২০০৭ সালে এই মিরপুরেই ভারতের বিপক্ষে ওপেন করতে নেমে নিজের প্রথম বলেই আউট হয়ে ফিরলেন ওপেনার জাভেদ ওমর বেলিম। সেই ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসেও বেলিমের আবার গোল্ডেন ডাক। সেই প্রথম বাংলাদেশের কোন ওপেনার ‘কিং পেয়ার’ হলেন। এরপর অবশ্য এমন বিপাকে পড়তে হয়নি বাংলাদেশের কোন ওপেনারকেই। তবে এই বছরই মাহমুদুল হাসান জয় ও তামিম ইকবাল মিলে জাভেদ ওমরকে একটু ছুঁয়ে দেখতে চেয়েছিলেন বোধহয়।
প্রথমত ‘কিং পেয়ার’ ব্যাপারটা একটু খুলে বলা দরকার। টেস্টের দুই ইনিংসেই কোন ব্যাটসম্যান গোল্ডেন ডাক মারলে সেটাকে বলা হয় কিং পেয়ার। আর দুই ইনিংসেই ডাক মারলে বলা হয় পেয়ার। এই যেমন এই টেস্টের দুই ইনিংসেই ডাক মেরে প্রথমবারের মত পেয়ার হলেন তামিম ইকবাল। প্রথম ইনিংসে চার বল ও দ্বিতীয় ইনিংসে এগারো বল খেলায় তিনি কিং পেয়ার হননি অবশ্য।
বাংলাদেশের ওপেনারদের মধ্যে কিং পেয়ার হবার ঘটনা ওই একবারই। ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচেই জাভেদ ওমর বেলিম দুই ইনিংসেই মেরেছিলেন গোল্ডেন ডাক। অবশ্য ব্যাটসম্যান হিসেবে কিং পেয়ারের ঘটনা আরেকটি আছে। নুরুল হাসান সোহনও টেস্টের দুই ইনিংসেই গোল্ডেন ডাক মেরেছিলেন।
আবার ওপেনারদের দিকে ফেরা যাক। ২০০৭ সালে জাভেদ ওমর বেলিমের সেই কান্ডের পর আর কোন পেয়ারও ছিল না বাংলাদেশের কোন ওপেনারের। তবে এবছরই সেই বাঁধ ভাঙেন বাংলাদেশের তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টেই তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।
তবে দ্বিতীয় টেস্টেই আবার মুদ্রার উলটো পিঠ দেখতে হয়েছিল জয়কে। সেই টেস্টের দুই ইনিংসেই জয় সাঝঘরে ফিরেছিলেন রানের খাতা খোলার আগেই। দুই ইনিংসে যথাক্রমে খেলেছিলেন পাঁচ ও চার বল। জয়ের সেই পেয়ারের রেষ কাটতে না কাটতেই আবার পেয়ার হলেন তামিম ইকবাল।
তামিম ইকবালের ক্ষেত্রেও চিত্রটা অনেকটা একইরকম। চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে তুলে নিয়েছিলেন সেঞ্চুরি। তবে মিরপুরে এসে দুই ইনিংসেই শূন্য রানে ফিরলেন তামিম ইকবাল। প্রথম ইনিংসে খেলতে পেরেছিলেন চার বল। আর দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেছেন মোট এগারো বল। তবে কোন ইনিংসেই রান করতে পারেননি। তামিম নিজের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এই প্রথম পেয়ারের শিকার হলেন।
তবে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে পেয়ারের সংখ্যা অবশ্য কম নয়। তামিমকে নিয়ে মোট ২৫ জন বাংলাদেশি ক্রিকেটার পেয়ার হয়েছেন। তবে এই তালিকার অধিকাংশ ক্রিকেটারই বোলার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মোট চারবার পেয়ার হয়েছেন প্রয়াত ক্রিকেটার মানজারুল ইসলাম রানা। এছাড়া ক্যারিয়ারে দুইবার করে পেয়ার হয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোহাম্মদ শরিফ ও রবিউল ইসলাম।
ওদিকে ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যারিয়ারে দুইবার করে পেয়ার হয়েছেন রাজিন সালেহ ও মোহাম্মদ আশরাফুল। অন্যদিকে হাবিবুল বাশার সুমন, আফতাব আহমেদ, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক সহ আরো অনেকেই একবার করে পেয়ারের শিকার হন। মিরপুর টেস্টে তামিমের পেয়ার যেন এইসব ব্যাটসম্যানদেরই আবার মনে করিয়ে দিল।
ওদিকে ক্যারিয়ারে ডাকের সংখ্যা অবশ্য কম নয় তামিম ইকবালের। টেস্ট ক্যারিয়ারে তামিমে ডাক সব মিলিয়ে ১১ টি। এছাড়া সমান সংখ্যক ডাক আছে খালেদ মাসুদ পাইলট ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরও। আবার ১২ টি ডাক আছে মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাশরাফি বিন মর্তুজাদের ক্যারিয়ারে। তবে বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি ১৬ টি ডাক আছে মোহাম্মদ আশরাফুলের।