গোলরক্ষকরা কেন ভিন্ন রঙের জার্সি পরেন

এদুয়ার্দো গ্যালেয়ানো লিখেছিলেন গোলকিপাররা যেদিকে হেঁটে যায় সেখানে নাকি ঘাস জন্মায় না। ফুটবল মাঠে গোলকিপাররা এতোটাই নিঃসঙ্গ, এতোটাই আলাদা। তাঁরা প্রথমেই নজরে আসেন বাকিদের চাইতে ভিন্ন জার্সির কারণে। মূলত মাঠের বাকিদের চাইতে তাঁদের যেন সহজেই আলাদা করা যায় সেকারণেই জার্সির এই ভিন্নতা। 

এদুয়ার্দো গ্যালেয়ানো লিখেছিলেন যে গোলরক্ষকরা যেদিকে হেঁটে যায় সেখানে নাকি ঘাস জন্মায় না। ফুটবল মাঠে তাঁরা এতোটাই নিঃসঙ্গ, এতোটাই আলাদা। তাঁরা প্রথমেই নজরে আসেন বাকিদের চাইতে ভিন্ন জার্সির কারণে। মূলত মাঠের বাকিদের চাইতে তাঁদের যেন সহজেই আলাদা করা যায় সেকারণেই জার্সির এই ভিন্নতা। 

ফুটবল মাঠে গোলরক্ষকরা দলের বাকিদের চাইতে আলাদা রঙের জার্সি পরে থাকেন। ফুটবলটা দলগত খেলা হলেও ভিন্ন জার্সিটা যেন আলাদা করে রাখে তাঁদেরকে। ফিফা আইনেও বলা আছে সেটা – দুই দলের গোলরক্ষকদের অবশ্যই রঙিন জার্সি পরিধান করতে হবে যাতে বাকি খেলোয়াড় এবং ম্যাচ অফিশিয়ালদের থেকে সহজেই আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়। দুই দলের খেলোয়াড়দের মাঝে বল দখলের জটলা বাঁধলে যেন সহজেই গোলরক্ষকদের আলাদা করা যায় সে কারণেই এই নিয়ম। তাছাড়া রঙিন যেকোনো কিছুই দূর থেকে সহজে চোখে পড়ে। এজন্য সাদা রঙের জার্সি সচরাচর গোলরক্ষকদের পরতে দেখা যায় না। 

ফুটবলটা পায়ের খেলা হলেও একমাত্র গোলরক্ষকদেরই অধিকার আছে মাঠে হাত দিয়ে বল স্পর্শ করা। মাঠে থাকা বাকিরা এই কাজটি করলে  লাল কার্ড দেখিয়ে সোজা পত্রপাঠ বিদায়। সেই কারণেই রেফারিকে দ্রুতই গোলরক্ষককে বাকিদের চেয়ে আলাদা নজরে রাখতে হয়। ফলে গোলরক্ষক যদি ভিন্ন রঙের জার্সি পরেন, তবে রেফারির জন্য কাজটা সহজ হয়ে যায়। 

ম্যাচের মাঝখানে কোনো দল যদি গোলরক্ষক পরিবর্তন করতে চায়, তবে তাঁদেরকে রেফারির অনুমতি সাপেক্ষে জার্সিও বদলে নিতে হবে। অন্যথায় মাঠে থাকা যে কেউ বল হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দাবি করতে পারেন তাঁরা গোলকিপার পরিবর্তন করেছেন। সেই শঙ্কা থেকেই ফিফার নিয়ম আলাদা জার্সি না পরলে আপনি গোলকিপারই নন! 

তবে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, দুই দলের গোলরক্ষকই কি একই রঙের জার্সি পরতে পারবেন? উত্তরটা হলো হ্যাঁ। যদি দুই দলের গোলরক্ষকের কারো কাছেই বিকল্প কোনো জার্সি না থাকে তবে রেফারি চাইলে খেলা চালিয়ে নিতে পারেন। তবে আদর্শ পরিস্থিতি হলো সবসময় গোলরক্ষকদের জন্য বিকল্প জার্সি প্রস্তুত রাখা। প্রতিটি দল সেটা জানেও অবশ্য।

ফিফার আইনের চার নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে – যদি দুই দলের গোলরক্ষকের জার্সির রঙ একই হয় এবং পরিবর্তন করার উপায় না থাকে, তবে রেফারি চাইলে খেলা শুরু করতে পারেন। মূলত নিচের সারির লিগের ছোট দলগুলো যারা আর্থিক সমস্যায় গোলরক্ষকদের একাধিক জার্সির সামর্থ্য রাখে না তাঁদের জন্যেই আইনের এই ফাঁকফোকর। তাছাড়া দুই গোলরক্ষক মাঠের দুই প্রান্তে অবস্থান করায়, খুব কম সম্ভাবনা রয়েছে তাঁরা পুরো ম্যাচে কাছাকাছি আসবেন। 

তবে গোলকিপাররা নিজেদের জার্সির রঙ নিজেরা পছন্দ করার সুযোগ পান। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে বেশিরভাগ দলেরই কোচ, ইকুয়েপমেন্ট ম্যানেজার এবং স্পন্সর থাকায় তাঁরাই নির্ধারণ করেন দল কোন জার্সি পরে মাঠে নামবে। তবে গোলকিপারদের নিজেদের রঙ পছন্দ করাতেও কোনো বাঁধা নেই। যেহেতু ফুটবলে স্পন্সরদের বড় অংকের অর্থলগ্নির বিষয় থেকেই যায়, সেকারণে গোলরক্ষকরা নিজেদের পছন্দমতো জার্সি পরার সুযোগ খুব একটা পান না। 

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে উজ্জ্বল রঙের জার্সি পরা গোলরক্ষকরা তুলনামূলক কম গোল হজম করেছেন। তাঁদের মতে রঙিন বর্ণের জার্সি সহজেই প্রতিপক্ষের ফুটবলারের মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং অবচেতনভাবে সেই রঙ লক্ষ্য করে শট নেবার চেষ্টা করে। আর একজন গোলরক্ষক সবসময় চাইবেন বলটা তাঁর সোজাসুজিই আসুক। ফলে সব দলই চাইছে এই সুযোগটুকু কাজে লাগাতে। বর্তমানে তাই হালকা বর্ণের জার্সি পরিহিত গোলরক্ষক প্রায় বিরল। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...