অঁরি নাকি বেনজেমা!

দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। বিশ্ব কাঁপানো খেলোয়াড়দের আনাগোনাও রয়েছে তাঁদের জাতীয় দলে। তাঁদের সেরা দুই স্ট্রাইকার বেছে নিতে হলে প্রথমেই যে সামনে আসবে থিয়েরি অঁরির নাম। এরপর করিম বেনজেমা। এরা দুইজনই ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং আলো ছড়িয়েছেন ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে। নিজেদের পাখা মেলে উড়ে বেড়িয়েছেন আবার সেই পাখার ঝাপটায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করেছেন।

আপনাকে যদি প্রশ্ন করা ফ্রান্স ফুটবলের সেরা খেলোয়াড় কে? আপনার মনে হয়ত উদয় হবে জিনেদিন জিদানের ছবি। অথবা মিশেল প্লাতিনির কথাও ভাবতে পারেন অনেকে। কিন্তু যদি প্রশ্নটা করা হয় ফ্রান্সের সেরা স্ট্রাইকার কে?

আপনি আসলে আলাদা করতে পারবেন না যে ফ্রান্সের সেরা স্ট্রাইকার কে। তবে আপনি যা করতে পারবেন তা হচ্ছে দুইজনে সেরা স্ট্রাইকার নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন।

দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। বিশ্ব কাঁপানো খেলোয়াড়দের আনাগোনাও রয়েছে তাঁদের জাতীয় দলে। তাঁদের সেরা দুই স্ট্রাইকার বেছে নিতে হলে প্রথমেই যে সামনে আসবে থিয়েরি অঁরির নাম। এরপর করিম বেনজেমা। এরা দুই জনই ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং আলো ছড়িয়েছেন ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে। নিজেদের পাখা মেলে উড়ে বেড়িয়েছেন আবার সেই পাখার ঝাপটায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করেছেন।

এই দুই স্ট্রাইকারের বেশ একটা মিল রয়েছে। বর্তমানে তাঁদের দুই জনের গোল সংখ্যা এক। দুইজনের পেশাদার ক্যারিয়ারের গোল সংখ্যা এখন ৪১১। দুইজন দুই ভিন্ন সময়ে শুরু করেছেন নিজেরদের ফুটবল ক্যারিয়ার। হোক সেটা ক্লাব কিংবা আন্তর্জাতিক।

২০০৪ সালে ফ্রেঞ্চ ক্লাব লিঁওর হয়ে পেশাদার ফুটবল খেলা শুরু করেন বেনজেমা। তাঁর ঠিক এক দশক আগেই ক্লাব ফুটবলে পদার্পণ হেনরির। তিনি তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মোনাকোর হয়ে।

ফ্রান্স জাতীয় দলেও তাঁদের আসার দূরত্ব বছর দশের। অঁরি এই শতাব্দীর আগেই ফ্রান্সের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ১৯৯৭ সালে খেলা শুরু করা হেনরি প্রথম জাতীয় দলের হয়ে গোল করেন ১৯৯৮ বিশ্বকাপে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই ম্যাচ ফ্রান্স জিতেছিলো ফ্রাঞ্চ ৩-০ গোল ব্যবধানে। আর সেই বছরই তো নিজেদের প্রথম বিশ্ব  শিরোপাটা আকাশে তুলে ধরেছিল ফ্রান্স।

দশ বছর বাদে অঁরির সেই স্ট্রাইকিং পজিশনে এসেছিলেন করিম বেনজেমা, ২০০৭ সালে। সে বছরই অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ফ্রান্সের জার্সি পরে প্রথম গোল করেন বেনজেমা। জাতীয় দলের হয়ে অঁরি খেলেছেন ১২৩ ম্যাচ গোল করেছেন ৫১ টি। অপরদিকে বেনজেমার খেলা ম্যাচের সংখ্যা ৯৪ এবং গোল ৩৬টি। তবে বেনজেমা হয়ত তাঁর ক্যারিয়ার জুড়েই আফসোস করে যাবেন।

২০১৮ সালে যখন ফ্রান্স দ্বিতীয় দফা বিশ্বকাপ নিজেদের ঘরে নিয়ে গেলো তখন সেই দলে জায়গা হয়নি তাঁর। এই আফসোস হয়ত ঘুচিয়ে দিতে চাইবেন আসন্ন বিশ্বকাপে। ফর্মের তুঙ্গে থাকা বেনজেমা এই সুযোগ নিশ্চয়ই হাতছাড়া করবেন না।

তাছাড়া শুধু গোল বিবেচনায় তাঁর কাছে সুযোগ রয়েছে হেনরির মতো একজন কিংবদন্তি স্ট্রাইকারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। সেটাতে অবশ্য খুব বেশি কালক্ষেপন করবেন না বেনজেমা।

তাছাড়া বেনজেমার কাছে সুযোগ রয়েছে অ্যাসিস্টের দিক থেকেও হেনরিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। ক্লাব এবং আন্তর্জাতিক ফুটবল মিলিয়ে হেনরি করেছেন ২০৭টি অ্যাসিস্ট। অন্যদিকে বেনজেমার অ্যাসিস্টের সংখ্যা ২০৩টি।

দুইজনই তাঁদের সময় বিবেচনায় সেরা স্ট্রাইকার। তবে এদের দু’জনের মধ্যে কে সেরা সেটা নির্ণয় করা বেশ মুশকিল। বেনজেমার সুযোগ হয়নি সবচেয়ে মর্যাদার বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখবার। তবে অঁরি তা দেখেছিলেন এবং প্রত্যক্ষ অবদানও রেখেছিলেন।

আবার ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের মঞ্চ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে ঢের এগিয়ে বেনজেমা। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা তিনি জিতেছেন এখন অবধি চারবার। আরো একটিবার জেতার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর।

অন্যদিকে মাত্র একটিবার অঁরি জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। সেটা জিতেছিলেন স্পেনের ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে। ব্যক্তিগত অর্জনে ঠাসা এই দুই ফ্রেঞ্চ ফুটবলার। এদের মধ্যে হওয়া এই স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা চলতে থাকুক।

বেনজেমা নাকি হেনরি, কে সেরা এই আলাপ চলতে থাকুক। এমন দূর্দান্ত সব খেলোয়াড়দের উপর ভর করে চলতে থাকুক ফুটবলের লেগ্যাসি। তার সাথে আরো বেশি সমৃদ্ধতা পাক ফুটবল।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...