সকাল থেকে মিরপুরের আকাশে মেঘ। রোদের নেই তীব্রতা। তবে মাঠে খানিকটা উত্তাপ ছড়িয়েছেন তামিম ইকবাল খান। তিনি যেন বেশ অস্বস্তিতেই রয়েছেন। বিষয়টি ফুটেও উঠেছে সিরিজের আগে অনুশীলনে। সেই অস্বস্তি থেকে দিনের শুরুতেই মেজাজ হারিয়েছেন তামিম। ক্ষিপ্ত হয়ে বলও ছুঁড়েছেন বার কয়েক।
মূলত তামিম ইকবালের কোমড়ের ইনজুরি নিয়ে ছিল শঙ্কা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ মিস হতে পারে তামিমের। তেমন সংশয়ের খানিকটা অবসান তিনি ঘুচিয়েছেন মাঠে অনুশীলনে অংশগ্রহণ করে।
যদিও অনুশীলনে খুব একটা মনোযোগী হতে পারেননি তামিম। বারবার তার শরীরী ভাষায় ফুটে উঠেছে অস্বস্তির বিষয়। ব্যাট হাতেও খুব বেশি জোর দেননি অনুশীলনে। এর প্রভাব নিশ্চয়ই ম্যাচে পড়তে পারে।
অস্বস্তি নিয়ে আফগান পেসারদের বিপক্ষে নিশ্চয়ই খেলতে চাইবেন না তামিম। এমনিতেও ফর্মটা নেই দেশ সেরা ওপেনারের। তার মধ্যে পূর্ণ ফিট না হয়ে খেলাটাও হয়ত ব্যাকফায়ার করতে পারে। সমালোচনার ঝড় বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও তো একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
অন্যদিকে, দলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য লিটন দাসকে নিয়েও জেগেছিল প্রশ্ন। জ্বর আর কিঞ্চিৎ পিঠের ইনজুরি মিলিয়ে অধিনায়ককে না পাওয়ার একটা সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। তবে সেই সম্ভবনাও যেন উবে গেছে। অনুশীলনে হাজির লিটন দাসও।
এর আগে অবশ্য বেশ কয়েকটি অনুশীলন সেশন মিস করেছিলেন তিনি। তবে এদিন নিজেকে পুরোপুরি প্রস্তুত করে নিতে দারুণ সচেষ্ট থাকতে দেখা গেছে। এমনকি কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে তার দিকে রেখেছেন বাড়তি নজর।
দলের অধিনায়কের দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবেই অন্য সবার চাইতে থাকে বেশি। চাপে লিটন নিজের ব্যাটিং সক্ষমতার প্রতিফলন যেন ঠিকঠাক করতে পারেন সে টোটকাই দিয়েছেন প্রধান কোচ।
মূলত লিটনের ডিফেন্স শটে ত্রুটি খুঁজে পেয়েছেন চান্দিকা। লিটনের ডিফেন্স তার জন্য বেশ ক্ষতিকর হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কেননা ব্যাটের খোঁচায় বল চলে যেতে পারে স্লিপ কর্ডোনে। সেটাই দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন হেডমাস্টার হাতুরু। লিটনও যেন নিজের ভুলটি বুঝতে পেরেছেন।
তিনি ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডরমটকে সাথে নিয়ে নিজের সেই ত্রুটি শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেন। লিটনের এই ত্রুটি বা ভুল অবশ্য ধরিয়ে দিয়েছেন এবাদত হোসেন। বাংলাদেশ টেস্ট দলের পেস আক্রমণে তিনি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সেই চাপকে পেছনে ফেলে বেশ হাস্যজ্জ্বল আর দাপুটে সময় পার করেছেন তিনি নেট অনুশীলনে।
দারুণ লাইন আর লেন্থ মেনে বল করেছেন লিটনের বিপক্ষে। পরাস্ত করেছেন দেশের অন্যতম সেরা এই ব্যাটারকে। এই ব্যাটারের উইকেট শিকার হয়েছে জেনেই আনন্দে মেতে ওঠেন এবাদত। যদিও এটাই প্রথমবার নয়।
এদিন জাকির হাসানের বিপক্ষেও দারুণ বল করেছেন এবাদত। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে করেছেন জোড়ালো আবেদন। আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করছিলেন পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড।
নিজের শিষ্যদের এমন উদযাপনে তিনিও যেন খানিকটা খুনশুটিতে মেতে ওঠেন। উজ্জীবিত থাকা পেস আক্রমণে আরও খানিকটা ইতিবাচক হাওয়ার সঞ্চার ঘটিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
মিশ্র এক সময় পার করছে বাংলাদেশ দল। তবে সব শঙ্কার অবসান ঘটিয়ে এবাদতদের উজ্জীবিত প্রস্তুতিই টেস্ট জয়ের আশা দেখাচ্ছে।