ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে তাঁর অন্তর্ভূক্তিটাই ছিল চমকে দেওয়ার মতো। মাত্র মাস ছয়েক আগে ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করেছেন। সঙ্গী কেবল ৬টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ এবং লিস্ট এ ক্রিকেটে ৭টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। সেই আনকোরা শোয়েব বশিরই কিনা ভারতগামী ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে সুযোগ পেলেন।
তবে লাল বলের ক্রিকেটে এ স্পিনারের স্বপ্নের পরিধি সেখানেই থেমে থাকেনি। বিশাখাপত্তনম টেস্টে অভিষেক হয়েছে শোয়েব বশিরের। মাত্র ২০ বছর ১২ দিনে ৬ ফুট ৪ ইঞ্চির এ ক্রিকেটারের শুরুটাও হয়েছে দুর্দান্ত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম শিকার হিসেবে তিনি ফিরিয়েছেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে।
ইনিংসের ১৮তম ওভারে লেগ স্লিগে ওলি পোপকে রেখেছিলেন বশির। তরুণ এ স্পিনারের এমন আক্রমণাত্বক কৌশলেই পরাস্ত হন রোহিত। ওই ওভারে নিচু হয়ে হয়ে আসা তৃতীয় বলটা আলতো করে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন এ ওপেনার। আর তাতেই পোপের হাতে ধরা দেন ভারত অধিনায়ক। ব্যাস। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ১১তম আর আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রথম উইকেট শিকারের মুহূর্তে পৌঁছে যান শোয়েব বশির।
অথচ ভারতের মাটিতে এ স্পিনারের খেলা নিয়েই না কত জলঘোলা হয়েছে গত কয়েক সপ্তাহে। মূলত শোয়েব বশিরের জন্ম ও বেড়ে ওঠা সারেতে হলেও তিনি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। আর এ কারণেই প্রথম ভারতের ভিসাই পাননি তিনি। পুরো দল ভারত পৌঁছে যাওয়ার কিছুদিন পর তিনি ভিসা পান। অবশ্য ইংল্যান্ডের হয়ে এ সিরিজে সুযোগ পাওয়াটাই ছিল তাঁর জন্য রোমাঞ্চ জাগানিয়া।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৬ ম্যাচে ১০ উইকেট পাওয়া এ স্পিনারের কপাল খুলে যায় মূলত একটি ভিডিওতে। গত বছরের জুনে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক হয় বশিরের। সেখানে নিজের প্রথম ওভারে কুককে দু’বার পরাস্ত করেন বশির। আর সেই ভিডিওই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর সেই ভিডিও দৃষ্টি কাড়ে ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক বেন স্টোকসেরও।
তিনি দেখলেন, উচ্চতা বেশি হওয়ায় বশির স্পিন করলেও, তাতে গতি হচ্ছে অনুমিতভাবেই বেশি। এ ছাড়া বল টার্নও হচ্ছে স্বাভাবিক স্পিনারদের চেয়ে বেশি। ব্যাস। এতেই বশিরকে মনে ধরে যায় স্টোকসের। যেই ভাবা, সেই কাজ। ভারতের কন্ডিশনে দারুণ কার্যকরী হবেন বলে এ সফরে স্কোয়াডে অন্তর্ভূক্ত করলেন বশিরকে।
ভারত সফরের প্রথম টেস্টের একাদশের বাইরেই ছিলেন এ স্পিনার। তবে তাঁর কপাল খুলে যায় জ্যাক লিচের চোটে। বিশাখাপত্তনামের স্পিনিং ট্র্যাকে বশিরকে নিতেও দুবার ভাবতে হয়নি ইংল্যান্ডকে। অবশেষে টেস্ট অভিষেক হলো পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এ স্পিনারের। আর অভিষেকের দিনই রোহিত শর্মাকে ফেরালেন এ ক্রিকেটার।