে।’

এছাড়া রাওয়াল পিন্ডি এক্সপ্রেস মনে করেন টিম ম্যানেজম্যান্টের সাথে ব্যক্তিগত সমস্যা থাকলেও অবসর নেয়ার কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, ‘কোচদের সাথে সমস্যা থাকলেই বা সমস্যা কোথায়। তুমি যতদিন ঠিকঠাক পারফর্ম করছো ততদিন তোমার জায়গা কেউ নিতে পারবে না। সেখানে কোচ হিসেবে যেই থাকুক।’

আখতার দাবী করেন পাকিস্তানের সাবেক কোচ মিকি আর্থার বাবার মতই আগলে রাখতেন আমিরকে। তিনি বলেন, ‘বর্তমান টিম ম্যানেজম্যান্ট তাঁকে কখনোই এতটা সুযোগ দিবে না যতটা তাঁকে পাপা মিকি আর্থার দিত। তাঁকে আগলে রাখার জন্য পাপা আর্থার সবসময় আমিরের সাথে থাকবে না। তাই তোমাকে পারফর্ম করতে হবে।’

সবমিলিয়ে মোহাম্মদ আমির টিম ম্যানেজমেন্টকে দোষ দিয়ে ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও পাকিস্তান ক্রিকেটের একটি বড় অংশ মনে করে আমির বাদ পড়েছে তাঁর বাজে পারফর্মেন্সের কারণেই। শেষ কয়েক বছর ধরেই আগের ফর্মে ছিলেন না এই পেসার।

পাকিস্তান যখন ভারতকে হারিয়ে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয় করলো তখন থেকেই নিজেকে হারিয়ে খুজছিলেন এই পেসার। এছাড়া ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও নিজের সেরাটা দিতে পারেননি তিনি। ৮ ম্যাচ খেলে নিয়েছিলেন ১৭ উইকেট। ওদিকে আরেক পেসার শাহিন আফ্রিদি ৫ ম্যাচ খেলেই নিয়েছিলেন ১৬ উইকেট। সবমিলিয়ে আমিরের অবসর নিয়ে জল ঘোলা কম হলো না পাকিস্তানের ক্রিকেটে।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link