লড়াইটাকে অনবদ্য বলতেই হচ্ছে!
সিডনিতে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে স্টুয়ার্ট ব্রড, জেমস অ্যান্ডারসনদের কল্যানে অজিদের বিপক্ষে টেস্ট ড্র করেছে ইংলিশরা। একের পর এক উইকেট হারালেও টেইল এন্ডারদের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে হারের কাছে যেয়েও ড্র করে ইংলিশরা। সিডনিতে খেলা সবশেষ দুই টেস্টেই ড্র দেখেছে ক্রিকেটভক্তরা। তাও কিনা দুই টেস্টেই অজিদের সামনে থেকে হারের মুখ থেকে ড্র ছিনিয়ে নিয়েছে প্রতিপক্ষ।
জানুয়ারি ১১, ২০২১। সিডনিতে সিরিজের তৃতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনে লাঞ্চ বিরতিতে ভারতের অবস্থা তখন ৫ উইকেটে ২৮০ রান। শেষ সেশনে অজিদের জয়ের জন্য প্রয়োজন পাঁচ উইকেট। দিনের তখনো ৩৫ ওভার বাকি।
মিশেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউড, প্যাট কামিন্স ও নাথান লিওঁদের সামনে ভারতের ড্র করাটা যেনো বিশাল ব্যাপার। কিন্তু সেই দুষ্কর আর অপ্রত্যাশিত কাজটি করে দেখিয়েছিলেন হানুমা বিহারি ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। পুরোটা সেশন স্টার্ক, কামিন্সদের গতি আর একের পর এক বাউন্সার খেলে গেছেন দু’জনে। দু’জনেই একপ্রকার আহত বাঘের মতো ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন অজিদের গোলার সামনে।
সেদিন সিডনিতে অজিদের সামনে থেকে দুর্দান্ত এক ড্র ছিনিয়ে নেয় বিহারি-অশ্বিনরা। অজিদের দেওয়া ৪০৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে হানুমা বিহারির অপরাজিত ১৬১ বলে ২৩ ও অশ্বিনের ১২৮ বলে ৩৯ রানে বীরত্ব দেখিয়েই ড্র করে ভারত।
৯ জানুয়ারি ২০২২। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই সিডনিতে এবার প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। তবে ফলাফলটা এবারও একই। হারতে বসা ম্যাচে শেষ উইকেট জুটিতে ড্র করে ইংলিশরা। প্রতিপক্ষ পরিবর্তন হলেও সিডনিতে ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি অজিদের। শেষ সেশনে ৪ উইকেটে ১৭৭ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামে ইংলিশরা।
বেন স্টোকস কিংবা জনি বেয়ারস্টোরা ক্রিজে থাকায় অনেকটাই স্বস্তিতে তখন ইংলিশরা। শেষ ২৮ ওভারে জিততে হলে অজিদের দরকার ৬ উইকেট। এরপরই নাথান লিঁওর বলে স্টোকসের উইকেট! ষষ্ঠ উইকেটে জশ বাটলারকে নিয়ে আবারো প্রতিরোধ গড়েন বেয়ারস্টো।
এরপর কামিন্সের এক ওভারেই বাটলার ও মার্ক উড লেগ বিফোরের শিকার হয়ে ফিরলে সপ্তম উইকেটের পতন হয় ইংলিশদের। দিনের তখনো বাকি ১৭ ওভার! এরপর ৬ ওভার বেয়ারস্টো ও জ্যাক লিচ ভীত গড়লে ড্র’য়ের সম্ভাবনা আবারো জাগে। এরপরই বেয়াস্টোকে ফিরিয়ে আবারো জয়ের সম্ভাবনা জাগায় বোলেন্ড। তবে এরপর জ্যাক লিচ ও ব্রডের ৫০ বলের জুটি ম্যাচ ড্র’য়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। দলীয় ১০০ তম ওভারের শেষ বলে লিচ ফিরলে দিনের বাকি মাত্র ২ ওভার, অজিদের দরকার ১ উইকেট।
শেষ ১২ বল মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন ব্রড ও অ্যান্ডারসন। টেইলএন্ডারদের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে সিডনিতে শ্বাসরুদ্ধকর এক ড্র তুলে নিয়ে ইংলিশরা।
সিডনিতে অনুষ্ঠিত গেলো দুই টেস্টেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে থেকেও প্রতিপক্ষের দাপটে লড়াইয়ে ড্র নিয়েই মাঠ ছেড়েছে অজিরা। এক বছরের ব্যবধানে একবার প্রতিপক্ষ ভারত, আরেকবার ইংল্যান্ড!