সময়ের সাথে শ্রেয়াসের ব্যাটে রানের গতি দোল খায়

যেকোনো পরিস্থিতিতেই ড্রেসিরুমের ভরসা হওয়ার সামর্থ্য রয়েছে তাঁর - একেবারে আদর্শ মিডল অর্ডার ব্যাটার বলতে যা বোঝায় আরকি। 

বিশ্বকাপের শুরুটা ভাল হয়নি শ্রেয়াস আইয়ারের, প্রথম ম্যাচে কোন রানই করতে পারেননি। সবমিলিয়ে প্রথম ছয় ম্যাচে একটা ফিফটি, সেটাও মাত্র ৫৩ রানের ইনিংস। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে সেরা ছন্দে দেখা গিয়েছিল তাঁকে, ৫৬ বলে করেছেন ৮২।

সেখান থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদেরও শাসন করলেন আইয়ার। চার নাম্বারে নেমে খেলেছেন ৮৭ বলে ৭৭ রানের সময়োপযোগী ইনিংস। সেই সাথে বিরাট কোহলির সঙ্গে গড়েছেন ১৩৪ রানের দুর্দান্ত জুটি, যা কি না ভারতকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দিয়েছে।

আগের ম্যাচেই ১৪০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছিলেন এই তরুণ, অন্যদিকে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সেটা নেমে এসেছে ৮৮-তে। যৌক্তিক কারণও আছে, লঙ্কানদের সাথে তিনি ব্যাট করেছিলেন টপ অর্ডারের গড়ে দেয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে; কিন্তু এই ম্যাচে তাঁকেই ভিত গড়ার দায়িত্ব নিতে হয়েছে।

দায়িত্ব অবশ্য ভালভাবেই পালন করেছেন এই ডানহাতি। তাই তো প্রমাণ হয়ে গিয়েছে যেকোনো পরিস্থিতিতেই ড্রেসিরুমের ভরসা হওয়ার সামর্থ্য রয়েছে তাঁর – একেবারে আদর্শ মিডল অর্ডার ব্যাটার বলতে যা বোঝায় আরকি।

মাত্র দশ ওভারেই ৯০ রান জমা হয়েছিল ভারতের স্কোরবোর্ডে, ততক্ষণে আবার সাজ ঘরে ফিরে গিয়েছেন দুই ওপেনারও। দলকে চাপে পড়তে না দিয়ে মোমেন্টাম ধরে রাখার কাজটাই করেছেন তিনি। শুরুটা করেছিলেন একেবারে রয়ে সয়ে; স্লো পিচের সাথে মানিয়ে নিয়েছেন। প্রথম ৩০ বলে এই তারকার রান ছিল মাত্র ১১।

এরপরই ধীরে ধীরে হাত খুলে খেলতে থাকেন তিনি; তবে সাবধানী ছিলেন, দুর্দান্ত বোলিং করতে থাকা প্রোটিয়া স্পিনারদের সামলেছেন মনোযোগ দিয়েই। এভাবে ব্যাটিং করেই ৬৪ বলে ‘ব্যাক টু ব্যাক’ হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন; আর সেসময় আগ্রাসীও হয়ে ওঠেন খানিকটা।

কিন্তু বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি। লুঙ্গি এনগিডির স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ৭৭ রানে থামতে হয় তাঁকে। যদিও ইতোমধ্যে নতুন এক রেকর্ডের সঙ্গী হন বিরাট-আইয়ার; এবারের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়ার কীর্তি গড়েন দুজনে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঝকঝকে একটা ইনিংস খেলার পরেই শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে সংশয় দূর হয়ে গিয়েছিল। তবু মনের কোনায় হয়তো শঙ্কা ছিল; রাবাদা, ইয়ানসেনদের বাউন্সারের বিরুদ্ধে ভাল করতে পারবেন তো তিনি। আত্মবিশ্বাসী আইয়ার সেটা পেরেছেন; জয়ের ধারা বজায় রাখার রসদ এনে দিয়েছেন দলকে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...