‘রাঘব’বোয়াল না হয়েও…

তাঁদের চারজনকেই টিমে রাখার বিলাসিতা একটি টেস্ট ম্যাচ ছাড়া দেখায়নি ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট। তাই একটি মাত্র টেস্ট ম্যাচ ছাড়া ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রথম ১৩ বছর (১৯৬৫-১৯৭৮) টিমে ঢোকার জন্য তাকে লড়তে হয়েছিল মূলত প্রসন্নর সঙ্গে। চোট আঘাত ছাড়া এটাই দস্তুর ছিল তখন ভারতীয় দলে। মোটামুটি দক্ষ ব্যাটিং, ভালো ক্লোজ ইন ফিল্ডিং রাঘবনের টিমে থাকার পিছনে অন্যতম প্লাসপ য়েন্ট ছিল।

শ্রীনিবাসরাঘবন ভেঙ্কটরাঘবন ছিলেন ষাট-সত্তরের ভারতীয় স্পিন চতুর্ভুজের চতুর্থ ভুজ। আমার মতে, ভেঙ্কটরাঘবন ছিলেন ষাট-সত্তরের ভারতীয় স্পিন চতুর্ভুজের চতুরতম ভুজও। বাঁহাতি স্পিনার বিষান সিং বেদি আর ডানহাতি লেগ স্পিনার ভগবৎ চন্দ্রশেখরকে বাদ দিলে বাকি দুজন স্পিনার (এরাপল্লী প্রসন্ন এবং তিনি) ছিলেন ডানহাতি অফ স্পিনার।

তাঁদের চারজনকেই টিমে রাখার বিলাসিতা একটি টেস্ট ম্যাচ ছাড়া দেখায়নি ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট। তাই একটি মাত্র টেস্ট ম্যাচ ছাড়া ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রথম ১৩ বছর (১৯৬৫-১৯৭৮) টিমে ঢোকার জন্য তাকে লড়তে হয়েছিল মূলত প্রসন্নর সঙ্গে। চোট আঘাত ছাড়া এটাই দস্তুর ছিল তখন ভারতীয় দলে। মোটামুটি দক্ষ ব্যাটিং, ভালো ক্লোজ ইন ফিল্ডিং রাঘবনের টিমে থাকার পিছনে অন্যতম প্লাসপ য়েন্ট ছিল।

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৫ থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৮৩, মোট সাড়ে ১৮ বছরেরও বেশি বিস্তৃত ছিল তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার (১৯৬৫-১৯৮৩)। সংখ্যায় যা ছিল মাত্র ৫৭ টি টেস্ট ম্যাচে বাঁধা। যা অকাট্য প্রমাণ ছিল তার লেগে থাকার ক্ষমতার। প্রথম দুটি ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলেছিলেন তিনি – ১৯৭৫ ও ১৯৭৯। আর এই দুটি বিশ্বকাপেই তিনি অধিনায়ক ছিলেন ভারতের। ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপে অধিনায়ক হয়ে খেলে আসার পরে অধিনায়কত্ব কেড়ে নেবার ঘোষণা তিনি শুনেছিলেন দেশে ফেরার ফ্লাইটে বসে।

১৮ বছরে (১৯৬৫-১৯৮৩) ৫৭টি টেস্টে ১৫৬ টি উইকেট এবং ৪৪ টি ক্যাচ নেওয়া ছাড়াও ৭৪৮ রান করেছিলেন তিনি, ২টি হাফ সেঞ্চুরি সহ। ৮/৭২ ও ১২/১৫২, সেরা ইনিংস প্রতি ও ম্যাচ প্রতি বোলিং, যথাক্রমে। এর মধ্যে ম্যাচে ১০ উইকেট ছিল একবার আর ইনিংসে ৫ উইকেট ছিল ৩ বার।

এক টেস্টে দুই ইনিংস মিলে বিপক্ষের (নিউজিল্যান্ড) ১১ জনকেই আউট করেছিলেন। ১৯ বছর ৩৩২ দিন বয়সে কনিষ্ঠতম বোলার হিসেবে টেস্ট ম্যাচে ১০ উইকেট পেয়েছিলেন। ১টি টেস্টে ২ ইনিংস মিলিয়ে প্রতিপক্ষের ১১ জন ব্যাটারকেই সাজঘরের রাস্তা দেখিয়েছিলেন। ৯ বছরে (১৯৭৪-১৯৮৩) ১৫ টি এক দিনের ম্যাচে পাঁচটি উইকেট ও ৫৪ রান এবং চারটি ক্যাচ ছিল তার ঝুলিতে।

১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলার ২ বছর পরে অবসরে যাওয়ার আগেও প্রাণপণ চেষ্টা ছিল টিমে ফেরার। খেলা ছাড়ার পরে ১৯৯৩ থেকে ২০০৪য়ের মধ্যে ৭৩ টি টেস্টে ও ৫২ টি ওডিআই ম্যাচে আম্পায়ারিং করা ছাড়াও ১৯৯২ থেকে ১৯৯৩ সালের মধ্যে পাঁচটি টেস্টে ও ৮ টি ওডিআই ম্যাচে ‘ম্যাচ রেফারি’ও হয়েছিলেন তিনি। টিভি আম্পায়ার ছিলেন একটি টেস্ট আর ১৮ টি ওডিআই ম্যাচে। ওই সময়ের বেশ আলোচিত আইসিসি অফিসিয়াল ছিলেন তিনি।

রঞ্জি ট্রফিতে তামিলনাডু, দুলীপ ট্রফিতে দক্ষিণাঞ্চল এবং ইরানী ট্রফিতে অবশিষ্ট ভারতের হয়ে তার উল্লেখযোগ্য সাফল্য ধরা আছে তার খেলা প্রথম শ্রেণীর ম্যাচগুলোর হিসেবপত্রে – ৩৪১ ম্যাচে ৬৬১৭ রান (১টি শতরান, ২৪টি অর্ধশতরান) আর ১৩৯০ উইকেট (৮৫ বার ইনিংসে ৫ উইকেট আর ২১ বার ম্যাচে ১০ উইকেট)।শুধু রণজি ট্রফিতেই তার নেওয়া উইকেটসংখ্যা ছিল ৫৩০।

১৯৪৫ সালের ২১ এপ্রিল চেন্নাইয়ে জন্ম নেওয়া ভারতের প্রাক্তন অফস্পিনার শ্রীনিবাস ভেঙ্কটরাঘবন আজও একই রকম সাবলীল ও প্রাণবন্ত আছেন। এমনই থাকুন তিনি, আরো অনেকদিন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...