সিরিজের প্রথম ওয়ানডে মাঠে গড়তে তখন বাকি নেই ৪৮ ঘন্টাও। কিন্তু এখনো ম্যাচ ভেন্যুর দেখাই পায়নি বাংলাদেশ দল। ম্যাচের আগের দিন ম্যাচ ভেন্যুতে একটি অনুশীলন সেশনই তাই ভরসা বাংলাদেশ দলের।
এদিকে আগে ভাগে গিয়েও ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে অনুশীলনটাও আবহাওয়ার জন্য ঠিকঠাক করতে পারেনি বাংলাদেশ। একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচও ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। তাই সিরিজের আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিমের ভরসা মানসিক প্রস্তুতি।
চেমসফোর্ডের এসেক্স কাউন্টি গ্রাউন্ডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডের আগের দিনই সেখানে পৌঁছাবে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ এতদিন অনুশীলন করেছে এসেক্সের দ্য লেইস ও ক্যামব্রিজের ফেনার্সে।
আবহাওয়া কিংবা প্রস্তুতির সুবিধা এসব যেহেতু নিজেদের হাতে নেই তাই এসব নিয়ে খুব একটা ভাবতে চাননা তামিম। ম্যাচ ভেন্যুতে যাবার আগে তামিম বলেন, ‘এসব জিনিস তো আসলে আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই। আবহাওয়ার কারণে হয়তোবা সেরা প্রস্তুতিটা আমরা নিতে পারিনি। তবে যতটুকু সুযোগ আমরা পেয়েছি, আমরা চেষ্টা করছি যেন ভালোভাবে তৈরি হওয়া যায়। বাকিটা আমাদের মানসিকভাবে তৈরি হতে হবে। কিছু জিনিস আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। লক্ষ্য তো একটাই, ভালো খেলা এবং জেতা। আশা করি, যে মাঠে খেলব কাল ওখানে যাব আমরা, আবহাওয়া যদি ঠিকঠাক থাকে আমরা অনুশীলনও করব।’
ইংল্যান্ডে বাংলাদেশ সবশেষ সিরিজ খেলেছে এক দশকেরও বেশি আগে। আর চেমসফোর্ডে খেলার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশের কারোই। তাই মাঠ নিয়ে ধারণা নেই বলেই জানালেন তামিম।
বললেন, ‘ওই মাঠে আমার খেলার কোনো অভিজ্ঞতা নেই, উইকেটের ব্যাপারেও খুব বেশি ধারণা নেই। কিন্তু যতটুকু তথ্য আমরা নিতে পারছি অতীত ও বর্তমানের খেলাগুলো দেখে ওইটুকু তথ্য আমরা নিচ্ছি। উইকেট দেখার পর বলতে পারব কোন কম্বিনেশন নিয়ে আমরা খেলব।’
মাসখানেক আগেই হোম সিরিজে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলেও যুক্তরাজ্যের মাটিতে আয়ারল্যান্ড যে ভয়ংকর দল সেটিও জানেন তামিম, ‘ফেবারিট শব্দটা আমি খুব বেশি ব্যবহার করতে চাই না। অবশ্যই আমরা এখানে এসেছি ভালো খেলার জন্য এবং জেতার জন্য। কিন্তু ক্রিকেট এমন একটা খেলা, যেটা আপনি আগে থেকে বলতে পারবেন না কী হবে। তারাও খেলবে এবং এই কন্ডিশনে তারাও ভালো দল। এই কন্ডিশনে তারা অভ্যস্ত। আশা করি, ভালো একটা সিরিজ হবে।’
তবে সিরিজ শুরুর আগে তামিমের অনুশীলন নিয়ে আক্ষেপ থাকলেও মানসিক ভাবে প্রস্তুতিকেই বেশি গুরুত্ব দিতে চান তিনি, ‘আমরা যদি প্রত্যেকটা সেশন ওখানে অনুশীলন করতাম, তাহলে হয়তো ব্যাপারটা সবচেয়ে ভালো হতো। জিনিসগুলো আমাদেরকে দেওয়া হয়নি। কারণ, ওখানে খুব সম্ভবত কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের একটা খেলা চলছে। এগুলো তো আমাদের কারও নিয়ন্ত্রণে নেই। এগুলো নিয়ে না ভেবে ৯ তারিখ আমাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ খেলা আছে ওটার জন্য আমরা মানসিকভাবে যতটুকু প্রস্তুতি নিতে পারি। সবাই কমবেশি খেলার মধ্যেই আছে। আমি নিশ্চিত মানসিকভাবে আমরা যতটা প্রস্তুত হব, ওটাই আমাদের সহায়তা করবে।’
বিশ্বকাপের বছরে সেরা স্কোয়াড বাছাই করতে নানান পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এই সিরিজেও তা চলবে বলেই জানালেন তামিম, ‘গত সিরিজ থেকেই আমরা ছয়জন ব্যাটসম্যান, পাঁচজন বোলার নিয়ে খেলা শুরু করেছি। তবে এখানে কন্ডিশন ভিন্ন। অনেকসময় কন্ডিশন অনুযায়ী একাদশ সাজাতে হয়। এখানে আমরা একজন পেসার বেশি নিয়ে খেলব নাকি একজন অলরাউন্ডার বেশি নিয়ে খেলব সেটা আমাদের ভাবতে হবে।’
তামিম আরো বলেন, ‘বিশ্বকাপ স্কোয়াডের একটা ধারণা পাওয়া যাবে এশিয়া কাপের স্কোয়াডে। ওখানে আমরা যে স্কোয়াডটা করব ওইটাই মোটামুটি হবে বিশ্বকাপের স্কোয়াড। তবে এই সিরিজ বা এর পরের সিরিজে আমরা কিছু জিনিস দেখব।’
ব্যাটিং অর্ডারের প্রায় প্রতিটা জায়গাই নিশ্চিত হয়ে গেলেও এখনো সাত নম্বর পজিশনে কাউকে চূড়ান্ত করতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে এই সিরিজে যে মিরাজকে বাজিয়ে দেখা হবে সেটির আভাস দিয়ে রাখলেন অধিনায়ক, ‘সাত নম্বর খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা। মিরাজ দেখিয়েছে ব্যাট হাতে সে দারুণ কিছু করতে পারে। ভারত সিরিজেও সে এটার প্রমাণ রেখেছে। মিরাজকে সাতে খেলালে আমরা ছয়জন বোলাদ নিয়ে খেলতে পারি যেটা দলের জন্য দারুণ হবে।’
বিশ্বকাপের আর বাকি নেই খুব বেশিদিন। বাংলাদেশের হাতে ম্যাচও আছে অল্প। তবে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্ট বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে সামনের দিন গুলোতে দলের দূর্বলতার জায়গা গুলোতে আরো কাজ করার আছে বলেও জানিয়ে রাখলেন তামিম।
তামিম বলেন, ‘আমি প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে একটা কথা হলো আপনি কখনো পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারবেন না। কারণ অনেক জায়গাই থাকবে যেখানে আরো ভালো খেলতে চাইবে সবাই। আসল কথা হলো, তরুণ যারাই সুযোগ পাচ্ছে তারা যেন সেই সুযোগটা লুফে নেয়।’