সুরিয়ার এক ক্যাচেই পিপাসা মিটেছে ভারতের

দশকের সেরা ক্যাচ আপনি চাইলেই বলতে পারেন। তাতে অতিরঞ্জিত করবার মত কিছুই নেই। ব্যাট হাতে সুরিয়াকুমার যাদব হয়েছেন ব্যর্থ। কিন্তু ওই একটা ক্যাচ লুফে নিয়েই তিনি বনে গেছেন জয়ের অন্যতম নায়ক। একটি ক্যাচেই তিনি বদলে দিয়েছেন ইতিহাস। ফিল্ডিং দিয়েও যে শিরোপা জেতা যায়, সে উদাহরণই সৃষ্টি করলেন সুরিয়াকুমার যাদব।

শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার শিরোপা জয়ের মধ্যে ফারাক ১৬ রানের।  স্ট্রাইকিং প্রান্তে তখন ডেভিড মিলার। একমাত্র তিনিই পারতেন প্রোটিয়াদেরকে শিরোপা জেতাতে। সেটা খুব ভাল করেই জানা ছিল ভারত দলের। বিশেষ করে হার্দিক পান্ডিয়া। খানিক চাপেই পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তাইতো প্রথম বলটা পিচই করাতে পারলেন না হার্দিক পান্ডিয়া।

সজোরে চালালেন মিলার। সবাই ধরেই নিয়েছিল বলটি পেরিয়ে যাবে বাউন্ডারি। স্রেফ একমাত্র সুরিয়া বিশ্বাস করেছিলেন ক্যাচ লুফে নেওয়া সম্ভব। তিনি তাই করলেন। একেবারে বাউন্ডারি দড়ির সামনে থেকে ক্যাচটা লুফে নিলেন। না এতটাও সহজ ছিল না। সীমানা উপর থাকা বিজ্ঞাপনের সাথে তার দূরত্ব ছিল এক চুলের। ক্যাচ ধরে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে হিমসীম খেতে হয়েছিল।

নিউটনের তৃতীয় সূত্রের মতই, প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীতমুখী ক্রিয়া রয়েছে। সেই বলের গতিবেগ সুরিয়াকে মাঠের বাইরে প্রায় নিয়েই যাচ্ছিল। তবুও সুরিয়া বেশ ঠান্ডা মাথায় বলটা ছুড়ে দিলেন আকাশ পানে। বাউন্ডারির বাইরে চলে গেলেন শরীরের ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতে। এরপর বলটি মাটি ছোয়ার বহু আগেই আবারও নিজের তালুতে বন্দী করে ফেলেন পরম মমতায়।

কেননা সে ক্যাচটা ছুটে গেলেই ভারতের হাত থেকে ছুটে যেত শিরোপা। তেমনটি সুরিয়া কি করে হতে দিতেন! ১৩ বছর বাদে বিশ্বকাপ জেতার সূবর্ণ সুযোগ এসেছিল তাদের হাতে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ক্ষেত্রে অপেক্ষাটা ছিল ১৭ বছরের। এই দীর্ঘ অপেক্ষার মরুভূমি পেরিয়ে পাওয়া পানির কুয়োটা হতাশার বালুতে ভরতে দেওয়া যে যায় না।

সুরিয়া দেননি। ডেভিড মিলার ফিরে যান প্যাভিলনে। তাদের আক্ষেপের সাথে অপেক্ষার প্রহর গণনা শুরু হয় আবার নতুন করে। ৭ রানের এক শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী ভারত জাতীয় ক্রিকেট দল। কত সহস্র দিনের সাধনার পরে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link