১৯৩৪ বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন!

ভদ্রলোক খেলা শুরু করেছিলেন ১৯২১ সালে। এত আগের একজন খেলোয়াড় সম্পর্কে যে কোন তথ্য বিস্তারিত ভাবে যোগাড় করা কষ্টকর। এই ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। তবে যতটুকু তথ্য পাওয়া গিয়েছে সেটার আলোকে জানা যায় যে, ক্যারিয়ারের প্রথম সিজনেই হুরাক্যান ক্লাবের হয়ে খেলে আর্জেন্টাইন ঘরোয়া লিগের শিরোপা জিতেছিলেন।

মাঝে বোকা জুনিয়র্সের হয়ে একটা মৌসুম খেললেও সেটার তথ্য অপ্রতুল। এর পরের আটটি মৌসুম, খেলেন স্যান লরেঞ্জো ক্লাবের হয়ে এবং এখানেও তিন বার প্রিমিয়ারশিপ জেতেন। এরপর চলে যান ইতালিতে। সেখানে জুভেন্টাসের হয়ে নয় মৌসুম খেলে জেতেন চারটা সিরি এ শিরোপা। সেটাও ১৯৩১-৩২ থেকে ১৯৩৪-৩৫ পর্যন্ত টানা ৪ টা।

তবে এসব দলীয় অর্জন নিশ্চয়ই আরো অনেক গ্রেট খেলোয়াড়েরই আছে। কিন্তু এই স্বল্প অর্জন থাকা সত্বেও তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন জাতীয় দলের হয়ে একটা ব্যাতিক্রমধর্মী রেকর্ডের জন্য।

আর্জেন্টির জার্সিতে মন্টি

১৯২৭ সালের কোপা আমেরিকাতে চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা দলের সদস্য এবং ১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনার সদস্যও ছিলেন, ফাইনালেও খেলেছেন কিন্তু উরুগুয়ের কাছে হার মেনে রানার্স আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। তবে সেবার বিশ্বকাপের অল স্টার টিমে জায়গা পেয়েছিলেন।

কৃতিত্বের বিষয়টা হল সেবার অল স্টার দলে আর্জেন্টিনা থেকে তিনি বাদে আর মাত্র একজন খেলোয়াড়ই জায়গা পেয়েছিলেন। তা এটাও তো খুব আহামরি কোন অর্জন নয়। এক বিশ্বকাপে রানার্স আপ কিংবা অল স্টার টিমে সুযোগ তো অনেক খেলোয়াড়ই পেয়েছেন। তবে রানার্স আপের দুঃখটা ভুলে গিয়েছেন পরের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে।

এই জায়গা পর্যন্ত পড়ে আপনার একটু অবাক হবার কথা। কারণ ১৯৩৪ সালের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইতালি, আর্জেন্টিনা নয়। তাহলে আগের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলে এই বিশ্বকাপে তিনি ইতালির হয়ে চ্যাম্পিয়ন হন কিভাবে? বিস্ময়টা এখানেই।

যখন ছিলেন জুভেন্টাসে

ইতালিয়ান লিগ খেলতে যাবার পরেই ১৯৩৪ সালের বিশ্বকাপে অভিবাসী খেলোয়াড়ের কোটায় তিনি ইতালিয়ন দলে সুযোগ পেয়ে যান। তারপরেই ইতিহাস। ১৯৩৪ সালের বিশ্বকাপের অল স্টার দলেও সুযোগ পান।

কমপক্ষে দু’বার অল স্টার দলে সুযোগ পেয়েছেন ২৪ জন খেলোয়াড়, দুই দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন এমন খেলোয়াড়ও হয়তো খুঁজলে পাওয়া যাবে। তবে দুই দেশের হয়ে অলস্টার দলে সুযোগ পাওয়া খেলোয়াড় তিনিই একজন।

এই ব্যতিক্রমীধর্মী রেকর্ডের মালিকের নাম লুইস মন্টি। আর্জেন্টিনার হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা এই মিডফিল্ডার আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ১৬ ম্যাচে পাঁচটি গোলও করেছেন, পরবর্তীতে ইতালির হয়ে ১৮ ম্যাচে করেছেন এক গোল। কিন্তু ব্যতিক্রমী এই রেকর্ডের জন্যই খুব সাধারণ ক্যারিয়ার নিয়েও ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন।

১৯৩৪ সালের বিশ্বকাপজয়ী ইতালি দল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link