ভালবাসা ছড়ানো স্টেইন গানের বুলেট

কোনো এক অনুশীলনের পর ডেল স্টেইন রেস্তোরাঁয় গিয়ে বসলেন। একটু অন্যমনস্ক হতেই সামনে দিয়ে কি যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল। সোনালি চুলের এই মেয়েটির সামনে ক্যারিয়ারের প্রথম নো বলটা পা পিছলে করে ফেললেন স্টেইন। মেয়েটি চলে যাবার আগে ডেল বোকার মতো চেয়ে বসলেন ফোন নাম্বার। আফ্রিকার ফাস্ট বোলারকে একটু মেপে নিতেই যেন মেয়েটি ইতস্তত করল। ডেল যেন বললেন, ‘পৃথিবীতে সব স্টেনগানেই বুলেট থাকে না, মাঝে মাঝে ভালবাসাও থাকে!’ আফ্রিকার ফাস্ট বোলারকে একটু মেপে নিতেই যেন মেয়েটি ইতস্তত করল। ডেল যেন বললেন, ‘পৃথিবীতে সব স্টেনগানেই বুলেট থাকে না, মাঝে মাঝে ভালবাসাও থাকে!’

সবে নামডাক শুরু হয়েছে তখন ক্রিকেট মহলে। কিংবদন্তিতুল্য মাখায়া এনটিনির পর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বোলিং ওপেন করার দায়িত্ব পড়েছে তার কাঁধে। ইনসুইং আর আউটসুইং ছাড়া যেটা টেলিভিশন স্ক্রিনে সবচেয়ে চোখে পড়ছে তা হল হাত থেকে ডেলিভারিটা বেরোনোর পর হাওয়ার সাথে একটা কম্পন। ‘চিন-মিউজিক’ বলে একটা টার্ম বেশ জনপ্রিয়। টেস্টে নতুন বলে আগুনে পেস যখন কানের পাশ দিয়ে বেরোয় তখন হাওয়ার সাথে ঘষা লেগে একটা অদ্ভুত শব্দ হয়। অদ্ভুত এক অনুভূতি!

আরো পড়ুন

কোনো এক অনুশীলনের পর ডেল স্টেইন রেস্তোরাঁয় গিয়ে বসলেন। একটু অন্যমনস্ক হতেই সামনে দিয়ে কি যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল। সোনালি চুলের এই মেয়েটির সামনে ক্যারিয়ারের প্রথম নো বলটা পা পিছলে করে ফেললেন স্টেইন। মেয়েটি চলে যাবার আগে ডেল বোকার মতো চেয়ে বসলেন ফোন নাম্বার।

আফ্রিকার ফাস্ট বোলারকে একটু মেপে নিতেই যেন মেয়েটি ইতস্তত করল। ডেল যেন বললেন, ‘পৃথিবীতে সব স্টেনগানেই বুলেট থাকে না, মাঝে মাঝে ভালবাসাও থাকে!’

একটার পর একটা ইনজুরি পেয়ে যখন দেশে ফিরে গেছেন স্টেইন তখন তিনি গিয়ে বসতেন ট্রান্সভাল প্রভিন্সের সেই ছোট্ট গ্রামে। বসতেন ছেলেবেলার সেই নদীর ধারে, আফ্রিকার সবুজে ঘেরা গ্রামের ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়তেন। স্টেইন তো আগুন চান নি, চেয়েছিলেন প্রকৃতিকে ভালোবাসতে। ভালবাসা দিয়েই তিনি জয় করতে চেয়েছিলেন, আর সেই ভালবাসার ভাষা ছিল আগ্রাসন। তাঁর কাছে আগ্রাসনই শেষ কথা।

নিজের বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে যিনি বলেছেন, ক্রিকেট না খেললে তিনি প্রকৃতির কোলে থাকতেন। নেট প্র্যাকটিস যখন থাকবে না তখন তিনি সারাটা দিন কাটিয়ে দেবেন গাছেদের মধ্যে। নদীর দুপাশের চিরহরিৎ অরণ্যে ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে তাঁর।

আগুনে পেসের আগ্রাসনের ভেতর কোথাও চির সবুজ একটা মন ছুটে আসত ওভার দ্য উইকেট বরাবর। হাত থেকে বলটা ছাড়ার পর হাওয়ার সাথে যে দুলে ওঠা তা যেন প্রকৃতির সাথে এক উদাস পাগলের মনের সূক্ষ্ম খুনসুটি, চারশোর ওপর উইকেট,আফ্রিকান বোলিং-এর সর্বকালের অন্যতম সেরা পেস বোলারের তকমা, টেস্টে একের পর এক রেকর্ড- ব্যাটসম্যানের আউট সাইড এজ লেগে সেকেন্ড স্লিপে ক্যাচ ছিটকে এলে এখনো কোথাও বৃষ্টি নামে, পাতার ওপর জল পড়ার শব্দ কানে এলে এখনো লাফিয়ে ওঠেন ডেল স্টেইন।

সমস্ত ভালবাসা সুদূর আফ্রিকা থেকে পাঠাচ্ছেন স্টেইন, বাইশ গজের বাইরে কোথাও স্টেনগানে বুলেটের বেল্টের বদলে ভরা হচ্ছে চিরসবুজ ভালবাসার কুঁড়ি, লাল রক্ত নয় বরং গোলাপের পাপড়ি হয়ে ভালবাসা ছড়াচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র স্টেইন গান।

সবুজের কোলে হারিয়ে যেতে চাওয়া স্টেইন যেন ক্রিকেটের সমুদ্রে ভাসিয়ে দিলেন নিজের গানের তরী, নিজে থেকে গেলেন বাইশ গজে ভালবাসার আগ্রাসন হয়ে। সেই আগ্রাসনের নমুনা হয়েই বিদায় জানিয়ে গেছেন বাইশ গজের এই মঞ্চকে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...