সুরিয়া কি ওয়ানডে থেকে বাদ পড়ছেন?

ভারতের টি টোয়েন্টির আকাশে রীতিমতো ধূমকেতুর ন্যায় আবির্ভাব সুরিয়াকুমার যাদবের। নিজেকে এমনই এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন এই তারকা ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বাকিদের সাথে তাঁর দূরত্বটা যোজন যোজন। কিন্তু মুদ্রার উল্টোপিঠও দেখতে হচ্ছে তাঁকে। টি টোয়েন্টি সাফল্য দেখে তাঁকে সাদা বলের ক্রিকেটে স্পেশালিস্ট ভেবে নিয়েছিল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু ওডিয়াইতে এখনো নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন এই তারকা। 

টি টোয়েন্টি যেন সুরিয়াকুমার যাদবকে দিয়েই বুঝিয়ে দিলো ওডিআই ক্রিকেটের সাথে ব্যবধান ক্রমশই বাড়ছে। উদাহরণস্বরূপ সুরিয়ার ক্যারিয়ারের দিকে তাকালেই ব্যবধান স্পষ্ট। এই তারকা টি টোয়েন্টিতে ১৭৫ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন ১৬৭৫। তিনটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তেই রান করেছেন সমান গতিতে। উইকেট যেমনই হোক; পেস, বাউন্সি কিংবা স্পিন সহায়ক সুরিয়ার রান করার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি কেউই। 

অন্যদিকে ওয়ানডেতে তাঁর রেকর্ড বড়ই মলিন। মাত্র দুই হাফ সেঞ্চুরি, ২৫ গড় এবং শেষ দশ ইনিংসে দুই অংকের ঘরে পৌঁছুতে পেরেছেন মাত্র তিনবার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তো মিশেল স্টার্কের ইনসুইংয়ের সামনে রীতিমতো অসহায় লেগেছে তাঁকে, দুই ম্যাচেই প্রথম বলে ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই। 

তাঁর ওয়ানডে ফর্ম নিয়ে কি ভারতের আসলেই চিন্তিত হওয়া উচিত? ভারতের কোচ রাহুল দ্রাবিড় অবশ্য তেমনটা ভাবেন না। ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে বিশ্বকাপের জন্য চার নম্বর জায়গাটা শ্রেয়াস আইয়ারের বাঁধা, তাঁর ইনজুরির সুবাদেই কিনা বাজিয়ে দেখা হচ্ছে সুরিয়াকে। সুরিয়ার প্রতি তাই খানিকটা সহানুভূতিই ফুটে উঠলো ভারতীয় কোচের কথায়। 

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই শ্রেয়াস আইয়ারের ইনজুরির শিকার হওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। সে চার নম্বর পজিশনে ব্যাট করার জন্য যোগ্য একজন। তবে তাঁর অনুপস্থিতিতে খেলানোর জন্য পর্যাপ্ত ক্রিকেটার আছে আমাদের। বিগত দুই বছরের আমরা ওয়ানডে ক্রিকেট খুব একটা খেলার বদলে টি টোয়েন্টিই বেশি খেলেছি। তবে ইনজুরির কারণে কেউ ছিটকে গেলে তাঁর জায়গা নেয়ার মতো ক্রিকেটার আমাদের আছে।’ 

সুরিয়ার টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে সফলতার পেছনে আইপিএলের বড় ভূমিকা দেখেন দ্রাবিড়। তাঁর মতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাইতে মানের দিক থেকে কোনো অংশে কম নয় আইপিএল।

তিনি বলেন, ‘আমি সুরিয়াকে নিয়ে খুব বেশি ভাবছি না। সে দুটো দুর্দান্ত বলে আউট হয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো সুরিয়া ধীরে ধীরে পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে মানিয়ে নিচ্ছে। টি টোয়েন্টি খানিকটা আলাদা, সে বিগত দশ বছর যাবত এই আইপিএল খেলছে। এই ফরম্যাটটা তাঁর মজ্জাগত, সে প্রচুর ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু, ৫০ ওভারে সে খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি। আমাদের তাঁকে সুযোগ দিতে হবে এবং ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমি নিশ্চিত সে এই ফরম্যাটেও ভালো করবে।’

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জিতলেও দ্বিতীয় ম্যাচে অসহায় আত্নসমর্পন করেছে ভারত। ফলে চেন্নাইতে তৃতীয় ম্যাচেই নির্ধারিত হবে সিরিজ জিততে যাচ্ছে কোন দল। এই ম্যাচের আগে তাই দ্রাবিড়কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল একাদশে কোনো পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে কিনা। 

জবাবে দ্রাবিড় বলেন, ‘আমাদেরকে আরো বড় পরিসরে ভাবতে হবে। বিশ্বকাপের আগে আমাদের নিজেদের বিভিন্ন কম্বিনেশন চেষ্টা করে দলের জন্য সেরাটা খুঁজে বের করতে হবে।’  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link