চাপ নিয়ন্ত্রনের মন্ত্র জানেন তানজিদ তামিম

এইতো দিনকয়েক আগে হুট করেই অবসর নিয়েছিলেন তামিম ইকবাল; এরপর অবসর ভেঙে ফিরলেও এশিয়া কাপে না খেলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তাই তো এক তামিমের পরিবর্তে আরেক তামিমের উপর ভরসা করেছে টিম বাংলাদেশ, তিনি অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম।

জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পরে প্রথমবারের মত আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন তানজিদ তামিম; বলেছেন নিজের প্রস্তুতি, স্বপ্ন সহ নানা ধরনের কথা।

শুরুতেই সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া জানিয়ে তানজিদ তামিম বলেন, ‘ফার্স্ট অব অল আলহামদুল্লিলাহ যে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি। তারপরও এশিয়া কাপের মতো একটা মঞ্চে সুযোগ পেয়েছি। সিনিয়রদের সঙ্গে এর আগেও খেলা হয়েছে আমার। বিভিন্ন লোকাল টুর্নামেন্টগুলোতে, বিসিবি প্রেসিডেন্ট কাপ, সব জায়গাতেই খেলা হয়েছে। তো এনজয় করতেছি অনেক।’

তামিম ইকবালকে নিজের আদর্শ মনে করেন এই তরুণ। তামিমের ব্যাটিং দেখেই বড় হয়েছেন জুনিয়র তামিম। এছাড়া নামের মিল থাকাটাও তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছে। নিজের আইডলের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে এই তিনি জানান, ‘আমি মনে করি তামিমের ভাইয়ের যে কথাটা বললেন উনি সবার জন্যই আইডল। ওনাকে দেখে ছোট থেকে বড় হয়েছি আমি। তো চেষ্টা করব, নিজের বেস্টটা দেওয়ার, জায়গাটা ধরে রাখার।’

এশিয়া কাপকে ঘিরে দলে জায়গা পাওয়া তানজিদ তামিমের প্রস্তুতি কেমন চলছে সে ব্যাপারেও প্রশ্ন উঠেছিল। নিজের মতই খেলছেন বলে উত্তর দিয়েছেন তিনি, এছাড়া চান্দিকা হাতুরুসিংহে সহ অন্যরাও তাঁকে স্বাধীনতা দিয়েছে নিজের মত করে ব্যাটিং করতে।

অনুশীলনে ম্যাচ সিনারিও তৈরি করে খেলাটা প্রস্তুতিতে সাহায্য করছে বলেই মনে করেন তানজিদ হাসান তামিম। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা উপকৃত হই। আমাদের যে ম্যাচ সিচুয়েশন হয়েছে সেটা পুরোপুরিই এশিয়া কাপের উপরে হয়েছে। আমরা শ্রীলঙ্কার কন্ডিশনে যেরকম সবাই বলতেছিল যে ৩০০+ রান হবে সেই সিচুয়েশন অনুযায়ী এইখানে প্র্যাকটিস হইছে।’

আবহাওয়ার ব্যাপারে তামিম আরো যোগ করেন, ‘ওয়েদার তো আমাদের হাতে না। গেমেও এই ধরনের সিচুয়েশন আসতে পারে। তখন বৃষ্টি আসলে এক রকম প্ল্যানিং থাকে, না আসলে আরেক রকম প্ল্যানিং থাকে। তো মাথায় ব্যাক অব দ্য মাইন্ড থাকে বৃষ্টির পর আমরা কিভাবে সেটা ওভার কাম সেই ব্যাপারটা থাকে।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য কতটা প্রস্তুত তামিম এই প্রশ্নে তিনি জানান নিজের বেসিক ঠিক রেখেই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এতদিন যেভাবে খেলেছেন সেভাবেই খেলতে চান।

প্রতিপক্ষ বোলার নিয়েও খুব বেশি ভাবছেন না এই বামহাতি। বরং বল দেখেশুনে পজিটিভ এপ্রোচে খেলার আশা করছেন তিনি; এ ব্যাপারে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্যাক অব দ্য মাইন্ড এটাই থাকে যে পজিটিভ ক্রিকেট খেলব। অনেকেই বলে আমি অনেক অ্যাগ্রেসিভ ক্রিকেট খেলি। এই রকম না। আমি জাস্ট নরমাল থাকার ট্রাই করি। আমার স্ট্রেন্থের উপর বিলিভ রাখার ট্রাই করি। আমার বিলিভ করি আমার স্ট্রেন্থে এবং পজিটিভ খেলায়।’

সব ঠিকঠাক থাকলে এশিয়া কাপে তামিম ইকবালের জায়গায় অভিষেক হতে পারে জুনিয়র তামিমের। ফলে প্রত্যাশা থাকবে একটু উঁচুতেই; সেটাকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন এই উদীয়মান তারকা। তাঁর কাছে প্রফেশনাল ক্রিকেটে আসলে প্রত্যাশা থাকেই, এটা প্রেশারের খেলা। তাই তো প্রেশার সিচুয়েশন যত তাড়াতাড়ি হ্যান্ডেল করতে পারবেন তত তাড়াতাড়ি বেটার ক্রিকেট খেলতে পারবেন বলেই বিশ্বাস বগুড়ার এই ক্রিকেটারের।

এছাড়া মনোবিদের সঙ্গে সেশন, ক্যারিয়ারের খারাপ সময়ে করণীয়, নিজের শহর বগুড়ার ক্রিকেট কাঠামো নিয়েও অনেক কথা বলেছেন তানজিদ হাসান তামিম। বগুড়া থেকে আরো অনেক তরুণ উঠে আসবে বলে আশা আছে তাঁর।

সবশেষে অবশ্য লাল-সবুজের আরাধ্য বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নের কথা বলেছেন তানজিদ তামিম। তাঁর সরল স্বীকারোক্তি, ‘আমরা যেটা অ্যাচিভ করেছি (যুব বিশ্বকাপ) সেটা তো পাস্ট এখন। সবার মধ্যে একটা স্বপ্ন যে বড়দের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা। সামনে যেহেতু ওয়ার্ল্ড কাপ একটা জিনিসই মাথায় কাজ করে। আমরা এশিয়া কাপ বা যত টুর্নামেন্টই খেলি ব্যাক অব দ্য মাইন্ডে কিন্তু ওয়ার্ল্ড কাপ থেকেই যায়– তো ইনশাল্লাহ চেষ্টা করব এবার। যদি কপালে থাকে ইনশাল্লাহ হয়ে যাবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link