দ্য ‘অরিজিনাল’ বিনি

রজার বিনি প্রথম নজর কাড়েন ১৯৭৭-৭৮ সালে, কেরালার বিপক্ষে ২১১ রানের ইনিংস খেলে। এই ম্যাচে তিনি শুধু ২১১ রানের ইনিংসই খেলেননি, সঞ্জয় দেশাইয়ের সাথে গড়েছিলেন ৪৫১ রানের রেকর্ড ওপেনিং পার্টনারশিপ। কিন্তু টেস্ট অভিষেক বেশ অনুজ্জ্বল ছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেন ৪৫ রান। কিন্তু বল হাতে পুরো ম্যাচ জুড়েই ছিলেন উইকেট শুন্য।

বিনি – মানে স্টুয়ার্ট বিনি তো। না, রজার বিনি। ওহ আচ্ছা, স্টুয়ার্টের বাবা।

জ্বি! এখনকার সময়ের যেকোনো ক্রিকেট সমর্থকের কাছে রজার বিনির পরিচয় হলো, ভারতের পেস বোলিং অলরাউন্ডার স্টুয়ার্ট বিনির বাবা। কেউ কেউ তাঁকে মায়ান্তি ল্যাঙ্গারের শ্বশুরও বলতে বলেন। কিন্তু তারও একটা বিশেষ পরিচয় আছে। কিন্তু সেই পরিচয়ের বাইরে তাঁর পরিচয় সম্পর্কে আধুনিক জমানার বেশিরভাগ ক্রিকেট সমর্থকদের কোনো ধারণা নেই।

১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম সেরা নায়কদের ছিলেন রজার বিনি। তিনি ভারতের হয়ে খেলেছেন ২৭ টেস্ট এবং ৭২ ওয়ানডে। তিনি শুধু ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ দলের সদস্য ছিলেন না, তিনি ১৯৮৫ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপের দলেরও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন।

রজার বিনি প্রথম নজর কাড়েন ১৯৭৭-৭৮ সালে, কেরালার বিপক্ষে ২১১ রানের ইনিংস খেলে। এই ম্যাচে তিনি শুধু ২১১ রানের ইনিংসই খেলেননি, সঞ্জয় দেশাইয়ের সাথে গড়েছিলেন ৪৫১ রানের রেকর্ড ওপেনিং পার্টনারশীপ। কিন্তু টেস্ট অভিষেক বেশ অনুজ্জ্বল ছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেন ৪৫ রান। কিন্তু বল হাতে পুরো ম্যাচ জুড়েই ছিলেন উইকেট শুন্য।

রজার বিনি ছিলেন বেশ আগ্রাসী একজন ব্যাটসম্যান এবং দুর্দান্ত একজন ব্যাটসম্যান। কিন্তু তিনি জাতীয় দলে ছিলেন তাঁর বোলিং করতে পারার সামর্থ্যের কারণে। তিনি নতুন বল দিয়ে দুই দিকে সুইং করানোর বিশেষ দক্ষতার কারণে মূলত জাতীয় দলে দীর্ঘ সময় খেলতে পেরেছেন তিনি।

ভারতের বিখ্যাত স্পিন বোলিং আক্রমণ শুরু হবার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত জাতীয় দলে নিয়মিত ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে বোম্বেতে (বর্তমান মুম্বাই) পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে মাজিদ খান, জহির আব্বাস এবং জাভেদ মিয়াদাদকে প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। তাঁর এই দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের কারণে ভারত দল ১৩১ রানে জয় লাভ করে।

১৯৮৩ সালে আহমেদাবাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে গর্ডন গ্রিনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স এবং ভিভ রিচার্ডসকে এক অঙ্কের ঘরের আউট করেন রজার বিনি। কিন্তু ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে মাইকেল হোল্ডিংয়ের দূর্দান্ত বোলিংয়ের কারণে সহজেই ম্যাচ জিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।  ১৯৮৬ সালে হেডিংলিতে ইংল্যান্ডে বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে বেশ দূর্দান্ত বোলিং করেন রজার। এই ম্যাচে তার বোলিং ফিগার ছিলো ৫৮ রানে ৭ উইকেট।

তাঁর এই দুর্দান্ত বোলিংয়ের কারণে সহজেই ম্যাচ জিতে তিন ম্যাচ সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে যায় ভারত। রজার বিনির তাঁর ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন কলকাতার ইডেন গার্ডেনে। এখানে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৫৬ রানে ৬ উইকেট নেন। এর মধ্যে প্রথম স্পেলে নেওয়া ৯ রানে ৪ উইকেট।

বোলিংয়ের দিক থেকে বিবেচনা করলে তিনি বেশ ভালো একজন ব্যাটসম্যান ছিলেন। ১৯৮৩ সালে নিজের ঘরের মাঠ ব্যাঙ্গালুরুতে পাকিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ৮৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এই ইনিংস খেলার সময়ে মদন লালের সাথে গড়ে তোলেন ১৫৫ রানের জুটি।

এই জুটি ভারতকে ৬ উইকেটে ৮৫ রান থেকে ২৭৫ রান করতে সামর্থ্য করে। রজার বিনির টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ব্যাঙ্গালুরুতে। একই মাঠে নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করেন তিনি।

 

তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা সময় ছিলো ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ। ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৩ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার ছিলেন তিনি।

রজার বিনির ছেলে স্টুয়ার্ট বিনি ভারতের ২০০০ সালের অনুর্দ্ধ ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন। রজার বিনি ২০০৭ সালে রঞ্জি ট্রফিতে বাংলা দলের কোচের ভূমিকায় ছিলেন। এর পরে তিনি কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ভারত জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি।

এত কিছুর পরও তাঁকে চিনতে স্টুয়ার্ট বিনির প্রসঙ্গ আনাটা খুবই হতাশাজনক!

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...