কী হচ্ছে ইউরোপের ফুটবলে!

সুপার লিগে অংশগ্রহণকারী সব দলকে তাদের স্ব স্ব লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, এবং আন্তর্জাতিক লিগগুলো থেকে আগামী মৌসুমে বহিস্কার করা হচ্ছে। সুপার লিগে অংশগ্রহণকারী সকল খেলোয়াড়কে তাঁদের নিজেদের জাতীয় দলেও নিষেধাজ্ঞার জন্য উয়েফা ফিফার সাথে কাজ করছে।

রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান, এসি মিলান, ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, চেলসি, টটেনহ্যাম হটস্পার, আর্সেনাল সহ (সম্ভাব্য আরও তিন দল নিয়ে) টোটাল ১৫ দল নিয়ে আগামী মৌসুমে শুরু হচ্ছে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ।

সুপার লিগে অংশগ্রহণকারী সব দলকে তাদের স্ব স্ব লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, এবং আন্তর্জাতিক লিগগুলো থেকে আগামী মৌসুমে বহিস্কার করা হচ্ছে। সুপার লিগে অংশগ্রহণকারী সকল খেলোয়াড়কে তাদের নিজেদের জাতীয় দলেও নিষেধাজ্ঞার জন্য উয়েফা ফিফার সাথে কাজ করছে। সেক্ষেত্রে আগামী বিশ্বকাপ মেসি রোনালদো বিহীন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শুধু মেসি রোনালদোই নয়, কেভিন ডি ব্রুইন, লুইস সুয়ারেজ, লুকাকু, মোহামেদ সালাহ, বার্নার্ড সিলভা, ব্রুনো ফার্নান্দেজ, দিবালা, রামোস, টনি ক্রুজ, লুকা মড্রিচ, আলিসন বেকার, টের স্টেগান সহ বিশ্বের নামকরা খেলোয়াড়দের ছাড়াই হতে পারে আগামী কাতার বিশ্বকাপ।

যদিও রোনালদো এ মৌসুম শেষে জুভেন্টাস ছেড়ে অন্য দলে পাড়ি জমাচ্ছেন বলেই গুঞ্জন, সেক্ষেত্রে ফ্রান্স কিংবা জার্মান কোনো দলে গেলে, তিনি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। জার্মানি এবং ফ্রান্সের কোনো দল ইউরোপিয়ান সুপার লিগে এখনও অংশগ্রহণে রাজী হয় নাই। যদিও ডেইলি মেইলের রিপোর্ট অনুযায়ী বায়ার্ন মিউনিখ, আর বি লাইপজিগ এবং এফসি পোর্তো হতে পারে ১৫ ফাউন্ডিং মেম্বারের বাকি তিন সদস্য। দ্যা নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, সুপার লিগে অংশগ্রহণ করার প্রস্তাব গ্রহণ করায় প্রতিটা ক্লাব পাবে প্রায় ৪২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলারেরও বেশি।

ইউরোপিয়ান সুপার লিগ হবে ২০ দলের। দশ দল করে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে হোম ও এ্যওয়ে ম্যাচ ভিত্তিতে একে অন্যের সাথে মোকাবেলা করবে। দুই গ্রুপের শীর্ষ চার করে মোট ৮ দল নিয়ে হবে কোয়ার্টার ফাইনাল। কোয়ার্টার ও সেমি ফাইনাল হবে রাউন্ড রবিন লিগ ভিত্তিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো। এরপর ফাইনাল। সুপার লিগের প্রতিষ্ঠা  সদস্য হিসেবে প্রথম ১৫ দল কখনো রেলিগেটেড হবে না। প্রতি মৌসুমেই তারা খেলার সুযোগ পাবে। বাকি ৫ দল বিভিন্ন ঘরোয়া লিগের পার্ফম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে সুযোগ পাবে।

ফিফা এবং উয়েফা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিলেও, সুপার লিগ কমিটি চলমান ফুটবলীয় ক্যালেন্ডারের সাথে সংঘর্ষ এড়িয়ে বরং সপ্তাহের মাঝখানে ম্যাচ ফেলবে। শুধুমাত্র ফাইনাল হবে ইউরোপিয়ান উইকেন্ড শনি কিংবা রবিবার।

ইউরোপিয়ান সুপার লিগের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে। তিনি এক বার্তায় বলেন, ‘ইউরোপিয়ান সুপার লিগ ফুটবলকে অন্য এক লেভেলে নিয়ে যাবে। ফুটবলের জন্যই একটা বড় পরিবর্তন দরকার ছিলো।’

আগামী মৌসুমে ফরাসি সেনসেশন কিলিয়ান এমবাপ্পের রিয়াল মাদ্রিদে আসা ছিলো সময়ের ব্যাপার মাত্র, কিন্তু বিভিন্ন ইউরোপীয় মিডিয়ার দাবী অনুসারে পিএসজি কোনো সুপার লিগের দলের কাছে তাদের খেলোয়াড় বিক্রি করবে না। ফলে এমবাপ্পে অতিশীঘ্রই পিএসজির সাথে রিনিউয়াল করে ফেলতে পারে। নেইমারেরও আগামী মৌসুমে দল ছাড়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো, তবে পিএসজির সুপারলিগ বিরোধীতায় নেইমারেরও কন্ট্র্যাক্ট রিনিউ করার সম্ভাবনা প্রবল।

এখন দেখা যাক, ফুটবল কোন লেভেলে যায়। বিশ্বের সব ঐতিহ্যবাহী ক্লাবগুলো এক হয়ে সুপার লিগকে সফল করতে পারে, নাকি ফুটবলের অভিভাবক ফিফা ও উয়েফা মিলে থামাতে পারে ১২ কিংবা ১৫ দলের এই প্রচেষ্টা!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...