সাকলাইনের বিশেষ ক্লাসে সোধি-এজাজ

একটা ‘সুইটস্পট’ নির্ধারণ করে দিলেন সাকলাইন মুশতাক। সেই জায়গাকে কেন্দ্র করেই হাত ঘুরিয়ে গেলেন ইশ সোধি। আর ততক্ষণে এজাজ প্যাটেলের সাথে দীর্ঘ আলাপ সেরে নিলেন নিউজিল্যান্ডের স্পিন বোলিং কোচ সাকলাইন মুশতাক।

পাকিস্তানের কিংবদন্তি খেলোয়াড় এখন প্রশিক্ষক। খেলোয়াড়ি জীবনের দীক্ষাই ছড়িয়ে দিচ্ছেন কিউই শিবিরে। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিলেট টেস্টে তার শীষ্যরা যেন মন ভরাতে পারেননি। সম্ভবত পরাজয়ের সেটাই বড় কারণ।

সিলেটে বাংলাদেশকে দুই ইনিংসেই অলআউট করেছে নিউজিল্যান্ড। যার ১৪ উইকেটই গিয়েছে স্পিনারদের পক্ষে। তবুও যেন কোথাও একটা পিছিয়ে ছিল কিউই স্পিনাররা।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট ছিল রীতিমতো স্পোর্টিং। বোলার, ব্যাটার সবাইকেই সহয়তা করেছে সিলেটের উইকেট। নিজেদের সেরাটা দিয়েই জয় পেয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। তাতে কৃতীত্ব আবার বাংলাদেশি স্পিনারদের, বিশেষ করে তাইজুল ইসলামের।

তাইজুল একাই নিয়েছেন ১০ খানা উইকেট। মুমিনুল হক, নাঈম হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করেছেন ৮ উইকেট। এখানেই সম্ভবত পিছিয়ে পড়েছিল নিউজিল্যান্ড।

তবে মিরপুর টেস্টে আর পিছিয়ে থাকতে চান না কিউইদের কোচ সাকলাইন মোশতাক। তাইতো দুই শীষ্যকে নিয়ে দীর্ঘক্ষন আলাদাভাবে অনুশীলন করেছেন। ইশ সোধি আর এজাজ প্যাটেলকে নির্দিষ্ট স্থানে টানা বল করে যাওয়ার অনুশীলনই করিয়েছেন সাকলাইন।

নিউজিল্যান্ডের বর্তমান দলে এই দুইজনই রয়েছেন স্বীকৃত স্পিনার। গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্ররা হাত ঘোরাতে পারেন। উইকেটও নিতে পারেন। তবে তাদের মূল কাজটা স্রেফ বল হাতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা নয়। সে কাজটা যাদের, তাদের নিশ্চিতভাবেই নিজেদের সেরাটা নিঙড়ে দিতে হবে। সেজন্য অবশ্য প্রস্তুত থাকা চাই।

সাকলাইন মোশতাকের বিশেষ ক্লাস দেখে অবশ্য আরও একটা বিষয় আন্দাজ করে নেওয়া যায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে ইশ সোদি এবং এজাজ প্যাটেলের হাতেই থাকবে বাংলাদেশককে কুপকাত করবার মূল দায়িত্ব।

তাছাড়া উইকেট বিবেচনায় রাচিন রবীন্দ্রকেও হয়ত দেখা যেতে পারে একাদশে। সেক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডের একটা বোলিং বিকল্পও বৃদ্ধি পাবে। সাধারণত মিরপুরের উইকেট বেশ মন্থর গতির হয়। পাশাপাশি দিন যত গড়ায় উইকেটের দশা বেগতিক হয়। এমন এক উইকেটে স্পিনারদের আধিপত্যের পরিসংখ্যানই সবচেয়ে ভারি।

এই মাঠে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলারের প্রথম তিনজনই স্পিনার। প্রথমজন সাকিব আল হাসান, দ্বিতীয়তে আছেন তাইজুল ইসলাম। যথারীতি মেহেদী হাসান মিরাজের অবস্থান তৃতীয়তে।

সাকিব মিরপুরে সাদা পোশাকে শিকার করেছেন ৭৬টি উইকেট। তাইজুলের সংখ্যাটা ৬৯, মিরাজ নিয়েছেন ৫২টি উইকেট। পেসারদের মধ্যে ভারতের জহির খান নিয়েছেন সর্বাধিক উইকেট। তবে সংখ্যাটা কেবল ১৭।

এই ক্ষুদ্র পরিসংখ্যানই বলে দেয় মিরপুরে স্পিনাররাই দাপট দেখাবেন আসন্ন টেস্ট ম্যাচেও। সেই দাপটের নৌকায় চড়ে বসতে চাইছেন ইশ সোধি, এজাজ প্যাটেলরা। আর গুরু সাকলাইন দিয়ে যাচ্ছেন দিকনির্দেশনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link